February 18, 2025

‘‌লাইভ কাঁটায়’ পণ্ড মমতা-ডাক্তারদের বৈঠক ভেস্তেছে!‌মুখ্যমন্ত্রী কি তথ্য গোপন করতে চেয়েছেন? প্রশ্ন নির্যতিতার মা-‌র

0
Mamata

মুখ্যমন্ত্রী কি ভালো মনে ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চাননি? অথবা কি তথ্য গোপন করতে চেয়েছেন? প্রশ্ন, নির্যাতিতার মায়ের। মমতা এবং জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠকে লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ‘‌শর্ত’‌ নিয়ে নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‌যা হল, তা খুব খারাপ হল। মুখ্যমন্ত্রী যদি ছাত্রদের দাবি মেনে আলোচনায় বসতেন, তা হলে ভালো হতো। হয়তো সুষ্ঠু একটা সমাধান বেরতো’‌ জুনিয়র ডাক্তারদের ১৫ জন প্রতিনিধিকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে তাঁদের মধ্যে ৩২ জন নবান্নে গিয়ে পৌঁছেছিলেন। তা সত্ত্বেও বৈঠকে আপত্তি ছিল না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তবে ডাক্তারদের লাইভ স্ট্রিমিংয়ের শর্তে ঘোর আপত্তি মমতার। কেন?‌

১২ সেপ্টেম্বর নাকি জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে বৈঠক করার জন্যে প্রায় ২ ঘণ্টা নবান্ন সভাঘরে অপেক্ষা করছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিন নবান্নের দুয়ারে চলে এসেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। শেষ পর্যন্ত লাইভ স্ট্রিমিং না হওয়ায় বৈঠকও হল না। কার্যত নবান্ন সভাঘরের বাইরে ‘‌অবস্থানে’‌ বসে পড়েন চিকিৎসকরা। এদিকে বৈঠক না হওয়ায় জট কাটার সম্ভাবনাও কমেছে। লাইভ স্ট্রিমিংয়ে কী ‘‌সমস্যা’‌ ছিল তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, টেলিকাস্টের ব্যাপারে ওপেন মাইন্ডেড আমরা। কিন্তু বিচারাধীন বিষয়ে কিছু জিনিস মাথায় রাখতে হয়। সুপ্রিম কোর্টের মামলা নিয়ে যদি আমরা হঠাৎ করে টেলিকাস্ট করি, কেউ যদি হঠাৎ কোনও মন্তব্য করেন যা আগে প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্যের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে তাহলে আমার কি দায়বদ্ধতা থাকবে না? আমাদের অফিসারদের কি দায়বদ্ধতা থাকবে না? আমরা এমন কিছু করতে চাইনি যাতে অচলাবস্থা দূর না হয়।

মমতা আরও বলেছিলেন, আমরা স্বচ্ছতার জন্য ভিডিয়োগ্রাফির জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। আমরা বিচারাধীন মামলা নিয়ে আলোচনার লাইভ টেলিকাস্ট করতে পারি না। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে আমরা লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারি না। আমরাও চাই নির্যাতিতা বিচার পাক। কিন্তু মামলা আমাদের হাতে নেই। আমরা ডাক্তারদের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি নিয়ে আলোচনায় রাজি ছিলাম। বিচারাধীন মামলার কারণেই লাইভ সম্প্রচারে সমস্যা আছে। দু’ঘণ্টা অপেক্ষার পরে ডাক্তাররা আসেননি। তার পরেও আমরা কোনও পদক্ষেপ করব না। ওরা ছোট, তাই ক্ষমা করে দেব। আমি তিনবার চেষ্টা করলাম।

এদিকে বৃষ্টিতে ভিজেও চলছে ডাক্তারদের আন্দোলন। এরই মাঝে ‘‌বড় পদক্ষেপ’‌ সরকারের। আন্দোলন থামেনি। বৃষ্টি মাথায় নিয়েই সারারাত ধরে আন্দোলন চলেছে। আর আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের অন্যতম দাবি হল কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা। এহেন পরিস্থিতিতে আন্দোলনের মাঝেই সমস্ত সরকারি হাসপাতালে বায়োমেট্রিক হাজিরার বার্তা সরকার। রিপোর্ট অনুযায়ী, সব সরকারি হাসপাতালে এজেন্সির অধীনে থাকা নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের বায়োমেট্রিক হাজিরা বাধ্যতামূলক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মর্মে স্বাস্থ্য ভবন থেকে চিঠি গিয়েছে হাসপাতালগুলির প্রধানের কাছে। নির্দেশিকা পেতেই বিভিন্ন হাসপাতালে সেই নিয়ম মেনে পদক্ষেপ করতে শুরু করে দিয়েছে। ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশন লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর চৈতালি চক্রবর্তীও এই নিয়ম কার্যকর করার বার্তা দিয়েছেন।

নির্দেশিকায় উল্লেখিত গাইডলাইন অনুযায়ী, এখন থেকে সরকারি হাসপাতালে এজেন্সির তরফ থেকে কর্মরত প্রত্যেক নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যকর্মীকে ডিউটিতে থাকাকালীন নির্দিষ্ট ইউনিফর্ম পরতে হবে। সঙ্গে রাখতে হবে আই কার্ড। বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বায়োমেট্রিক হাজিরা। সেই হাজিরা রিপোর্ট প্রতি মাসে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষর কাছে জমা করতে হবে। হাসপাতালে নিযুক্ত এজেন্সির নিরাপত্তা কর্মীদের অন্য কাজে ব্যবহার করা যাবে না। এবং তাঁদের সবার কাছে রাখতে হবে ওয়াকিটকি। এদিকে পুরুষ নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মহিলা নিরাপত্তাকর্মী রাখতে হবে। এদিকে কর্মীদের ডিউটি রোস্টার শেয়ার করতে হবে হাসপাতাল সুপার অথবা সহকারী সুপারদের নজরদারিতে। নির্দেশিকায় রোগীদের আত্মীয় পরিজনদের নিয়েও গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, রোগী পিছু নির্দিষ্ট সংখ্যক পরিজন ভিজিটিং আওয়ার্সেই ঢুকতে পারবেন ওয়ার্ডের ভিতরে। সেই সময় ভিজিটিং কার্ড দেখিয়ে ঢুকতে হবে তাঁদের। উল্লেখ্য, বেশিরভাগ সয়ই দেখা যায়, সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকরা রোগীর আত্মীয়র আক্রোশের শিকার হন। এই আবহে রোগীর আত্মীদের ওয়ার্ডে অবাধে ঢুকে পড়ার বিষয়টি ঠেকাতে চাইছে সরকার।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed