‘বিকল্প মানুষের মঞ্চ’ সংগঠন নিয়ে ‘বিতর্ক’? নৃশংস ঘটনায় আমরা শিহরিত, এটা মানব সভ্যতার লজ্জা! বলছেন প্রবাসীরা
রিমঝিমের সঙ্গে আরজি করের নির্যাতিতার মা-বাবার কথা। রিমঝিম সিংহরা ঘোষণা করেছিলেন উপদেষ্টাদের নাম। তা নিয়ে বিতর্ক। কলকাতা সহ রাজ্য জুড়ে আবার সাধারণ মানুষ রাত দখল করতে নামেন। ‘বিকল্প মানুষের মঞ্চ’ গড়ার ডাক রিমঝিম সিংহদের। নির্যাতিতার মা-বাবার সঙ্গে দেখা করা প্রসঙ্গে ফেসবুকে রিমঝিম পোস্ট করে লেখেন, ‘তিলোত্তমার মা বাবা দেখা করতে এসেছিলেন, যেটুকু কথা বলেছেন, তা ব্যক্তিগত। আমি, আমার বন্ধুরা, যারাই ছিলাম রাত দখলে, ৮বি জেরক্স গলির সামনে, একটি কথাই বলেছি: তিলোত্তমার বিচার, তিলোত্তমাদের বিচার আমরা নিয়েই ছাড়বো। একটি ভয় মুক্ত সমাজের পথে, আর যেন কোনো তিলোত্তমা না হয়, সেদিকে আমাদের লড়াই চলবে। সোমবার সুপ্রিম কোর্টে শুনানির পর পরবর্তী কর্মসূচি ঠিক করব আমরা। আপাতত আন্দোলন জিইয়ে রাখতে চাই।’ ‘বিকল্প মানুষের মঞ্চ’ গড়ার ডাক দিয়েছিলেন রিমঝিমরা। সেখানে পরামর্শদাতা হিসাবে নাম ঘোষণা করা হয়েছিল অপর্ণা সেন, জঁ দ্রেজ, বৃন্দা গ্রোভার, দীপেশ চক্রবর্তী, নিবেদিতা মেননদের নিয়ে তালিকার বিষয়ে আলোচনা। ‘মেয়েরা রাত দখল করো, দিন বদল করো’র তরফ থেকে বিকল্প মানুষের মঞ্চ গড়ার ডাক। পরামর্শদাতার তালিকায় নাম থাকা ইতিহাসবিদ দীপেশ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ রয়েছে।
আমেরিকার ৬০টি শহরে রবিবার আরজি কর-কাণ্ডের বিচার চেয়ে প্রতিবাদ। আটলান্টা, ডাবলিন, সান দিয়েগো, বস্টন, হিউস্টন, আইওয়া, মিনেয়াপোলিস, নিউ ইয়র্ক, সিয়াটল, ট্যাম্পা, ভার্জিনিয়া-র মতো জায়গা। এ ছাড়া, জাপান, তাইওয়ান, অস্ট্রেলিয়া, আয়ারল্যান্ড, কানাডা, সাউথ আফ্রিকা, জার্মানি, জাম্বিয়া, নেদারল্যান্ডস, সুইৎজ়ারল্যান্ড, সুইডেন, চেক প্রজাতন্ত্র, স্পেন, নিউজিল্যান্ডেও প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছিল। ব্রিটেনের বেলফাস্ট, বার্মিংহাম, কার্ডিফ কেমব্রিজ, এডিনবরা, লিডস, লেস্টার, ম্যানচেস্টারের মতো শহরে প্রবাসী ভারতীয়েরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আরজি করের বিচার চেয়ে বিশ্ব জুড়ে হাজার হাজার ভারতীয় রবিবার পথে নেমেছিলেন। ব্রিটেনের বেলফাস্ট, বার্মিংহাম, কার্ডিফ কেমব্রিজ, এডিনবরা, লিডস, লেস্টার, ম্যানচেস্টারের মতো শহরে প্রবাসী ভারতীয়েরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। আরজি করের বিচার চেয়ে বিশ্ব জুড়ে হাজার হাজার ভারতীয় রবিবার পথে নেমেছিলেন। এক ব্রিটিশ নাগরিক বলেন, ‘‘কলকাতার হাসপাতালে কর্তব্যরত জুনিয়র চিকিৎসকের সঙ্গে যে নৃশংস ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা শিহরিত। এটা মানব সভ্যতার লজ্জা।’’
১টা মাস পার। আরজি করের সেই ভয়ঙ্কর রাতের কথা ভুলো যাওয়ার নয়। এখনও সুবিচার মেলেনি। নির্যাতিতার হয়ে ক্রমাগত মিটিং, মিছিল চলছে কলকাতার রাজপথে। সাধারণ মানুষ থেকে বিভিন্ন জগতের তারকারা, কেউ বন্ধ রাখেননি মুখ। সকলের এখন একটাই দাবি, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। যাদবপুরের নাগরিক আন্দোলনে টলিউডের পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় সাধারণ মানুষের কাছে আর্জি রাখেন, একটু ধৈর্য ধরার। সঙ্গে অবশ্য স্পষ্ট করেন নিজের দাবি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের কাছে। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানালেন কৌশিক। পরিচালককে বলতে শোনা গেল, ‘তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা যে হয়েছে, তা আর সাধারণ মানুষকে বলে দিতে হবে না এখন। সকলেই জানেন। তাই একটু ধৈর্য রাখতে হবে সকলকে। মনে রাখতে হবে কাসভের ফাঁসি হতেও কিন্তু ৫ বছর লেগেছিল। তবে হ্যাঁ, তদন্তের গতি যথাসম্ভব বাড়াতে হবে। সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্ব একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, যাতে একটি উদাহরণ তৈরি হয সকলের কাছে। আমার মনে হয় না এমন কোনও রাজনৈতিক দল আছে, যারা ন্যায়বিচার চায় না। যারা এই তথ্য প্রমাণের সঙ্গে জড়িত ছিল, তারা ধর্ষকদের সমান দোষী। আর এরা শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত, মানুষের মনের জ্বালা কমবে না। সবার হাতে জাতীয় পতাকা। বাংলার মানুষ গলা তুলে নিজেদের অভাবের কথা বলতে পারে। কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের হয়ে নয়, সকলে জড়ো হয়েছে বিচার চেয়ে। ভারতবাসী নিজের দেশের পতাকা হাতে স্বাধীনতার জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য আজ রাস্তায় নেমেছে।’