আরজি কর কাণ্ড ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টায় পুলিশ?পরিবারকে জোর করে ভিডিয়ো শুট করানো ‘ভাইরাল ভিডিয়ো’ প্রসঙ্গে বিস্ফোরক নির্যাতিতার আন্টি!
মুখ খুললেন নির্যাতিতা চিকিৎসকের এক আন্টি। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই, ডিপার্টমেন্ট যদি এই বিষয়ে কিছু জেনে থাকে, তাহলে যেন আমাদের সেটা জানানো হয়। একটি ভিডিয়ো সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে। আমরাও দেখেছি সেটা। ১১ অগস্টের রাতে পরিবারকে জোর করে সেই ভিডিয়ো শুট করানো হয়েছিল। তখনও এর তদন্তে ছিল কলকাতা পুলিশ। তারাই জোর করেছিল। তবে কত টাকা দেওয়া হচ্ছিল, জানি না। কিন্তু অনেকগুলি বান্ডিল ছিল। এই ভিডিয়ো এখন ইচ্ছে করে ভাইরাল করানো হচ্ছে।’
পুলিশের টাকা অফারের প্রস্তাব নিয়ে মৃতা চিকিৎসকের বাবা বলেন, ‘যখন আমার মেয়ের দেহ আমার ঘরে শায়িত ছিল, তখন কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (নর্থ) আমাদের ঘরের একটা গলিতে ঢুকে ঘরের ভিতরে তিনি আমায় টাকা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার যে জবাব দেওয়ার, সেটা আমরা সঙ্গে-সঙ্গে দিয়ে দিয়েছিলাম।’
গত ৪ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার বাবা দাবি করেছিলেন, ডিসি নর্থ তাঁকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন মামলাটা দফারফা করার জন্যে। এরপরই তৃণমূলের তরফ থেকে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল করানো হয়, যাতে দেখা যায়, নির্যাতিতার বাবা বলছেন, পুলিশ কোনও টাকা দিতে চায়নি। ৪ সেপ্টেম্বর আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছিলেন নির্যাতিতার মা-বাবা সহ গোটা পরিবার। সেই দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্যাতিতার বাবা দাবি করেছিলেন, ডিসি নর্থ তাঁকে টাকা দিতে চেয়েছিলেন মামলাটা দফারফা করার জন্যে। তৃণমূলের তরফ থেকে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল করানো হয়, যাতে দেখা যায়, নির্যাতিতার বাবা বলছেন, পুলিশ কোনও টাকা দিতে চায়নি।
৪ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার বাবা বলেছিলেন, ‘মেয়েকে দেখতে আমরা বেলা ১২ টা ১০ মিনিটে হাসপাতালে এসেছিলাম। মেয়ের মুখ দেখতে দেওয়ার জন্য আমাদের ওই সেমিনার হলের বাইরে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা বসিয়ে রাখা হয়েছিল এবং মেয়ের মা পুলিশের হাতে-পায়ে ধরতে শুরু করেছিল। ভিতরে তখন লোকজন ঘোরাঘুরি করছিল। আমাদের কিন্তু ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এটা কী কারণে? এই প্রশ্নটার উত্তর চাই আমার। পোস্টমর্টেম (ময়নাতদন্ত) করতে এত দেরি কেন করল হাসপাতাল? পোস্টমর্টেম তো বিকেল পাঁচটার মধ্যে করা উচিত ছিল। কিন্তু দেখা গেল যে সন্ধ্যা ছ’টার আগে পোস্টমর্টেম হল না। সন্ধ্যা ছ’টা থেকে শুরু হল। আমি সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৭ টার মধ্যে টালা থানায় এফআইআর দায়ের করেছিলাম। পরে দেখতে পাচ্ছি যে আমার এফআইআর নথিভুক্ত হল রাত ১১ টা ৪৫ মিনিটে। পুলিশ এত কিছু জানা সত্ত্বেও পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করল। ডায়েরি করল। কী কারণে? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বা পুলিশ, কেউই এফআইআর করেনি।’
নির্যাতিতার বাবা আরও বলেন, ‘আমরা দেহটা রেখে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাদের উপরে এত প্রেশার তৈরি করা হয়েছিল….। আমরা টালা থানায় গিয়েছিলাম। টালা থানায় আমরা এক ঘণ্টা বসেছিলাম। ৩০০-৪০০ পুলিশকর্মী আমাদের ঘিরে রেখে সেখানে এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করেছিল যে বাধ্য হয়ে আমরা বাড়িতে ফিরে যাই। বাড়িতে গিয়ে দেখি যে আমার বাড়ির সামনে ব্যারিকেড করে ৩০০-৪০০ পুলিশকর্মী দাঁড়িয়ে আছেন। সেই অবস্থায় আমাদের আর কিছু করার ছিল না। আমরা মেয়ের দেহ দাহ করতে বাধ্য হয়েছিলাম।’