বিশপ ক্যানিং স্পোর্টস অ্যাকাডেমির পথচলা শুরু, ব্যারেটো ও ডগলাসের যুগলবন্দিতে উৎসাহিত খুদে ফুটবলাররা
ডগলাস সিলভার কলকাতায় দ্বিতীয় ইনিংস। টেকনিক্যাল ডিরেক্টরের ভূমিকায়। খিদিরপুরের সেন্ট থমাস স্কুলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পথচলা শুরু বিশপ ক্যানিং-আর্টেজ স্পোর্টস অ্যাকাডেমির। ১০০ জন খুদেদের নিয়ে শুরু ফুটবল অ্যাকাডেমি। অ্যাকাডেমির টেকনিক্যাল ডিরেক্টর ডগলাস। বন্ধুর ডাকে মুম্বই থেকে ছুটে এসেছিলেন হোসে রামিরেজ ব্যারেটো। একসময় কলকাতা ময়দান কাপানো ব্রাজিলীয় জুটির কিক অফেই নতুন অ্যাকাডেমির পথ চলার প্রারম্ভীক পর্ব। ছেলে এবং মেয়েদের জন্য আবাসিক অ্যাকাডেমি করার পরিকল্পনা রয়েছে আয়োজকদের। থাকবে জিম এবং ক্যান্টিন। প্রথমে ফুটবল দিয়ে শুরু হল। চারটে বয়সভিত্তিক দল করা হবে। অনূর্ধ্ব-১০, অনূর্ধ্ব-১৩, অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১৯ দল করা হবে। খিদিরপুর সেন্ট থমাস স্কুল ক্যাম্পাসের তিনটে মাঠেই দেওয়া হবে ফুটবল প্রশিক্ষণ। তারপর ক্রিকেট, বাস্কেটবল পিকেলবল চালু করা হবে। সেন্ট থমাস খিদিরপুরের ১০০ জন ছাত্রকে স্কলারশিপ দেওয়া হবে।
একদিনের ঝটিকা সফরে শহরে ব্যারেটো। অ্যাকাডেমির বিষয়ে আশাবাদী। ব্যারেটো বলেন, ‘কলকাতায় এলেই আমি নস্টালজিক হয়ে পড়ি। আমি নিশ্চিত এই প্রজেক্ট সঠিক হাতেই আছে। আশা করব সেরা এবং সঠিক পদ্ধতিতে এগোবে। ফুটবল গুরুত্বপূর্ণ। তবে পাশাপাশি চারিত্রিক দৃঢ়তা গঠনেও জোর দিতে হবে। একজন ভাল মানুষ হতে হবে। আমি নিশ্চিত এই অ্যাকাডেমি থেকে ভবিষ্যতের ফুটবলার উঠে আসবে।’ চলতি মরশুমে মোহনবাগানের খেলা দেখার সুযোগ এখনও খুব একটা হয়নি। তবে শুনেছেন ভাল দল গড়া হয়েছে। আসন্ন আইএসএলে নিজের তিন ফেভারিট দল বেছে নিলেন সবুজ তোতা। এই তালিকায় আছে মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল এবং মুম্বই সিটি এফসি। মহমেডান স্পোর্টিংয়ের আইএসএলে অন্তর্ভুক্ত হওয়া নিয়ে খুশি। অনুষ্ঠান চলাকালীনই আবেগপ্রবণ ডগলাস আবেগ চেপে রেখে জানান, কলকাতার ফুটবলের জন্য সবসময় কিছু করতে চেয়েছিলেন। ভগবান সেই সুযোগ করে দিয়েছে। ডগলাস বলেন, ‘কলকাতায় ফেরা মানেই ঘরে ফেরা। স্বপ্ন সত্যি হতে চলেছে। আমি বাংলার ফুটবলের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। ফুটবলে আমার ৪০ বছরের অভিজ্ঞতা আছে। কলকাতায় প্রায় ১০ বছর খেলেছি। এবার কিছু ফিরিয়ে দিতে চাই। ভাল ফুটবলার করার পাশাপাশি ছেলেদের ভাল মানুষ করে তোলাও লক্ষ্য। সুনীল ছেত্রীর পর ভারতীয় ফুটবলে কোনও তারকা নেই। আশা করছি আমাদের এই অ্যাকাডেমি থেকে ভবিষ্যতের তারকা উঠে আসবে।’
আর্টেজ স্পোর্টসের ডিরেক্টর জয়দীপ মুখার্জির কথায়, ‘আমরা খাতায় এবং ভিডিও প্রেজেন্টেশনে বিশ্বাস করি না। মাঠে নেমে কাজ করাই উদ্দেশ্য। ৩-৪ মাস অপেক্ষা করুন। এই অ্যাকাডেমির সুফল বাংলার ফুটবল পাবেই। ফুটবলে ব্রাজিলীয় ঘরানা সেরা। তারওপর ডগলাস কলকাতায় এতবছর খেলেছে। এখানকার ফুটবল সম্বন্ধে ধারণা আছে। ও সঠিক দিশাতেই অ্যাকাডেমি এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ আপাতত দু’বছরের চুক্তি হয়েছে ডগলাসের সঙ্গে। প্রয়োজনে সেটা আরও বাড়ানো হতে পারে। খুদে ফুটবলার স্কাউট করতে কলকাতার বাইরেও যাবেন ডগলাস। অনুষ্ঠানে বিশপ ক্যানিং ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন হোসে রামিরেজ ব্যারেটো, ডগলাস ডি সিলভা, কলকাতা পুরসভার মেয়র পরিষদ দেবাশিস কুমার, বিশিষ্ট শিল্পপতি সুরেশ শেঠিয়া, ইস্টার্ন রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার কৌশিক মিত্র, খিদিরপুর সেন্ট থমাস স্কুলের অধ্যক্ষ সুমন বিশ্বাস ও আর্টেজ স্পোর্টসের ডিরেক্টর জয়দীপ মুখার্জি।