‘বিচার পেতে আলোর পথে’ কোনও রাজনৈতিক দল নয়, ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের আন্দোলন
জুনিয়র চিকিৎসকদের ‘লালবাজার অভিযান’ শেষ। রাজ্যবাসীকে পাশে থাকার আবেদন জানিয়ে জুনিয়র চিকিৎসদের সংগঠন ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের তরফে ‘বিচার পেতে আলোর পথে’ নামে এক কর্মসূচির ডাক। আজ রাত ৯টা থেকে ১০টা আলো বন্ধ করে দীপ জ্বালানো হোক ঘরে ঘরে। চিকিৎসকদের ‘দীপ’ ওই পোস্টারে ‘প্রদীপ’ হয়েছে। আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় নাগরিক আন্দোলনের কাঁটাতারে বার বার ধাক্কা খাচ্ছে রাজনীতির ‘অবাঞ্ছিত’ অনুপ্রবেশ। পশ্চিমবঙ্গে নজিরবিহীন আন্দোলন চলছে। অতীতের কোনও কিছুর সঙ্গে যার তুলনা চলে না। যে আন্দোলনের কোনও রাজনৈতিক রং নেই। দল নেই। আছে শুধু নাগরিক গর্জন। আছেন আন্দোলকারী ডাক্তারির পড়ুয়ারা। আছে চিকিৎসক সমাজ। আছেন সাধারণ মানুষ। কোনও রাজনৈতিক দলের উপরেই তাঁদের আর ‘আস্থা’ নেই।
আন্দোলনের গর্জনের সামনে দাঁড়াতে পারেননি কোনো দল। আন্দোলনকারীরা কোনও রাজনীতি চান না। চিকিৎসকদের দাবি, তাঁরা রাজনীতি চান না। চিকিৎসকদের অনড় আন্দোলনেই হটে গিয়েছে ৯ ফুট উঁচু লৌহকপাট। কোনও রাজনৈতিক দলের ঝান্ডার প্রয়োজন পড়েনি। যেমন মঙ্গলবার শ্যামবাজারে একা এক মহিলার চিৎকার জানান দিয়েছে অনেক কিছুই। নাগরিক আন্দোলনের ঢেউয়ে নতুন ধারাপাত দেখছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে বা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে স্লোগান হচ্ছে। কিন্তু সবটাই হচ্ছে দলহীন জমায়েত, মিছিল, সভা থেকে। যে জমায়েতে বেশি বেশি করে জায়গা নিচ্ছে জাতীয় পতাকা। উড়ছে লিঙ্গসাম্যের প্রতীক রামধনু পতাকা। শহরের বড় স্কুলের প্রাক্তনীরা মিছিলে হাঁটতে হাঁটতে বলছেন, ‘‘আমরা পরিবর্তনের কথা বলছি না। আমরা বিচার চাইছি আর নারীসুরক্ষার দাবি করছি।’’ ১১ অগস্ট রাতে। সিপিএমের ছাত্র-যুব সংগঠনের নেতানেত্রীদের আরজি কর হাসপাতালে ঢুকতে দেননি জুনিয়র ডাক্তারেরা। তার পর ১৪ অগস্ট রাতে ‘মেয়েদের রাত দখল’ এক অভূতপূর্ব ছবি তৈরি করেছিল সারা বাংলায়। সেই কর্মসূচিতেও পাড়ায় পাড়ায় রাজনৈতিক দলের পরিচিত মুখেরা থেকেছেন পিছনের সারিতেই। কেউ কেউ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন বটে, কিন্তু সিপিএম বা বিজেপির স্থানীয় নেতৃত্বকে অরাজনীতির ‘মোড়ক’ রাখতে হয়েছে। তার পর থেকে অনেক আন্দোলন হয়েছে। হচ্ছে। হবেও।