গ্রেফতারের অপেক্ষায় বড় কোনও মাথা? টাকা নয়ছয় থেকে প্রতারণা, সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার আরও তিন!
আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারির পর আরও তিন জনকে পাকড়াও করল সিবিআই। ধৃতদের নাম সুমন হাজরা, বিপ্লব সিংহ এবং আফসর আলি। সন্দীপের নিরাপত্তারক্ষীর কাজ করতেন আফসর। ১৬ আগস্ট থেকে টানা ১৫ দিন সিবিআই জেরার পর সোমবার সিজিও কমপ্লেক্স থেকে সিবিআই আধিকারিকেরা নিজাম প্যালেসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীদের অফিসে গ্রেফতার করেন। আর্থিক দুর্নীতি মামলায় শুধু আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষই নন, গ্রেফতার আরও তিন। আর্থিক দুর্নীতিতে সন্দীপের সঙ্গে হাওড়ার সাঁকরাইলের বাসিন্দা বিপ্লব সিংহ গ্রেফতার। বিপ্লবের সংস্থা ‘মা তারা ট্রেডার্স’ হাসপাতালে চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহ করত। বিপ্লবের বাবা কলকাতার একটি মেডিক্যাল কলেজে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। বিপ্লব আঁকাআঁকি করতেন। সেই সূত্রে হাসপাতালে টিনের প্লেটে নম্বর লেখা কিংবা বেড নম্বর লেখার বরাত পেতেন। চিকিৎসার সরঞ্জাম সরবরাহের ব্যবসা শুরু করেন বিপ্লব। দুর্নীতি মামলার তদন্তে ‘হাজরা মেডিক্যাল শপ’ দোকানের মালিক সুমন হাজরা গ্রেফতার। অভিযোগ, ধৃত তিন জনকে বেআইনি ভাবে হাসপাতালে ক্যাফেটেরিয়া, পার্কিং লট-সহ নানা সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন সন্দীপ। আপাতত চার জনই নিজাম প্যালেসে।
সন্দীপকে আদালতে হাজির করাবে সিবিআই। টাকা নয়ছয় থেকে প্রতারণা। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগের মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের পাশাপাশি আরও বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। টেন্ডার দুর্নীতি থেকে সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগও রয়েছে তার মধ্যে। অভিযোগ, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে বেশির ভাগ ‘অনিয়ম’ই হয়েছে সন্দীপ অধ্যক্ষ থাকাকালীন। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগের চার তলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার চিকিৎসক পড়ুয়ার দেহ ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগের পাশাপাশি আরজি করে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও সন্দীপের বিরুদ্ধে। এফআইআরের পাশাপাশি সন্দীপের বিরুদ্ধে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, প্রতারণা, দুর্নীতির মামলাও করে সিবিআই।
সন্দীপের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় —
সরকারি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ। সরকারের সম্পত্তি স্বাস্থ্য ভবন এবং কলেজ কাউন্সিলের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠনকে পাইয়ে দেওয়া। ফুড স্টল, ক্যাফে, ক্যান্টিনের মতো জায়গা টেন্ডার না ডেকেই বণ্টন। সরবরাহকারীদের কাজের বরাত দেওয়ার বিষয়ে স্বজনপোষণ। কোটি কোটি টাকার কাজের বরাত গুটিকয়েক নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে দেওয়া। তাঁদের বরাত পাওয়ার যোগ্যতা নেই। আর্থিক ব্যবস্থার নিয়মকানুন ইচ্ছাকৃত ভাবে অমান্য আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে। পছন্দের লোকজনের জন্য সুযোগ সুবিধা চেয়ে নেওয়া হয়েছিল। আধিকারিকদের কথায় গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। হাসপাতালের পরিকাঠামো এবং বৈদ্যুতিক বিভিন্ন কাজ রাজ্য সরকারের পূর্ত দফতরকে দিয়ে না করানো। কাজের জন্য বরাত দেওয়া হয়েছিল বাইরের সংস্থাকে। হাসপাতালের মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষা সংক্রান্ত কাজের জন্য বরাদ্দ টাকা নিয়েও অনিয়ম। হাসপাতালের জৈব বর্জ্য বেআইনি ভাবে বাইরে বিক্রি। হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ, পুরসভার চোখ এড়িয়ে বেনামি ব্যবসা চালানো, কোভিডের সময় সরকারের তরফে হাসপাতালের জন্য তৈরী তহবিল নয়ছয়।