October 12, 2024

‘পুলিশ তোমার ডিএ বাকি, চটি কিনে দেবো নাকি?’ লালবাজারের সামনে রাত জেগে স্লোগানে ভর্ৎসনা জানালেন প্রশাসনকে

0

রব উঠছে, ‘পুলিশ তোমার ডিএ বাকি, চটি কিনে দেব নাকি’। এমনকী ‘হায় হায়’ রবও ওঠে কলকাতা পুলিশের নামে। রাস্তার মাঝেই কেউ শুয়ে পড়েছে। কেউ আবার দল বেঁধে বসে রয়েছে, চোখে-মুখে ক্লান্তি থাকলেও, প্রত্যয় স্পষ্ট। বোঝা যাচ্ছে, এত সহজে হার মানবেন না। একদলকে সজাগ দৃষ্টিতে পাহাড়া দিতেও দেখা গেল। সোমবার দুপুর ২টোয় কলেজ স্কোয়্যার থেকে মিছিল করে লালবাজারের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলের পদত্যাগের দাবিতেই কর্মসূচি। লালবাজারের সামনে ফিয়ার্স লেনেই আটকে দেওয়া হয়। সেখানেই সারা রাত অবস্থান বিক্ষোভ চলে। ত্রিপল, বড় প্লাস্টিক ইত্যাদি কিনে এনে, রাস্তায় পেতে শুয়ে পড়েন। সেখানেই খাওয়া-দাওয়া। আন্দোলনকারীদের কাছে গিয়েছিলেন টলিউড অভিনেত্রী চৈতি ঘোষাল, দেবলীনা দত্ত এবং সুদীপ্তা চক্রবর্তী।ডাক্তারদের অবস্থান বিক্ষোভে হাজির হয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি, বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও। এই আন্দোলনে কোনও রাজনৈতিক রং আনতে চান না। তাই অভিজিৎ আসতেই স্লোগান ওঠে, ‘গো ব্যাক’। সারা রাত রাস্তায় বসে থাকা এক জুনিয়র ডাক্তার স্পষ্ট বলেন, “বিনীত গোয়েল পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। প্রথমে পুলিশ প্রশাসন বলেছিল সুষ্ঠু শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সমর্থন করে। আমরা একবারও ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করিনি, তা টপকাতেও যাইনি। কিন্তু আমাদের সেসব দিয়েই ঘিরে রাখা হয়েছে। আমরা তো ডাক্তার, অপরাধী নই।”

বিশাল সব ব্যারিকেড। একধারে ধরনায় রাস্তার শুয়ে বসে আন্দোলনকারীরা। অপরপ্রান্তে চেয়ারে বসে পুলিশ কর্মীরা। রাত তখন প্রায় ৩টে ৪৫ মিনিট। হঠাৎই জাতীয় সঙ্গীত গাইতে শুরু করেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। ভোরের আলো ফোটার আগে বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিট শুনছে ‘জনগণমন অধিনায়ক জয় হে, ভারত ভাগ্যবিধাতা।’ জাতীয় সঙ্গীত শুনেই তড়িঘড়ি উঠে দাঁড়ান পুলিশ কর্মীরা। জাতীয় সঙ্গীত শেষ হতেই আন্দোলনকারীদের বলতে শোনা যায়, ‘এতদিনে পুলিশ সোজা হয়ে দাঁড়াল।’ এরপরে আন্দোলনকারীরা পুলিশকর্মীদের দিকে জলের বোতল, বিস্কুট বাড়িয়ে দেন। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য, পুলিশও মানুষ, ডাক্তারও মানুষ। সেই মনুষ্যত্বের কারণেই পাশে থাকার চেষ্টা। রাতভর গান, প্যারোডিতে জেগে থাকল বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট। স্টেথো সরিয়ে সারা রাত গানে গানে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। উঠেছে স্লোগানও। অন্যদিকে রাতভর চেয়ার পেতে ঠায় বসে উর্দিধারী পুলিশও।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed