‘গার্ড অফ অনার’ শিলটনকে, ফুটবলকে বিদায়! ভারতীয় ফুটবলে পেশাদার গোলরক্ষক কী বললেন?
ফুটবলকে বিদায় জানালেন ভারতীয় ফুটবলে পেশাদার গোলরক্ষক শিল্টন পাল। দু’দিকে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে দুই দলের ফুটবলাররা। মাঝখান দিয়ে সতীর্থদের অভিবাদন কুড়োতে কুড়োতে এগিয়ে এলেন শিলটন পাল। গোলকিপারের বেশে এই শেষবার দেখা গেল। ব্যারাকপুরের বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় স্টেডিয়ামে জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে আসোস রেনবোর জার্সিতে শেষ ম্যাচ খেলে ফেললেন ময়দানের পোড়খাওয়া গোলকিপার। সুব্রত ভট্টাচার্য, সত্যজিৎ চ্যাটার্জির পর যদি কাউকে মোহনবাগানের ঘরের ছেলে বলতে হয়, সেটা শিলটন পাল। টানা ১৪ বছর সবুজ মেরুন গোলের প্রহরীর দায়িত্বে ছিলেন।
মোহনবাগানের জার্সিতে অবসর নিতে পারলে হয়তো আরও ভাল হত। সব ইচ্ছে তো পূরণ হয় না। কোথাও একটা আক্ষেপ বা অভিমান রয়ে গিয়েছে। কেরিয়ারের শেষ ম্যাচ খেলার পরে শিলটন বলেন, ‘মোহনবাগানের হয়ে খেলতে গেলে মোহনবাগান কর্তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হত। সেই জায়গা আর আছে কিনা জানি না। মোহনবাগান ছাড়ার পর আমি দু’বছর চার্চিলে খেলেছি। সেই সময় আমার এটিকের হয়ে খেলার কথা চলছিল। প্রায় চূড়ান্তও হয়ে গিয়েছিল। যেবার এটিকে চ্যাম্পিয়ন হল। কিন্তু শেষপর্যন্ত আর হয়নি। আক্ষেপের জায়গা নেই। আমি নিজের জায়গায় ঠিক থাকার চেষ্টা করেছি।’
ফুটবল ছাড়ার পর পরবর্তী পরিকল্পনা? খেলোয়াড় জীবনেই ধারাভাষ্যে হাতেখড়ি হয়েছে। এবার কি ভবিষ্যতের শিলটন গড়ার দিকে নজর দেবেন? শিলটন বলেন, ‘বাংলার ফুটবল রেড জোনে আছে। দেবজিৎ, শৌভিক, শুভাশিসের পর আর উঠতি প্লেয়ার নেই। আমাদের পরিকাঠামো নিয়ে ভাবতে হবে। পরিকাঠামোগত উন্নতি করতে অনেক সাহায্য লাগবে। তাই আমরা নিজেরা কিছু করতে পারব না। যারা দায়িত্বে আছে, তাঁদের ভাবতে হবে সিনিয়রদের কীভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে।’ গোলের নীচে অনবদ্য পারফরম্যান্স বিশাল কাইথের। ডুরান্ড কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল এবং সেমিফাইনালে দলকে বাঁচিয়েছেন। ফাইনালেও তাঁর দিকে তাকিয়ে বাগান জনতা। বর্তমান সবুজ মেরুন কিপারের প্রশংসা করলেন প্রাক্তনী। মোলিনার অধীনে খেলার অভিজ্ঞতাও রয়েছে শিল্টনের। মোহনবাগানের হাতেই ট্রফি দেখছেন। শিল্টন বলেন, ‘বিশাল ভাল খেলছে। মোলিনার সঙ্গে আমি এটিকেতে ছিলাম। ভাল কোচ। মোহনবাগান দলটা খুব ভাল। বিপক্ষের জন্য সহজ হবে না।’ এদিন নিজেদের গ্রুপ লিগের শেষ ম্যাচে জর্জ টেলিগ্রাফকে ২-০ গোলে হারায় শিল্টনরা।
বারাকপুর মাঠে কলকাতা লিগে র্জজটেলিগ্রাফ স্পোর্টস ক্লাবের বিরুদ্ধে নিজের শেষ ম্যাচ রেনবোর শিলটনের। জর্জের এক্সিকিউটিভ সচিব অধিরাজ দত্তর উদ্যোগে ম্যাচ। উত্তর ২৪ পরগনার মছলন্দপুরের শিল্টন টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে উঠে এসেছিলেন। ২০০৬ সালে মোহনবাগানে সই করে দীর্ঘ ১৪ বছর সবুজ-মেরুন ক্লাবে খেলেছেন। ২০২০ তে সই করেন চার্চিল ব্রাদার্সে। কলকাতা প্রিমিয়ার ডিভিশনের রেনবোর হয়ে খেলে ফুটবলকে বিদায় জানালেন শিলটন পাল।