সাদা জার্সিধারীদের উল্লাস, হুঙ্কার বেনালির! “আমাদের ছোট করে দেখার খেসারত দিতে হল”
যুবভারতীর সবুজ গালিচায় সাদা জার্সিধারীদের উল্লাস। দীর্ঘকায় চেহারায় চ্যাম্পিয়ন লেখা টি-শার্ট পড়ে মাঠ দাপিয়ে বেড়ালেন জন আব্রাহাম। বিরতিতে কপালে ভাঁজ নিয়ে বসে ছিলেন ভিভি আইপি গ্যালারিতে। কিন্তু শেষপর্যন্ত এলেন, দেখলেন, জয় করলেন। ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজা মাত্র মাঠে প্রবেশ করেন নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসির কর্ণধার। বুকে টেনে নেন কোচ এবং ফুটবলারদের। দশ বছরে প্রথম সাফল্য। প্রথম ট্রফি। তাও আবার মোহনবাগানের ডেরায়। কতটা স্পেশাল বোঝাই যাচ্ছে। তাই সেলিব্রেশনও ছিল তেমনই। তবে মিডিয়ার সঙ্গে বাক্যালাপ করেননি জন। শুধু বলেন, ‘দারুণ অনুভূতি।’ ম্যাচের পর জনের ভূয়সী প্রশংসা করেন নর্থ ইস্টের কোচ। জুয়ান পেড্রো বেনালি বলেন, ‘জন ফুটবল ভালবাসে। ক্লাবের জন্য প্রাণ দেয়। এরকম কর্ণধার পাওয়া ভাগ্যের।’
কলকাতায় এসে সমর্থক ঠাসা স্টেডিয়ামে মোহনবাগানকে হারিয়ে ক্লাবের ইতিহাসে প্রথম ট্রফি জিতল নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি। তাও আবার দু’গোলে পিছিয়ে পড়েও। কামব্যাকের রসায়ন কী? বেনালি বলেন, ‘কোনও দলকে খাটো করে দেখতে নেই। বিশেষ করে যাদের জয়ের খিদে আছে। আমাদের ছোট করে দেখার খেসারত দিতে হল। আমরা তৈরি হয়ে এসেছিলাম। তবে প্রথমার্ধে প্লেয়াররা একটু ঘাবড়ে যায়। আমাদের গেম প্ল্যান স্পষ্ট ছিল। প্লেয়াররা প্রচুর পরিশ্রম করেছে। আমাদের একাধিক প্লেয়ার বিভিন্ন পজিশনে খেলতে পারে। শুরুতে আমরা বল দখলে রাখতে পারছিলাম না। সাহাল, স্টুয়ার্ট, কামিন্স আমাদের জন্য সমস্যা তৈরি করছিল। দ্বিতীয়ার্ধে আমাদের আধিপত্য ছিল।’ ক্লাবের ইতিহাসে প্রথম জয়ে উচ্ছ্বসিত কোচ। বাগানের উদ্দেশে হুঙ্কার দিলেন। বেনালি বলেন, ‘আমরা প্লেয়ার তৈরি করি। মোহনবাগান সেই প্লেয়ারকে কেনে।’ বিরতিতে দু’গোলে পিছিয়ে ছিল দল। ঠিক কখন তাঁরা বুঝতে পারেন এই জায়গা থেকে বাউন্স ব্যাক করা সম্ভব? এককথায়, ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট কী? বেনালি বলেন, ‘বিরতির পর ড্রেসিংরুম থেকে বেরোনোর সময়। দু’গোলে পিছিয়ে থাকার সময় প্লেয়ারদের চোখের দিকে তাকাই। সেই মুহূর্তেই সবকিছু বদলে যায়।’
আগের দুই ম্যাচে টাইব্রেকারে দলকে জেতানো বিশাল কাইথকে মাত দেন নর্থ ইস্টের গোলকিপার গুরমীত সিং। লিস্টন কোলাসো এবং শুভাশিস বসুর শট বাঁচিয়ে গোল্ডেন গ্লাভস পান। টাইব্রেকারের আগে সবাই এগিয়ে রেখেছিল বিশালকে। ঠিক সেই সময় কী চলছিল তাঁর মনে? গুরমীত বলেন, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। মাথা ঠাণ্ডা রেখেছিলাম। নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করি। নিজের ওপর বিশ্বাস ছিল। জানতাম আমি টাইব্রেকারে দলকে জেতাতে পারি। মুহূর্তটা উপভোগ করার চেষ্টা করি। ম্যাচের পরে বিশালের সঙ্গে কথা হয়েছে। কিন্তু দিনটা আমার ছিল।’ জার্মানির ম্যানুরেল ন্যয়ারের ভক্ত গুরমীত। ট্রফি উৎসর্গ করলেন দল এবং পরিবারকে।