October 7, 2024

ধর্ষন ও খুনের প্রতিবাদের আন্দোলনে ‘‌রাজনীতি’‌, নবান্ন অভিযান প্রত্যাখ্যানের আহ্বান মহিলা বাহিনীর

0

ছাত্র আন্দোলনে ছাত্ররা কোথায়। শুভেন্দু অধিকারীই বা হাজির কেন? তিনি কী ছাত্র?‌ তিনি কি গদি দখলের লড়াইয়ে নেমেছেন?‌ অনেক প্রশ্ন?‌‌ ১৪ আগস্ট রাতে ছিল প্রকৃত অধিকার দখলের লড়াই। মেয়েদের রাত দখলের লড়াই। আজ ছাত্রদের সামনে রেখে কিছু সমাজবিরোধী রাজনীতি শুরু করেছে বলে মানু্যের অভিযোগ। এ লড়াই কাম্য নয়। এতে তিলোত্তমা কষ্টই পাবে। চারদিকে তৈরী করা হচ্ছে বিশৃঙ্খল পরিবেশ।

হাওড়া সেতুতেও পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা বিক্ষোভকারীদের। ব্যারিকেডের একাংশ ভাঙতেই জলকামান চালানো শুরু করল পুলিশ। ব্যবহার করা হচ্ছে কাঁদানে গ্যাসও। চলছে লাঠিচার্জ। পুলিশের ত্রিমুখী আক্রমণে ছত্রভঙ্গ বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভকারীদের ছোড়া ইটে মাথা ফাটল র‌্যাফের এক জনের। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে হাসপাতালে।

কারা, এই বিক্ষোভকারীরা?‌ সাঁতরাগাছিতেও পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এগোনোর চেষ্টা বিক্ষোভকারীদের। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটও ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। পাল্টা লাঠিচার্জ পুলিশের। পুলিশের লাঠিচার্জে ছত্রভঙ্গ জমায়েত। নবান্ন অভিযান ঘিরে তুলকালাম। পুলিশ ও মিছিলকারীদের মধ্যে খণ্ডযুদ্ধ। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ও পাথর ছোড়া হয়। অভিযোগ, সাঁতরাগাছিতে ব্যারিকেড ভাঙতেই পালটা লাঠিচার্জ পুলিশের। ফাটানো হয়েছে টিয়ার গ্যাসের শেল। জাতীয় পতাকা হাতে কোণা এক্সপ্রেসওয়েতে বসে পড়েন মিছিলকারীরা। হাওড়া ব্রিজেও চলছে তুমুল অশান্তি। বিক্ষোভকারীদের হঠাতে পুলিশের জলকামান। ফোরশোর রোডেও ধরা পড়ে একই অশান্তির ছবি। মিছিলকারীদের ছোড়া ইটের ঘায়ে হাওড়ায় জখম হয়েছেন ব়্যাফের এক জওয়ানের। মাথা ফেটে গিয়েছে চণ্ডীতলার আইসির। আহত পুলিশকর্মীকে উদ্ধার করলেন আন্দোলনকারীরাই।

পুলিশকে মাটিতে ফেলে লাথি আন্দোলনকারীদের, তখনও পতপত করে উড়ছে জাতীয় পতাকা, আন্দোলনকারীরা জাতীয় পতাকা হাতে চিৎকার করতে শুরু করেন। বলতে থাকেন ‘দাবি এক দফা এক মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ’। সাঁতরাগাছি, ফোরশোর রোড, হাওড়া ব্রিজের চেহারা। প্রথমে সাঁতরাছিতে ব্যারিকেড ভাঙতে শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বেশ কয়েকটি ব্যারিকেড ভেঙেও ফেলেন তাঁরা। মিছিলকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছোড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পালটা লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের শেলও ফাটানো হয়। হাওড়া ব্রিজে আন্দোলনকারীদের হঠাতে জলকামান চলে।

পুলিশ জানিয়েছিল,শান্তিপূর্ণ ভাবে মিছিল করুন। কেউ বাধা দেবে না। কিন্তু আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মাইকে এই মর্মেই প্রচার চালিয়েছে পুলিশ। তা সত্ত্বেও ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে শুভেন্দু অধিকারীর মতো কুলাঙ্গার রাজনীতিক। যাঁরা একজন চিকিৎসকের মর্মান্তিক মৃত্যুকে নিয়ে রাজনীতি করে গদি দখল পেতে মরিয়া। অভিযোগ সাধারন মানুষের। যাঁরা যথার্থই বিচার পেতে চান।

‘পশ্চিমবঙ্গ ছাত্র সমাজে’র আড়ালে নবান্ন অভিযানের ডাক আরএসএস, বিজেপির। আন্দোলনের নামে বিজেপি অশান্তি পাকানোর চেষ্টা। এই মিছিল প্রত্যাখ্যানের আহ্বান ‘রাত দখল’ কর্মসূচির মহিলা বাহিনীর। এক বিবৃতিতে তাঁরা জানিয়েছেন, “আজ ২৭ আগস্ট, ছাত্রসমাজের মিছিলের ডাক দিয়ে যারা নবান্ন অভিযান ডেকেছে তারাই বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তির পরে মালা পরায়, কাঠুয়াতে আর উন্নাওতে ধর্ষকদের সমর্থনে জাতীয় পতাকা নিয়ে মিছিল করে। এরাই ব্রিজভূষণ সিংয়ের ঢাল হয়ে কুস্তিগীরদের আন্দোলনকে দমন করে আর হাথরসে নির্যাতিতার নিথর শরীরকে পুড়িয়ে দেয় প্রমাণ লোপাটের জন্য। মণিপুরে প্রশাসনের মদতে গণধর্ষণ সংগঠিত করে। অতএব ধর্ষণ সংস্কৃতির ধারক বাহক এই আরএসএস-বিজেপির ডাকা শক্তি যেভাবে পশ্চিমবঙ্গে ধর্ষণের বিরুদ্ধে মিছিল সংগঠিত করেছে সেভাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে এদের মিছিল সংগঠিত করছে সেভাবে বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ধর্ষণের বিরুদ্ধে এদের মিছিল সংগঠিত করতে দেখা যায় না। নিজেদের গদি দখলের স্বার্থসিদ্ধি করার জন্য এরা সাধারণ মানুষদের ক্ষোভকে ব্যবহার করে আমাদের জীবন বিপন্ন করতে পারে। ইতিমধ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এই মিছিলে গুলি চলার ভবিষ্যৎবাণী করে জনমানসে ভয় ও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছেন। তাই আমরা সাধারণ মানুষকে এই মিছিল প্রত্যাখ্যান করার আহ্বান জানাচ্ছি। সাধারণ মানুষের কাছে আমাদের আবেদন, বিজেপির অশান্তির বাঁধানোর চক্রান্ত ব্যর্থ করুন।”

কারা এই ছাত্র সমাজ? বামেরা শুরুতেই পরিস্কার করেছে, এতে তাদের কোনও যোগ নেই। তৃণমূল অভিযোগ তুলছিল, এই নবান্ন অভিযান ঘিরে বড় অশান্তির ছক কষা হয়েছে। নবান্ন অভিযানে, সাধারণ মানুষের ভিড়ে মিশে গিয়ে কিছু দুষ্কৃতি ব্যাপক গণ্ডগোল, অশান্তি, হিংসা, বিশৃঙ্খলা ছড়াচ্ছে। ভিড়ের সামনে মূলত মহিলা-ছাত্রছাত্রীদের রেখে পিছন থেকে এমন কিছু গোলমাল পাকানো ও কিছু প্ররোচনা দেওয়ার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিমেষে বিশৃঙ্খল-হিংসাত্মক হয়ে ওঠে, এবং পুলিশ বাধ্য হয় বল প্রয়োগ করতে। সাধারণ মানুষের শান্তিপূর্ন আন্দোলনের আবেগকে কাজে লাগিয়ে, একদল দুষ্কৃতি এই অশান্তি-হিংসা-বিশৃঙ্খলা ছড়ানোর চক্রান্ত চলছে।‘ নবান্ন অভিযানের উদ্যোক্তারা। তিনজনের মধ্যে একজন শুভঙ্কর হালদার। তাঁকে নিয়ে উঠেছে একাধিক প্রশ্ন। তাঁর বিরুদ্ধে নবদ্বীপ থানায় শ্লীলতাহানির মামলা রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ইতিমধ্যে। এই প্রশ্ন তাঁকে সকলের সামনে করা হলে, তিনি আঙুল তুলে ‘চোপ’ বলে হুঙ্কার ছাড়েন।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed