‘প্রথম থেকেই কাউকে আড়াল করার চেষ্টা, আন্দোলনে যেতে চাই,’ হতাশ মৃত চিকিৎসকের মা! ‘চার বার মদ্যপানের পর ২ বার যৌনপল্লি ঘুরে এসে কারও দেহে খুন করার শক্তি থাকে?’ অবাক জনতা
আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হলে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা। গোটা বিশ্বজুড়ে তার প্রতিবাদ। মুখ খুললেন সেই খুন হওয়া চিকিৎসকের বাবা-মা। মা বলেন, ‘ছাত্রদের সঙ্গে থাকতে চাই। মেডিকেলের সমস্ত স্টুডেন্টদের পাশে আমরা রয়েছি। তারাই আমাদের এখন সন্তান। প্রথম থেকেই বুঝতে পারছিলাম কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছে সরকার। অন্য খুন ধর্ষণের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু আমার মেয়ে ছিল অন ডিউটি ডাক্তার। অন্য ঘটনার সঙ্গে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। যেদিন ফোন করেছিল সেদিনই মনে হয়েছিল কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করা হয়েছে। ’ মৃত চিকিৎসকের বাবা বলেন, ‘ প্রশাসনের প্রথম থেকেই একটা গা ছাড়া ব্য়াপার ছিল। সুপ্রিম কোর্ট সেটা ধরেছে। সেটা আমাদের বলার অপেক্ষা রাখে না। গোটা পৃথিবী জানে। ঘটনাস্থলে কিছুটা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। না হলে মনে হয় সিবিআইয়ের এতটা সময় লাগত না। সিবিআইকে যেটা বলার সেটা বলেছি। আমরা তো একটা ভালো এজেন্সি চেয়েছিলাম। সিবিআই একটা ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। আমরাই ধৈর্য্য হারাচ্ছি। ১৪দিন হয়ে গেল। বলতে চাইছি সবাই একটু তৎপর হয়ে কাজ করুন। সিবিআইয়ের উপর সবার আস্থা রয়েছে। আমাদেরও আস্থা আছে। তদন্ত করে বিষয়টির কূলকিনারা করুন। তারা তো কূল কিনারা করতেই পারেনি। পুলিশকে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। কিন্তু এ কেমন বুঝতে পারছি না। পুলিশের উপর আমাদের আস্থা চলে গিয়েছিল। সিবিআইয়ের উপর আমাদের আস্থা আছে। যে কোনও জায়গায়। নিরপেক্ষভাবে যারা আমায় ডাকবে সেই আন্দোলনে আমরা যোগ দেব। সুপ্রিম কোর্টেও এটা উঠেছে। যেদিন প্রথমে গিয়েছিলাম সেদিনও সাড়ে চার ঘণ্টা ধরে বসিয়ে রাখা হল। একটা কথা বলছি ছাত্ররা যে আন্দোলন করছে সেই আন্দোলনের পাশে আমরা আছি। প্রয়োজনে আমরাও গিয়ে ওদের সঙ্গে যোগ দেব। আমাদের পরিষ্কার কথা আমরা বিচার চাই। এর একটা বিহিত চাই।’
আরজি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় বিস্ফোরক দাবি, ওই রাতে সঞ্জয়ের খুন করার ক্ষমতা ছিল কি না তা নিয়ে আমাদের সন্দেহ আছে। এর পিছনে অন্য কেউ বা কারা জড়িত। তদন্তে উঠে এসেছে ওই রাতে সঞ্জয় চার বার মদ্যপান করেছিল। ২ বার যৌনপল্লিতে যায়। এর পর একজন প্রাপ্ত বয়স্ক সুস্থ সবল তরুণীকে খুন করার মতো শক্তি তার গায়ে ছিল কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এই ঘটনার পিছনে অন্য কেউ বা কারা যুক্ত থাকতে পারে। নইলে অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য তড়িঘড়ি বৈঠক করবেন কেন? ৯ আগস্ট রাতে কলকাতা পুলিশের চতুর্থ ব্যাটেলিয়নের ব্যারক থেকে সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা পুলিশ। পেশায় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয়ের হেডফোনের ছেঁড়া অংশ নিহত চিকিৎসকের দেহের পাশে পাওয়া যায় বলে দাবি পুলিশের। ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যাওয়ার পর সঞ্জয়কে হেফাজতে নেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা। গতকালই তাঁকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে শিয়ালদা আদালত। অভিযুক্তের ঠাঁই আপাতত প্রেসিডেন্সি জেলে। সিবিআই তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার রাতে আরজি কর মেডিক্যালে এসে বেরিয়ে যায় সঞ্জয়। এর পর হাসপাতালের পাশেই কোথাও মদ্যপান করে সে। এর পর চেতলার একটি যৌনপল্লিতে গিয়েছিল অভিযুক্ত। সেখানে সে ফের মদ্যপান করলেও কারও সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়নি। এর পর আরজি করে ফিরে এসে তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ।