ধর্ষণ বিরোধী আইন প্রণয়নের দাবি অভিষেকের, বাংলার হাসপাতালগুলিতে এখনই উঠছে না কর্মবিরতি
আরজি কর কাণ্ডের পর আবারও মুখ খুললেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক ব্যানার্জি। আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে যখন পথে নেমেছেন সাধারণ, সচেতন নাগরিকরা, সেই সময়েই দেশে ঘটছে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা। এতকিছুর পরেও কেন ধর্ষণ বিরোধী আইন প্রণয়নে কোনও পদক্ষেপ করা হল না, তা নিয়েই এবার সরব হলেন অভিষেক। এক্স হ্যান্ডেলে অভিষেক লেখেন, ‘গত দশদিনে গোটা দেশ যখন আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে এবং বিচারের দাবিতে আন্দোলন করছেন সকলে, সেই সময়ের মধ্যে ৯০০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। দুঃখের বিষয় ধর্ষণের বিরুদ্ধে কোনও দীর্ঘমেয়াদি সমাধান আলোচিত হল না।’ অভিষেকের দাবি, ‘প্রতিদিন ৯০টি, প্রতি ঘণ্টায় চারটি, ১৫মিনিটে একটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে থাকে। ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন বলবৎ করা কতটা জরুরি তা স্পষ্ট। ৫০ দিনের মধ্যে গোটা বিচারপ্রক্রিয়ার নিষ্পত্তি এবং দোষীরা শাস্তি পাবে, এমন আইন আনা হোক। কেন্দ্রের কাছে ধর্ষণ বিরোধী কঠোর আইন চালু করার জন্য রাজ্য সরকারকেই ক্রমাগত চাপ দিতে হবে।’
সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত পদক্ষেপ করে আরজি করের মামলা শুনছে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে বৃহস্পতিবারও সেই মামলার শুনানি ছিল। হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার অনুরোধ করেছে শীর্ষ আদালত। সেই অনুরোধের পর শুক্রবার থেকে ছবিটা বদলাবে বলে আশা করেছিলেন অনেকেই। মনে করা হয়েছিল, আন্দোলনরত চিকিৎসকেরা কাজে ফিরবেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে ছবিটা বদলাচ্ছে না। কর্মবিরতি এখনই তুলে নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালেই কর্মবিরতি চলবে। বৃহস্পতিবার রাতে জেনারেল বডি (জিবি) বৈঠকের পর আন্দোলনকারীদের তরফ থেকে জানানো হয়, ঘটনার সঙ্গে যুক্তদের সকলে গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত সুবিচার হবে না। শুক্রবার সিবিআই দফতরে গিয়ে তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে জানার পর কর্মবিরতি নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসকদের আন্দোলন চলবে। আপাতত আন্দোলনের চরিত্র বদলের কোনও সম্ভাবনাও নেই বলে জানিয়েছেন আরজি কর হাসপাতালে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকেরা। সুপ্রিম কোর্টের আশ্বাসে কর্মবিরতি তুলে নিয়েছে দিল্লি এমস হাসপাতাল। এমসের চিকিৎসক পড়ুয়ারা গত ১১ দিন ধরে কলকাতার আরজি করের ঘটনার প্রতিবাদে কর্মবিরতি পালন করছিলেন। মুম্বই থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন বৃহস্পতিবার কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। আরজি করে মৃত চিকিৎসকের সুবিচার এবং দেশ জুড়ে বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসক এবং কর্মচারীদের সুরক্ষার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়েছিল ৯ আগস্ট থেকে। আরজি কর হাসপাতালের বিক্ষোভ ক্রমে ছড়িয়ে পড়ে রাজ্যে রাজ্যে।আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের উদ্দেশে অনুরোধ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘দয়া করে আমাদের উপর ভরসা রাখুন এবং কাজে ফিরুন।’’ আন্দোলনকারীদের দাবি, সুবিচার চেয়ে চিকিৎসকরা পথে নেমেছিলেন। দোষীদের শাস্তি না হলে কাজে ফেরার কোনও প্রশ্নই নেই।