October 11, 2024

রাজ্য পুলিশের রদ-বদল, আরজি করে বৃহস্পতিবার থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী?‌

0

এই মুহূর্তে বাংলায় একটাই শ্লোগান -‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। মূল অভিযোগ রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে। ঠিক সেই পরিস্থিতিতেই রাজ্য পুলিশের বিস্তত পরিবর্তন করলো সরকার। অতিরিক্ত দায়িত্ব পেলেন জাভেদ শামিম। গোয়েন্দা বিভাগ এবং এডিজি (নিরাপত্তা) পদের দায়িত্বের পাশাপাশি তাঁকে দুর্নীতিদমন শাখার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হল। এত দিন এই পদের দায়িত্বে ছিলেন আইপিএস আর রাজাশেখরন। রাজ্যপালের এডিসি পদেও বদল। আইপিএস মণীশ জোশীর জায়গায় দায়িত্ব পেলেন শান্তি দাস। তিনি ডব্লুবিপিএস অফিসার। শান্তি এত দিন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের অতিরিক্ত সুপার ছিলেন। এই প্রথম আইপিএস অফিসারের পরিবর্তে কোনও ডব্লুবিপিএস অফিসার রাজ্যপালের এডিসি পদের দায়িত্ব পেলেন। এই পরিবর্তনকে অবশ্য রুটিন পরিবর্তন বলেই ব্যাখ্যা করেছেন লাল বাজার।

স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠেছে, যে আর জি কর কাণ্ডের পরে আদালত তীব্র খুব প্রকাশ করেন রাজ্য পুলিশের বিরুদ্ধে। যদিও তার সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই বলেই জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ। অনেকে অবশ্য মনে করেন, আরজি কর-কাণ্ডে শুধু কলকাতা পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েনি। পুলিশ-প্রশাসনের প্রতি আস্থায় খানিক ঘাটতি তৈরি হয়েছে। ফলে একেবারেই যে সম্পর্ক নেই, সে কথাও বলা যাবে না। বরং একে প্রশাসনিক মহলের একাংশ গোটা পুলিশি ব্যবস্থার রদবদলের প্রাথমিক ধাপ হিসাবে অনুমান করতে চাইছেন। এখন দেখার নতুন পদে এসে তাঁরা কতটা সফল হতে পারে!

আরজি করে আপাতত দুই কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার পরিকল্পনা করা হয়েছে। সিআইএসএফ-এর কর্তাদের নেতৃত্বে বাহিনীর ডিআইজি কে প্রতাপ সিংহ। আরজি কর থেকে লালবাজারে যান তাঁরা। সাধারণত এক কোম্পানি বাহিনীতে ৮০ থেকে ১২০ জন কেন্দ্রীয় জওয়ান থাকেন। তাঁদের মধ্যে সক্রিয় থাকেন ৭০ জন। বাকিরা অন্যান্য কাজে নিযুক্ত থাকেন। এ ক্ষেত্রে, দুই কোম্পানি বাহিনী হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত বলে মনে করেছেন কর্তারা। আরজি করে থাকবেন এক সুপারিন্টেন্ডেন্ট-সহ প্রায় ১৫০ জওয়ান।

আর জি করে তরুণী চিকিৎসকের খুন ও ধর্ষণের ঘটনার পরে ১২ দিন অতিক্রান্ত। কলকাতা পুলিশের হাত থেকে তদন্তভার এখন সিবিআইয়ের হাতে। কালঘাম ছুটছে তদন্তকারী সংস্থার। মূল অভিযুক্তর নাম গোপন করার রহস্য কি ভেদ করতে পারছে না সিবিআই-ও? কলকাতা পুলিশের তরফে দাবি করা হয়েছিল, চিকিৎসকের দেহ প্রথম দেখা গিয়েছিল, বেলা সাড়ে ৯টা নাগাদ। দাবি, পুলিশের কাছে নাকি খবর পৌঁছয় বেলা ১০টা ১০ মিনিটে। পুলিশ সূত্রে বলা হয়েছিল, এর পরে টালা থানা থেকে অফিসার গিয়ে ওই হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা কর্মীদের নিয়ে ঘটনাস্থল অর্থাৎ সেমিনার রুমে যান। এর পরে একে একে ঘটনাস্থলে পৌঁছন কলকাতা পুলিশের কর্তারা। কিন্তু প্রথম কে মৃতদেহ দেখেছেন, সেই তথ্য তখন পুলিশের কাছেও স্পষ্ট হয়নি বলেই সূত্রের খবর। তদন্তের দায়িত্বে থাকা এক পুলিশ কর্তার দাবি, ‘‘আমাদের প্রথম লক্ষ্য ছিল, কে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তাকে ধরা। কে প্রথম মৃতদেহ দেখলেন, তা নিয়ে তখন স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নি। তার মধ্যেই সিবিআই-কে তদন্তভার দিয়ে দেওয়া হয়।’’পুলিশকর্তারা তদন্ত শুরু করেই জানতে চান, মৃতদেহ প্রথম কে দেখল? কিন্তু কেউই তার স্পষ্ট উত্তর দিতে পারেননি। এক বার অধ্যক্ষ ঘনিষ্ঠ পড়ুয়াদের মধ্যে থেকে বলা হয়, এক জন নার্স দেখেছেন। কিন্তু তিনি কোথায়? পুলিশ জানতে চাইলে কাউকেই হাজির করানো হয়নি। এক চিকিৎসকের দাবি, ‘‘এর পরে বলা হয়, এক জন আয়া দেখেছেন। তিনি কে? দেখার পরে কী করলেন? উত্তর মেলেনি। কিছুটা বিরক্ত হয়েই পুলিশ এর পরে বলে দেয়, ময়না তদন্তের ব্যবস্থা আগে হোক। তার পরে এটা দেখছি।’’ কিন্তু আর দেখা হয়েছিল কি? স্পষ্ট উত্তর নেই। জানা গিয়েছে, মৃতার পরিবারকে ফোন করে এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার জানান, তাঁদের মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিসের ভিত্তিতে তিনি মৃতার পরিবারকে এই খবর দিলেন? ঘটনাপ্রবাহের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন তুলেছে খোদ সুপ্রিম কোর্টও। গাফিলতি ও বৃহৎ কোনও ষড়যন্ত্রের কাজ করছে পিছনে!

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed