ডুরান্ড থেকেই ছিটকে গেল ইস্টবেঙ্গল, কোয়ার্টার ফাইনালে শিলংয়ের কাছে হার লাল হলুদের
ইস্টবেঙ্গল – ১ (নন্দকুমার)
শিলং লাজং – ২ (মার্কাস, ফিগো)
মাত্র ২৪ ঘণ্টা আগেই ডুরান্ড কাপের সেমিফাইনাল এবং ফাইনাল কলকাতায় ফিরিয়ে আনতে একত্রিতভাবে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিন প্রধানের কর্তারা। সেই অনুযায়ী তিনটে ম্যাচই ফেরে যুবভারতীতে। ঘরের মাঠে সেমিফাইনাল খেলা হবে না ইস্টবেঙ্গলের। বুধবার শিলংয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে শিলং লাজংয়ের কাছে ১-২ গোলে হেরে ডুরান্ড থেকে বিদায় নিল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বড় অঘটন। গ্রুপ পর্ব থেকেই ছিটকে গিয়েছিল মহমেডান স্পোর্টিং। এবার বিদায় নিল গতবারের রানার্সরা। বাংলার ফুটবলের ব্যাটন একমাত্র মোহনবাগানের হাতে। শিলংয়ে খেলতে গিয়ে ইস্টবেঙ্গলের নাকানিচোবানি খাওয়া নতুন নয়। এর আগেও বহুবার আই লিগে দেখা গিয়েছে। পাহাড়ি ফুটবলারদের গতি এবং দম সমস্যায় ফেলে দলগুলোকে। শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। পরিত্রাতার ভূমিকা নেন নন্দকুমার। রক্ষণের ভুলে শেষপর্যন্ত হেরেই ফিরতে হচ্ছে। আইএসএলের আগে যা চিন্তা বাড়াবে কুয়াদ্রাতের। রক্ষণ মেরামত না করতে পারলে গোটা মরশুম ভুগতে হবে ইস্টবেঙ্গলকে।
খেলার শুরুতেই পিছিয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৮ মিনিটে মার্কাস রুডওয়ারের গোলে এগিয়ে যায় লাজং। কর্নার থেকে জটলার মধ্যে বল গোলে ঠেলেন। ম্যাচের শুরুতে উজ্জীবিত ফুটবল খেলে শিলং। পাহাড়ি ছেলেদের গতিতে কিছুটা সমস্যায় পড়ে লাল হলুদ রক্ষণ। ডিফেন্স নিয়ে চিন্তা রয়েছে কুয়াদ্রাতের। চলতি মরশুমে চার ম্যাচে সাত গোল হজম ইস্টবেঙ্গলের। তারমধ্যে ডুরান্ডে চার, এএফসিতে তিন। এদিন শুরুটা ভাল করে লাজং। প্রথমার্ধে গোল লক্ষ্য করে শটও হোম টিমের বেশি। বিরতির আগেই ২-০ করার সুযোগ ছিল লাজংয়ের কাছে। কিন্তু মার্কাসের হেড ক্রসপিসে লাগে। এদিন প্রথম ৪৫ মিনিটে চেনা ছন্দে পাওয়া হয়নি ইস্টবেঙ্গলকে। তবে তাসত্ত্বেও সমতা ফেরানোর সুযোগ পায় কলকাতার প্রধান। ম্যাচের ২৩ মিনিটে নন্দকুমারের ক্রস থেকে ফাঁকায় হেড করার সুযোগ পেয়েও পারেননি ডেভিড। ম্যাচের ২৯ মিনিটে নন্দকুমারের শট সরাসরি তালুবন্দি করেন লাজংয়ের গোলকিপার। ডুরান্ড কাপের ম্যাচে ৩৭ মিনিটে মার্কাসের দূরপাল্লার শট ফিস্ট করে বিপদমুক্ত করেন প্রভসুখন গিল। কাউন্টার অ্যাটাকে দ্রুত আক্রমণে উঠছিল লাজং। ৫২ মিনিটে সুযোগ পেয়েও বাইরে মারেন সানা। তবে গোলের সমান সুযোগ পায় লাল হলুদও।
ম্যাচের ৩৯ মিনিটে মাদি তালালের গোল অফসাইডের জন্য বাতিল হয়ে যায়। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে ক্লেইটন সিলভাকে নামান কুয়াদ্রাত। সঙ্গে বিষ্ণু। ফরমেশন বদলে জোড়া স্ট্রাইকারে চলে যান।ডিয়ামানটাকোস-ক্লেইটন জুটিও বাঁচাতে পারল না ইস্টবেঙ্গলকে। তবে একটা আশার আলো দেখা গিয়েছিল। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে সমতা ফেরান নন্দকুমার। পরিবর্ত ফুটবলার বিষ্ণুর ক্রস থেকে চলন্ত বলে গোল নন্দকুমারের। কিন্তু রক্ষণের ভুলে হার। ম্যাচের ৮৪ মিনিটে ফিগো সেন্টাইয়ের গোলে আবার পিছিয়ে পড়ে ইস্টবেঙ্গল। তাঁকে কেউ মার্কই করেনি। আরও একবার লাল হলুদ রক্ষণের কঙ্কালসার চেহারা বেরিয়ে পড়ল। বাধ্য হয়ে দীর্ঘ বিমান যাত্রা করে সবে মাত্র আগের দিন রাতে দলের সঙ্গে যোগ দেওয়া হেক্টর ইউস্তেকেও নামিয়ে দেন কুয়াদ্রাত। ম্যাচের ৮৭ মিনিটে নামানো হয় বাগানের প্রাক্তন ডিফেন্ডারকে। কিন্তু তার আগেই যা ড্যামেজ হওয়ার হয়ে গিয়েছে। ম্যাচের শেষদিকে ইস্টবেঙ্গল প্লেয়ারদের হ্যান্ডবলের আবেদনে কর্ণপাত করেনি রেফারি। ব্যবধান আরও বাড়াতে পারত লাজং। অন্তিমলগ্নে ফিগোর শট বাঁচান গিল।