নেপথ্যে ‘ষড়যন্ত্র’ করে খুনের তথ্যের সন্ধান! আরজি করের নির্যাতিতার বাড়িতে ফের সিবিআই
আরজি করের চিকিৎসক খুনের ঘটনায় জোরকদমে তদন্ত করছে সিবিআই। তদন্তের স্বার্থে দিল্লি থেকে উড়ে এসেছে বিশেষ দল। ঘটনার সঙ্গে যোগ থাকা ব্যক্তিদের জেরা করছেন তদন্তকারীরা। আরজি কর হাসপাতালে যাচ্ছে সিবিআইয়ের দল। কথা বলছে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে। গত ৯ আগস্ট ভোরে কী ঘটেছিল, তা জানতে একাধিক পদক্ষেপ করেছে সিবিআই। ঘটনাস্থলের ৩ডি লেজার ম্যাপিংও করা হয়। সিবিআই সূত্রে খবর, নির্যাতিতার পরিবারের কী মনে হচ্ছে, কেন মনে হচ্ছে খুনের নেপথ্যে ‘ষড়যন্ত্র’ থাকতে পারে, সেই সম্পর্কেই তথ্য সংগ্রহের লক্ষে আধিকারিকেরা।
এদিকে, আরজি কর-কাণ্ডে আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়াতে ওই হাসপাতালে গেলেন অবসরপ্রাপ্ত চিকিৎসকেরা। কেউ ডাক্তারির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৯৬৮ সালে। কেউ বা ১৯৭২ সালে। অশক্ত শরীরেও প্রবীণ চিকিৎসকদের একাংশ সোমবার বেলায় আরজি কর হাসপাতালে পৌঁছন। সেখানে অবস্থানে বসা পড়ুয়াদের সঙ্গে বসে পড়েন। কালো রোব পরে হাতে পোস্টার নিয়ে মিছিল শুরু করেন হাই কোর্টের আইনজীবীরা। মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। মিছিলে যোগ দেন রাজ্যের প্রাক্তন দুই অ্যাডভোকেট জেনারেল জয়ন্ত মিত্র এবং সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ও। বার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে একটি বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে স্থির হয়, আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও একই সঙ্গে আইনজীবীদের ওই সংগঠনের তরফে অভিযুক্তদের দ্রুত শাস্তি দেওয়ার দাবি।
রাজ্যে দাবানল। দাউ দাই করে জ্বলছে বিক্ষোভের আগুন। বিক্ষোভের আগুন ক্রীড়াক্ষেত্রেও। ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান, মহমেডান সমর্থকদের প্রতিবাদে চার ঘণ্টার বেশি অবরুদ্ধ হয়ে থাকে বাইপাস। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তিন দলের সমর্থকদের খেতে হয় পুলিশের লাঠিও। তবে তাতেও প্রতিবাদ থামেনি। পুলিশের লাঠিচার্জ সত্ত্বেও সমর্থকেরা আবার ভিড় করন যুবভারতীর সামনে। প্রতিবাদ কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাওয়া যুবককে সাঁতরাগাছি থেকে আটক করে পুলিশ। তার পর ওই যুবকের খোঁজ পাওয়া যায়নি। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের কাছে দ্রুত শুনানির আর্জি জানান আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায়। উচ্চ আদালতের তরফে এই বিষয়ে অনুমতি দেওয়া হয়। রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়, ওই যুবক পুলিশি হেফাজতে।
ডাঃ সন্দীপ ঘোষ সম্পর্কে অভিযোগের পাহাড়।
আর তিনি চুপ থাকতে পারলেন না। এর আগে আর জি কর কাণ্ডে ক্ষোভ জানিয়ে প্রতিবাদ করেছেন। এবার সামনে আনলের সন্দীপ ঘোষের সীমাহীন দুর্নীতির কথা। ২০২৩-এর ১৪ জুলাই রাজ্য ভিজিলেন্স কমিশনে চিঠি দিয়েছিলেন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। একবছর আগে পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য নিয়োগ বোর্ডের ডেপুটি সুপার থাকাকালীন রাজ্যের ভিজিলেন্স কমিশনকে একটি সুদীর্ঘ চিঠির মাধ্যমে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন আখতার আলি। কিন্তু তিনি তো সন্দীপ ঘোষ। ইতিমধ্যে সকলেই জানেন তিনি কার কার প্ৰিয় আর কতটা প্রভাবশালী। তাই তার বিরুদ্ধে তদন্ত করার সাহস ভিনিলেন্স কমিশনের ছিল না।
এবার তারই এক সময়ের সহকর্মী আখতার আলি সামনে আনলেন তার দুর্নীতির পাহাড়কে। কি সেই অভিযোগ?
১) বড় অঙ্কের বরাতকে ছোট ছোট বরাতে ভেঙে অনলাইন টেন্ডার এড়িয়ে পছন্দের সংস্থাকে বরাত দিতেন সন্দীপ ঘোষ।
২) খারাপ গুণমানের ওষুধের অর্ডার দিয়ে সেই সংস্থাকে লাভবান করতেন এবং পরে সেই সংস্থা থেকে কমিশন নেওয়া হত।
৩) কোভিড ফান্ড ব্যবহার করে চেয়ার-সোফা-আসবাব কেনা হত বলেও অভিযোগ।
৪) হাসপাতালের চিকিৎসা-বর্জ্য মোটা টাকার বিনিময়ে নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে পাচার করে দেওয়া হত বলে দাবি।
তিনি আরো বলেন, আশ্চর্যের বিষয় হলো, আমি অভিযোগ করার পরে ভিজিলেন্স কমিশন কয়েক বার আমাকে ডেকেছিল। এরপর আমি মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে বদলি হয়ে যাই। এদিকে সন্দীপ ঘোষও বদলি হয়েছিলেন মুর্শিদাবাদে। তবে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওঁর বদলির অর্ডার বাতিল হয়ে যায়।’ এটাই সন্দীপ।