October 11, 2024

ডায়েরি থেকে ‘ছেঁড়া’ পাতায় কী লেখা?‌ মুখ্যমন্ত্রীর দিকেও আঙুল তুলেছেন নির্যাতিতার বাবা

0

‘‘সিএম এত কথা বলছেন, আন্দোলন করছেন, নিজে রাস্তায় নামছেন, বলছেন, নির্যাতিতার বিচার চাই। এ দিকে আন্দোলন যাতে না হয়, তা বন্ধ করার চেষ্টাও করছেন। দ্বিচারিতা কেন করছেন? জনগণকে ভয় পাচ্ছেন? যাঁরা মুক্তকণ্ঠে প্রতিবাদ করছেন, তাঁদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা করছেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীর দিকেও আঙুল নির্যাতিতার বাবার। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ প্রশাসনের শাস্তির দাবিও তুলেছেন। নির্যাতিতার বাড়ি থেকে তদন্তের স্বার্থে তাঁর লেখা ডায়েরি নিয়ে এসেছে সিবিআইয়ের তদন্তকারী দল। অভিযোগ, সেই ডায়েরি থেকে পাতা ‘ছেঁড়া’ হয়েছে। এই প্রসঙ্গে নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘আমাদের হাতে একটি পৃষ্ঠার ছবি রয়েছে। কী লেখা রয়েছে বলব না। সেই পৃষ্ঠার ছবি এখনও সিবিআইকে দিইনি। সিবিআই নিশ্চয়ই বলবে। তখন দেব।’’ প্রশ্ন উঠছে, কী লেখা রয়েছে সেই পাতায়? নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘মৃত্যুর আগে লিখেছিল পাতাটি। কী লিখেছিল, বলব না। সারমর্ম, সে সুখে থাকতে চায়।’’ আর ডায়েরিতে কী লেখা ছিল? নির্যাতিতার বাবা বলেন, ‘‘ওঁর লক্ষ্য ছিল, এমডিতে গোল্ড মেডেল পেতেই হবে। সে কথা লেখা ছিল। কখন কী পড়বে, সব লেখা থাকত ডায়েরিতে।’’

নির্যাতিতার বাবা সিবিআইয়ের উপর ‘আস্থা রাখতে হবে’ বলে জানান। নিজেদের বেশ কিছু সন্দেহের কথাও প্রকাশ করেছেন নির্যাতিতার বাবা এবং মা বলেন, ‘‘সন্দেহ হচ্ছে, অন্যত্র কোথাও খুন হয়েছে। যত ক্ষণ না জানতে পারছি, সুনিশ্চিত হতে পারছি না।’’ নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘জানতে পেরেছি, মেয়ের দেহ যে ভাবে আমাদের দেখানো হয়েছে, সে ভাবে ছিল না। দেহে জামাকাপড় ছিল না, এটা আমরা জানতে পেরেছি। সিবিআইকে সব বলব। আমাদের মনে হচ্ছে, আমাদের আড়াল করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করছে।’’ নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘ওই ক্ষতবিক্ষত দেহ, যে দেহে জামা কাপড় নেই, তা দেখে এক জন বলছেন, আপনার মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এটা হতে পারে না। আড়াল করার চেষ্টা না হলে এ রকম হতে পারে না। আত্মহত্যা বলা হয়েছে, এটাও অপরাধ। পুলিশ আধিকারিকদের শাস্তি চাইছি প্রথম থেকে।’’

পাশাপাশি, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চেস্ট ডিপার্টমেন্টকেও দায়ী করেছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। তাঁরা জানিয়েছেন, মেয়েকে সব সময় চাপে রাখা হত। জ্বরের সময়েও ছুটি দেওয়া হয়নি। নির্যাতিতার বাবার কথায়, ‘‘মেয়ের ভিপি চাপে রাখত। জ্বর হলেও ছুটি দিত না। এক বার একটি বাইক ওকে ধাক্কা দেয়। আঘাত লাগে। তার পরেও ছুটি দেয়নি।’’ নির্যাতিতার মায়ের দাবি, পড়াশোনার জন্যই এ সব বিষয়ে নজর দিতেন না চিকিৎসক। তিনি বলেন, ‘‘মেয়ে সব কিছু এড়িয়ে যেত। এ সবে নজর দিলে পড়াশোনায় ক্ষতি হবে বলে এড়িয়ে যেত। আপনারা বুঝতে পারছেন, আরজি করে কী হত? পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়া হতে পারে বলেও আশঙ্কা ছিল মেয়ের।’‌’‌ তিনি বলেন, ‘‘ভয় ছিল। চাপ ছিল, উপরমহলের।’’ নির্যাতিতার মা বলেন, ‘‘যাঁরা কন্যাশ্রী, লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা নিচ্ছেন, তাঁদের লক্ষ্মী সুরক্ষিত কি না ভাববেন! রাজ্যবাসী, দেশবাসীকে এটাই আবেদন।’’ তাঁরা এ-ও জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী ‘ক্ষতিপূরণ’-এর কথা বলেছেন। নির্যাতিতার অভিভাবকের কথায়, ‘‘ক্ষতিপূরণের কথা বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ করেছেন। আমরা বলেছি, যাঁরা দোষী, তাঁদের আগে শাস্তি চাই।’’ ডায়েরির ‘ছেঁড়া পাতা’-য় যা লেখা ছিল, তার সারমর্ম হল, মৃত চিকিৎসক ‘সুখে’ থাকতে চেয়েছিলেন।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed