October 7, 2024

‘আরজি করে ভাঙচুর করতে গুন্ডা পাঠিয়েছেন মমতা, উনি কী মনে করেন? আমরা বুঝব না?’ ‘পুলিশই দুষ্কৃতীদের ঢোকার পথ করে দিয়েছে, পরে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার নাটক করেছে তারা’

0

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুরের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা সংবাদমাধ্যমকে জানালেন প্রত্যক্ষদর্শী নার্স ও আধিকারিকরা। রাতে কী ভাবে হাসপাতালের এমারজেন্সি বিল্ডিংয়ে ভাঙচুরে তারা আঙুল তুলেছেন পুলিশের দিকে। পুলিশের ব্যর্থতাতেই হামলা বলে দাবি করেছেন তাঁরা। হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন নাইট ডিউটিতে থাকা নার্সরা। তখনও তাঁদের চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। এক নার্স বলেন, রাত ১২টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সব ঠিক ছিল। তার পর হঠাৎ দেখি বাইরে থেকে দলে দলে লোক ঢুকছে। তাদের হাতে লাঠি, রড হাতুড়ি। পুলিশ তাদের প্রতিরোধ করার বদলে পালাচ্ছে। পুলিশকর্মীরা পালিয়ে ওয়ার্ডে ঢুকে পড়েন এর পর আমাদের কাছে লুকানোর জায়গা চান। ওয়ার্ডের শৌচাগারে গিয়ে আত্মগোপন করেন তাঁরা। পুলিশকর্মীরাই দুষ্কৃতীদের হাসপাতালে ঢোকার পথ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রায় ১ ঘণ্টা ধরে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ঘুরে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। লাঠি, রড দিয়ে সামনে যা পেয়েছে তাই ভেঙেছে তারা। তার পর তারা একে একে ওয়ার্ড ছেড়ে বেরিয়ে যায়। এর পর পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছোড়ার নাটক শুরু করে। তখন আর কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে কী হবে? এই পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের কাজ করে গিয়েছে। আগে থেকে ঠিক করে রাখা সমস্ত অস্ত্রোপচার হয়েছে। কোনও অস্ত্রোপচার বাতিল হয়নি। প্রায় ১০০ – ১৫০ জন হঠাৎ হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে পড়ে। আমি পালাই। আমার আগে পুলিশ পালিয়ে যায়। আমাকে ধাওয়া করে তিন তলা পর্যন্ত পৌঁছে যায় দুষ্কৃতীরা। বৃহস্পতিবার রাত ১টা নাগাদ মেয়েদের রাত দখল আন্দোলন চলাকালীন আরজি কর মেডিক্যালের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে প্রায় ১৫০ দুষ্কৃতী। লাঠি, রড, হাতুড়ি নিয়ে এমারজেন্সি ভবনে বেলাগাম ভাঙচুর চালায় তারা। ভবনের এক থেকে তিন তছনছ করে দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।

রাত ১টা নাগাদ মেয়েদের রাত দখল আন্দোলন চলাকালীন আরজি কর মেডিক্যালের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে প্রায় ১৫০ দুষ্কৃতী। লাঠি, রড, হাতুড়ি নিয়ে এমারজেন্সি ভবনে বেলাগাম ভাঙচুর চালায় তারা। বৃহস্পতিবার রাতে কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে ভাঙচুরের হাত রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে এই দাবি করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর দাবি, আন্দোলনকারীদের সঙ্গে মিশে হাসপাতালে ভাঙচুর চালিয়েছে তৃণমূলের গুন্ডারা। শুভেন্দু লিখেছেন, ‘আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের কাছে অরাজনৈতিক প্রতিবাদ মিছিলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর গুন্ডাদের পাঠিয়েছেন। তিনি মনে করেন তিনি বিশ্বের সব থেকে শেয়ানা মানুষ। কেউ তাঁর ধূর্ত চাল ধরতে পারবেন না যে তিনিই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে গুন্ডাদের মিশিয়ে দিয়ে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে হামলা চালিয়েছেন। পুলিশ তাদের সহজ রাস্তা করে দিয়েছে। পুলিশ হয় পালিয়েছে নইলে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখেছে যাতে দুষ্কৃতীরা হাসপাতালে ঢুকে ভাঙচুর চালাতে পারে ও তথ্যপ্রমাণ নষ্ট করতে পারে যাতে সেগুলো সিবিআইয়ের হাতে না পড়ে। তৃণমূলের গর্ধব গুন্ডাগুলো নিজেদের পরিচয় ফাঁস করে ফেলেছে। তারা প্রতিবাদী চিকিৎসক ও ডাক্তারি পড়ুয়াদের ধরনা মঞ্চ ভাঙচুর করেছে। যারা আন্দোলনকে সমর্থন করতে এসেছেন তাঁরা আন্দোলনের উপকেন্দ্রে ভাঙচুর করবে কেন? গোটা রাজ্যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন হয়েছে। শুধু আরজি করে হিংসা হল কেন? রাজ্যপালের এব্যাপারে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করা উচিত। তথ্যপ্রমাণ নষ্টের এই চেষ্টার ব্যাপারটি সিবিআইয়ের মাথায় রাখা উচিত।’

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed