October 12, 2024

সন্দীপে অনীহা, ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে গেটে তালা!‌আরজি কর-কাণ্ডে প্রভাবশালী সন্দীপ, ‘নমনীয়’ মুখ্যমন্ত্রী কতৃক ‘পুনর্বাসন’‌?

0

তড়িঘড়ি সন্দীপ আবার একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ। কেউই মেনে নিতে পারছেন না। না পারারই কথা। প্রভাবশালী সন্দীপের প্রতি এত নমনীয় কেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী?‌ রাতেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের ঘরের দরজায় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন সেখানকার আন্দোলনকারীরা। ঘরের দরজায় পোস্টার। ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে কাকতাড়ুয়া। চিকিৎসকেরা ন্যাশনাল মেডিক্যালে ‘ব্যারিকেড’ গড়ে তোলার ডাক। সন্দীপ কাজে যোগ নিয়ে শঙ্কিত শাসক শিবিরের লোকজন। আপাতত উপায়,এই পরিস্থিতিতে সন্দীপের লম্বা ছুটিতে চলে যাওয়া উচিত। পরিস্থিতি শান্ত হলে কাজে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত বা ঘোটলা করে দেওয়া যাবে!‌ এমনটাই গুঞ্জন।

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ যাতে নতুন কর্মস্থলে ঢুকতে না পারেন, সেই কারণে গেটে তালা?‌ মঙ্গলবার ন্যাশনাল মেডিক্যালে কিছু পড়ুয়ার পরীক্ষা রয়েছে। তাঁদের প্রশাসনিক ভবনের ভিতরে ঢুওকার পর পর গেটে তালা দিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা। পড়ুয়াদের বিক্ষোভ এবং ‘গো ব্যাক’ স্লোগানের জেরে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ থেকে ফিরে যেতে হল এন্টালির তৃণমূল বিধায়ক স্বর্ণকমল সাহা এবং রাজ্যের মন্ত্রী তথা কসবার বিধায়ক জাভেদ খানকে। স্বর্ণকমল এবং জাভেদের উদ্দেশে আন্দোলকারী পড়ুয়াদের দাবি, ,‘‘আমরা আমাদের মেডিক্যাল কলেজকে আরজি কর বানাতে দেব না। তাই আমরা অবস্থান শুরু করেছি। লাগাতার আন্দোলন চলবে। ২৪ ঘণ্টা আন্দোলন চালাব আমরা। এক মুহুর্তের জন্য অধ্যক্ষের ঘরের সামনের দরজা আমরা ছাড়ব না। সন্দীপ ঘোষকে আমাদের এখানে পাঠানো মানে, আমাদের এখানকার নিরাপত্তাও বিঘ্নিত হতে পারে।’’ নিজেদের ভয় এবং ক্ষোভের কথা উগরে দিলেন ন্যাশনাল মেডিক্যালের পড়ুয়ারা। আরজি করের সদ্য পদত্যাগী অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে কেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদে ‘চাপিয়ে দেওয়া হল’, প্রশ্ন তোলেন বিক্ষোভরত পড়ুয়ারা। পড়ুয়ারা বলেন, “আমরা ভয়ে আছি। আমরা ন্যাশনাল মেডিক্যালকে আরজি কর বানাতে চাই না।”

সন্দীপের ‘পুনর্বাসন’-এর নির্দেশের আগে পর্যন্ত প্রশাসক এবং রাজনীতিক মমতা ঘটনার রাশ পুরোপুরিই নিজের হাতে রেখেছিলেন। শুরু থেকেই মাননীয়া ‘নমনীয়’। তৃণমূল জমানার গত ১৩ বছরে রাজ্য ধর্ষণ-খুনের ঘটনার নজির রয়েছে। মমতার শাসনকালে বিরোধীরাও একনিঃশ্বাসে উচ্চারণ করে পার্ক স্ট্রিট, কামদুনি, গেদে, গাইঘাটা, মধ্যমগ্রাম বা হাঁসখালির নাম। একাধিক ঘটনায় তৃণমূলের নেতাদের বক্তব্য তো বটেই, কোনও কোনও ক্ষেত্রে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়েও সমালোচনা হয়েছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, ধর্ষিতা বা নিগৃহীতার প্রতি যে ‘সংবেদনশীলতা’ দেখানো উচিত, অপরাধীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর মনোভাব দেখানো উচিত, তা রাজ্য প্রশাসনের তরফে দেখানো হয়নি। আরজি কর হাসপাতালের চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক মহল মনে করেছে, মুখ্যমন্ত্রী ‘নমনীয়’ অবস্থানের কথা। কামদুনির ঘটনার পরেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা গ্রামের দুই ‘প্রতিবাদী’ মৌসুমি কয়াল এবং টুম্পা কয়ালের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তাঁদের উদ্দেশে ‘সিপিএম’ এবং ‘মাওবাদী’ বলেছিলেন। শাসকদলের নেতারা ঘরের পাশের বাংলাদেশের প্রসঙ্গও টানছেন। তাঁদের বক্তব্য, শাসকের মন্তব্য কী পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে, সাম্প্রতিক বাংলাদেশ তার উদাহরণ। একই সঙ্গে বাংলাদেশ দেখিয়েছে, তরুণ প্রজন্ম, ছাত্রসমাজ এবং নাগরিক সমাজের আন্দোলন কোন স্তরে পৌঁছতে পারে এবং তার অভিঘাত কী হতে পারে?‌

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed