বাংলার অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে ঋদ্ধিমান! তিক্ত অতীত ভুলে তিন ফরম্যাটেই খেলতে চাইছেন
আগামী মরসুমে বাংলার অধিনায়ক ঋদ্ধিমান সাহা। নিজের রাজ্য বাংলায় ফিরে নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চাইছেন। তিন ফরম্যাটেই খেলতে চাইছেন। টুপিতে লেখা, ‘নেভার গিভ আপ’। অর্থাৎ কখনও হাল ছেড়ো না। নিজের জীবনেও সে কথাই মেনে চলেন ঋদ্ধিমান সাহা। চল্লিশ ছুঁইছুঁই বয়সে নিজের রাজ্য বাংলায় ফিরে তিন ফরম্যাটেই খেলতে চাইছেন। চালিয়ে যেতে চাইছেন আইপিএলে খেলাও।
সিএবি-র এক কর্তার সঙ্গে ঝামেলার জেরে দু’বছর আগে বাংলা ছেড়ে ত্রিপুরায় চলে গিয়েছিলেন ঋদ্ধিমান। সে রাজ্যের হয়ে খেলার চাপ বাংলার থেকে অনেকটাই কম। অনায়াসে ত্রিপুরার হয়ে বাকি জীবন খেলে পেশাদার ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে পারতেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, স্ত্রী রোমি এবং আরও কিছু শুভাকাঙ্ক্ষীর কথা শুনে বাংলায় ফিরে আবার রাজি নিজের রাজ্যের হয়ে সেরাটা দিতে।
বাংলায় ফেরার প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করে ঋদ্ধিমান বলেন, “মাঝে দু’বছর ছিলাম না। তার আগে ১৪-১৫ বছর বাংলার হয়ে খেলেছি। দাদি (সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়), স্ত্রী রোমি, স্নেহাশিসদা (গঙ্গোপাধ্যায়, সিএবি সভাপতি) সবার সঙ্গে কথা বলেই বাংলায় ফিরেছি। যদি দলে জায়গা পাই তা হলে নিজের সেরাটাই দেব। আগেও একই কাজ করেছি। আগামী দিনে যদি সিএবি আমাকে অন্য কোনও দায়িত্ব দেয় সেটাও করতে রাজি। বাংলার হয়ে খেলার জন্যে অনেক চাকরির প্রস্তাব ফিরিয়েছি। যেখান থেকে আমার উত্থান সেখানকার জন্য কিছু করতে পারলে ভাল লাগবে।”
দু’বছর আগে এই সিএবি-তে এক কর্তার সঙ্গে ঝামেলার জেরে যতই তিক্ততা তৈরি হোক, বাংলার হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে তা মনে রাখতে চান না ঋদ্ধিমান। “যেখান থেকে শুরু করেছি সেখানে ফিরে মনে হচ্ছে কিছুই হয়নি। পরিবেশ আগের মতোই রয়েছে। লক্ষ্মীদা (লক্ষ্মীরতন শুক্লা, বাংলার কোচ), ম্যাকোদার (শিবশঙ্কর পাল) সঙ্গে নিয়মিত কথা হচ্ছে। আশা করি আগামী মরসুম ভালই কাটবে।”অধিনায়ক হওয়ার কথা নিজ মুখে স্বীকার না করে বললেন, “এখনও অনেক সময় রয়েছে। এখনই কিছু বলতে পারব না। দলের জন্য যেটা ভাল মনে হবে সেটাই করব। প্রথম ম্যাচ খেলার আগে অন্তত দু’মাস বাকি আছে।” ঋদ্ধিমানকে অধিনায়ক করার প্রসঙ্গ সভাপতি স্নেহাশিস গাঙ্গুলী বলেন, “আমার ব্যক্তিগত পছন্দ নেই। যা দল ঠিক করবে তাই হবে। ১৫ জুলাই থেকে আমাদের অনুশীলন শুরু হয়েছে। ১৩ অক্টোবর প্রথম ম্যাচ। বাইরে গিয়ে শিবির করব। প্রস্তুতি ম্যাচ খেলব। তার পরে সিদ্ধান্ত।”
সিএবি সূত্রে খবর, মনোজ তিওয়ারি অবসর নেওয়ায় অধিনায়ক হিসাবে একজন অভিজ্ঞ কাউকে চাওয়া হচ্ছে। নেতা হিসাবে ঋদ্ধিমানকেই দেখা যেতে পারে। বাংলার হয়ে যিনি নিজের সেরাটা বরাবর দিয়েছেন, তাঁকে সম্মান জানানোর এটাই সেরা উপায় বলে মনে করছেন একাংশ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে এখন বহু দূরে থাকা ঋদ্ধিমান বাংলার হয়ে খেলতে চলেছেন। বাংলার উইকেটকিপার বলেছেন, “দূরেরটা ভাবি না। বরাবরই ভাল লাগে বলে খেলে এসেছি। যতদিন ভাল লাগে ততদিন খেলব। এখনও আমার মধ্যে খিদে রয়েছে। জানি বয়স হচ্ছে। তার মধ্যেও ১০০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করব।”