February 17, 2025

রাজ্যে প্রতিবাদের আঁচ বেড়ে চলেছে!‌ চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনা, আমজনতার ক্ষোভকে প্রশমিত করতেই ড্যামেজ কন্ট্রোলে কলকাতা পুলিশ

0
RG kar

না-যাচাই-করা এই ধরণের তত্ত্ব, তথ্য বা গুজবে কান দেবেন না। ন্যায়বিচার হবেই, দ্রুতই হবে। না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না। ভরসা রাখুন।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে তরুণী চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় গোটা দেশ। এই পরিস্থিতিতে এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করল কলকাতা পুলিশ। সোমবার থেকে কর্মবিরতিতে চিকিৎসক সংগঠন। আরজি কর হাসপাতালে বন্ধ রাখা হয়েছে জরুরি পরিষেবাও। সাধারণ মানুষও কেউ রাস্তায় নেমে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে অংশ নিয়েছেন প্রতিবাদে। দিন দিন আঁচ বেড়েই চলেছে বিক্ষোভের। হস্তক্ষেপ খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির। মনে করা হচ্ছে, চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় যেভাবে রাজ্যে প্রতিবাদের আঁচ বেড়ে চলেছে তাতে আমজনতার ক্ষোভকে প্রশমিত করতেই এই পোস্ট। পোস্টে লেখা হয়েছে, ‘আর. জি কর মেডিক্যাল কলেজে যে চিকিৎসক তরুণীর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে, এই কঠিন সময়ে আমরা সর্বান্তঃকরণে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে আছি। এই ঘটনায় মানুষের ক্ষোভ, শোক, রাগ অত্যন্ত স্বাভাবিক, বিশেষ করে চিকিৎসক সমাজের এবং মৃতার পরিজনদের।’ জানানো হয়েছে, স্বচ্ছতা এবং সততার সঙ্গে তদন্ত চলছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই একজনকে গ্রেপ্তার। শুধু তাই নয়, মৃতের পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে পুলিশ এমনকি প্রতিটি পদক্ষেপ জানানো হচ্ছে পুলিশকে। সাধারণ মানুষকে কলকাতা পুলিশের বার্তা, এই ঘটনা সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। পোস্টে লেখা, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায়, বিশেষত ফেসবুকে ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন অসত্য, অনুমাননির্ভর এবং বিভ্রান্তিকর তত্ত্ব ছড়িয়ে দিচ্ছেন নেটিজেনদের একাংশ। আমাদের আন্তরিক অনুরোধ, না-যাচাই-করা এই ধরণের তত্ত্ব, তথ্য বা গুজবে কান দেবেন না।’ কলকাতা পুলিশের তরফে ভরসা রাখার বার্তাও দিয়ে লেখা হয়েছে, ‘কলকাতা পুলিশ যথাসাধ্য দ্রুততায় চার্জশিট জমা করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে। ন্যায়বিচার হবেই, দ্রুতই হবে। না হওয়া পর্যন্ত আমরা থামব না। ভরসা রাখুন।’

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে একাধিক সংগঠন। প্রতিবাদে বিক্ষোভের ডাক দিল জাতীয় চিকিৎসক সংগঠন ফোরডা। জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিতে সমস্ত চিকিৎসক সংগঠনকে আহ্বান জানিয়েছে ফোরডা। ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার থেকে দেশজুড়ে হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যকেন্দ্র গুলিতে কর্মবিরতির ঘোষণা। বিবৃতিতে তাঁদের একাধিক দাবির কথাও জানিয়েছে ফোরডা। জানানো হয়েছে, সঠিক বিচার এবং নিরাপত্তার দাবি এই সিদ্ধান্ত। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসকদের সমস্ত দাবি মেনে পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। চিকিৎসকদের প্রতিবাদের সময় পুলিশ যেন কোনোভাবেই হিংসাত্মক না হয়ে ওঠে সেই বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে হবে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলন যেন অশান্ত না হয়ে ওঠে। মৃতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ যাতে দেওয়া হয়। সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ, দেশজুড়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে উপযুক্ত গাইডলাইন প্রকাশ করতে হবে। হেলথকেয়ার প্রোটেকশন আইন গঠনের জন্য মেডিক্যাল কমিউনিটি এবং অ্যাসোসিয়াশন গুলি থেকে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। জরুরি ভিত্তিতে এই কমিটি গঠন করে পদক্ষেপ প্র‌য়োজন।

“ও বরাবরই বদমেজাজি ছিল। নিজের মর্জির মালিক। জিজ্ঞেস করলে তর্ক করত। কাউকে কিছু জানাত না। কী করে সে চাকরি পেল, কবে থেকে চাকরিতে যোগ দেয় তাঁরা কেউ জানেন না। সিভিক ভলান্টিয়ার হয়ে কলকাতা পুলিশের মোটর সাইকেল নিয়ে ঘুরত সঞ্জয়। ওই বাইক নিয়েও বাড়িতেও গিয়েছিল। বাইক কোথা থেকে পেল জিজ্ঞেস করলে বলেছিল, অফিস দিয়েছে।” অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের ফাঁসির দাবির সুরেই সুর মেলালেন অভিযুক্তের দিদি। তিনিও চাইছেন ভাইয়ের ফাঁসি হোক। গুণধর ভাইয়ের সঙ্গে অনেক আগেই দূরত্ব তৈরি করে নিয়েছিলেন দিদি। আর জি কর কাণ্ডে ধৃত ভাইয়ের কঠোরতম শাস্তি চাইলেন সঞ্জয়ের দিদি পূজা রায়। এও বলেন, ফাঁসি হলে তার দেহও নেবেন না। আর জি করে স্নাতকোত্তর পড়ুয়া চিকিৎসককে নৃশংসভাবে হত‌্যা করার অপরাধে গ্রেপ্তার করা হয় সঞ্জয় রায়কে। সঞ্জয় কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার ছিল। তার দিদিও কলকাতা পুলিশে কর্মরত। ভাইয়ের কুকর্মের প্রতিবাদের পাশাপাশি তার কঠোর শাস্তির দাবি তুলেছেন দিদিও। সঞ্জয় বরাবরাই খারাপ ছেলে হিসাবে ঘরে ও বাইরে পরিচিত ছিল। তার কর্মকাণ্ডের জেরে তিতিবিরক্ত ছিলেন পরিবারের লোকজন। বিয়ের পর থেকে আলাদা থাকেন দিদি। তিনি বলেন, “ওকে নিজের ভাই বলে পরিচয় দিতেও লজ্জা লাগে। ওর এত কুকীর্তি যে বাধ্য হয়েই আমরা ওর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখিনি। আমরা বোনেরাই মায়ের দেখাশোনা করি।” তাঁর বক্তব‌্য, “ও ঘরেও থাকত না। আসত, যেত, যখন ইচ্ছে। নিজেই একদিন বলল, এই ঘরে আসব না, থাকব না। আর জি করে যে নৃশংস ঘটনা ঘটিয়েছে তাতে ওর কঠোরতম শাাস্তি হওয়া উচিত। তবে সকলের কাছে একটাই অনুরোধ, আপনারা ওকে নিয়ে যা খুশি করুন, দয়া করে ওর দেহ আমাদের দেবেন না। ফাঁসি হলেও আমরা ওর দেহ নেব না। এরকম নোংরা মানুষের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক রাখা যায় না।” সঞ্জয়কে নিয়ে তিতিবিরক্ত তার প্রতিবেশীরাও। দিনরাত মদ খেত। একের পর এক বিয়ে তার নেশা ছিল। সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় এলাকায় নিজেকে কলকাতা পুলিশে কর্মরত বলে পরিচয় দিত। অথচ তার পুলিশ দিদি জানতেন না ভাই কী কাজ করে। কোন থানায় কর্মরত?‌

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed