শীর্ষে ইস্টবেঙ্গল, বন্যা বিধ্বস্তদের গোল উৎসর্গ জেসিনের
ইস্টবেঙ্গল – ৩ (তালাল, ক্রেস্পো-পেনাল্টি, জেসিন)
ডাউনটাউন হিরোজ – ১ (আফরিন)
ম্যাচের বয়স তখন প্রায় ৯২ মিনিট। বক্সের ঠিক মাথায় শরীরের ভাঁজে কাশ্মীরের দলের ডিফেন্ডারকে ছিটকে দিলেন। তারপর ডান পায়ের দূরপাল্লার শটে গোল জেসিন টিকের। সঙ্গে সঙ্গে কর্নার ফ্ল্যাগের দিকে ছুটে গেলেন কেরলের স্ট্রাইকার। তুলে ধরলেন একটি হলুদ জার্সি।
যাতে ওয়েনাড়ের বন্যা বিধ্বস্তদের জন্য বার্তা। জার্সিতে লেখা, ‘স্টে স্ট্রং ওয়েনাড়। আমরা তোমাদের সঙ্গে আছি। এটা তোমাদের জন্য।’ জেসিনের শেষ মিনিটের গোলে তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করল ইস্টবেঙ্গল। বুধবার কিশোর ভারতীয় স্টেডিয়ামে ডাউনটাউন হিরোজকে ৩-১ গোলে হারায় লাল হলুদ।
জোড়া জয়ে টেবিলের শীর্ষে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালের দিকে এক পা বাড়িয়ে ফেলল কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। ইস্টবেঙ্গলের হয়ে বাকি দুটো গোল মাদি তালাল এবং সল ক্রেসপোর। লাল হলুদ জার্সিতে নেমেই মরশুমের প্রথম দুটো ম্যাচেই সেরা ফরাসি প্লেমেকার। স্বভাবতই খুশি।
মাদি তালাল বলেন, ‘শুরুটা ভাল করতে পেরে খুশি। তবে নিজের ম্যাচের সেরা হওয়ার থেকেও খুশি দলকে সাহায্য করতে পেরে। ডার্বি নিয়ে এখন ভাবছি না। সামনে এসিএল আছে। তার আগে এই দুটো জয় খুব গুরুত্বপূর্ণ। তবে আমাদের অনেকগুলো দিকে উন্নতি করতে হবে। প্রত্যেক ম্যাচে গোল হজম করা ভাল নয়। ডিফেন্স আরও জোরদার করতে হবে। আমাদের এখন লক্ষ্য এসিএল।’
ম্যাচের ২৩ মিনিটে মাদি তালালের গোলে এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। দূরপাল্লার শটে গোল করেন ফরাসি প্লেমেকার। কিন্তু বেশিক্ষণ লিড ধরে রাখতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের ৩০ মিনিটে সমতা ফেরায় ডাউনটাউন। রাকিপকে কাটিয়ে গোল আফরিন পারের। প্রভসুখন গিলের গায়ে লেগে বল গোলে ঢুকে যায়। তবে তার ৫ মিনিটের মধ্যে আবার এগিয়ে যায় লাল হলুদ। ম্যাচের ৩৩ মিনিটে বক্সের মধ্যে বিষ্ণুকে ফাউল করেন ইকলাক ফইয়াজ। পেনাল্টি দেন রেফারি। ৩৫ মিনিটে স্পট কিক থেকে গোল করেন সল ক্রেসপো। তারপর সেই টেলিফোনের ভঙ্গিতে সিগনেচার সেলিব্রেশন।
দ্বিতীয়ার্ধে একাধিক সুযোগ নষ্ট ইস্টবেঙ্গলের। নয়তো গোল সংখ্যা আরও বাড়তে পারত। মহমেডানের হয়ে গত মরশুমে দারুণ খেললেও, এখনও লাল হলুদ জার্সিতে নজর কাড়তে ব্যর্থ ডেভিড। বেশ কয়েকটা সুযোগ নষ্ট করেন মিজো স্ট্রাইকার। ম্যাচের শেষ কোয়ার্টারে ডাউনটাউনের জাহিদ ইউসুফ জোড়া হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ে। দশজনে হয়ে যায় কাশ্মীরের দল।
ম্যাচের ৯২ মিনিটে জয়সূচক গোল জেসিন টিকের। গোল করে ওয়েনাড়ের বন্যা বিধ্বস্তদের উদ্দেশে বার্তা দেন কেরলের ফুটবলার।মরশুমের শুরুতে জোড়া জয়ে সন্তুষ্ট কার্লেস কুয়াদ্রাত। তবে প্রতি ম্যাচে গোল হজম করা নিয়ে চিন্তায়।
কুয়াদ্রাত বলেন, ‘এসিএল এবং ডার্বির আগে দুটো জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে। তবে এক গোলের ব্যবধান কখনোই নিরাপদ নয়। যা কিছু হতে পারে। সেটা বাড়াতে আমাদের অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। এই বিষয়ে আমাদের উন্নতি করতে হবে। তাছাড়া দুটো ম্যাচেই আমরা গোল হজম করেছি। বিপক্ষ একটা-দুটো সুযোগ তৈরি করছে, আর সেটা থেকেই গোল হয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’ এদিন জিকসন সিংকে দলে রাখেননি কুয়াদ্রাত।