বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান ড. ইউনুস, বাংলাদেশের সেনাবাহিনীতেও রদবদল, দেশ ছেড়ে পালানোর আগে গ্রেপ্তার একাধিক মন্ত্রী
জল্পনার অবসান। মঙ্গলবার গভীর রাতে বঙ্গভবনে বৈঠক শেষে জানানো হল, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হচ্ছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মহম্মদ ইউনুস। রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব জয়নাল আবেদিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রূপরেখা নিয়ে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন, তিনবাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সহ সংশ্লিষ্টদের তিন ঘণ্টার বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বাকি সদস্যদের নাম পরে চূড়ান্ত হবে। বৈঠক শেষে নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে সর্বজন গ্রহণযোগ্য ড. মহম্মদ ইউনুসের নাম প্রস্তাব করেছিলাম। আজকে মহামান্য রাষ্ট্রপতি সম্মত হয়েছেন।’ বঙ্গভবনের বৈঠকে ১৩ সমন্বয়ক ছাড়াও ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং অধ্যাপক তানজীম উদ্দিন খান। প্রসঙ্গত, সোমবার শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দেওয়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম সাফ জানিয়ে দেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মঞ্চ নোবেলজয়ী ড. মহম্মদ ইউনুসকেই প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের রূপরেখা দিচ্ছে। বঙ্গভবনে বৈঠক শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মঞ্চের আর্জিকেই মান্যতা দেওয়া হল।
প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছাড়তেই বাংলাদেশের একাধিক মন্ত্রী গ্রেপ্তার। হাসিনা যেতেই দেশ ছেড়ে পালাতে গিয়ে গ্রেপ্তার হলেন সদ্য প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। মঙ্গলবার বিকালে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রথমে তাঁকে আটকায় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনিই হাসিনার মন্ত্রিসভার প্রথম মন্ত্রী যাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরও এক মন্ত্রীকে আটক করে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। তিনি তৎকালীন হাসিনা সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী জুনেইদ আহমেদ পলক। তিনিও দেশ ছেড়ে পালিয়ে দিল্লিতে যাচ্ছিলেন। আজ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটক করা হয় পলককে। তাঁর দুই সঙ্গীকেও হেফাজতে নেওয়া হয়। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক তথা সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শেখ হাসিনার আগেই রবিবার বাংলাদেশ ছেড়ে ভিন দেশে চলে গিয়েছেন। বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আগেই বড় রদবদল হল সেনাবাহিনীতে। আজ আইএসপিআর একটি বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। সেনা থেকে সরিয়ে লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ সাইফুল আলমকে বিদেশ দপ্তরে সরিয়ে আনা হয়েছে। লেফটেন্যান্ট জেনারেল মহম্মদ মজিবুর রহমানকে জিওসি আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ডে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহম্মদ তাবরেজ শামস চৌধুরীকে সেনাবাহিনীর কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মিজানুর রহমান শামিমকে সেনাবাহিনীর চিফ অফ জেনারেল স্টাফ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহিনুল হককে কমান্ড্যান্ট এনডিসি পদে নিয়োগের নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।