বেশি বয়সে দাদার সঙ্গে আদরের রানি দিদির বিয়ে! ‘ওর শারীরিক-মানসিক প্রতিবন্ধকতা…’, কটাক্ষের জবাব অপরাজিতার

অপরাজিতা আঢ্য। পরিবার আর বন্ধুদের ঘিরেই অভিনেত্রী ব্যস্ত থাকতে পছন্দ করেন। দাদার বিয়ের অনুষ্ঠানের নানান আচার-অনুষ্ঠান ধরা পড়েছে অপরাজিতার ফেসবুক-ইনস্টায়। ছবি-ভিডিয়ো দেখে বেশিরভাগ মানুষই সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিনেত্রীকে। অপরাজিতার পঞ্চাশোর্ধ দাদাকে বরবেশে। মায়ের মৃত্যুর আট মাস পর দাদার বিয়ে দিলেন অপরাজিতা আঢ্য। প্রশ্নের মুখোমুখি অভিনেত্রী। দাদার ঘরোয়া বউভাতের অনুষ্ঠানে পৌঁছেছিলেন বাপের বাড়ি হাওড়ায়। ভাতকাপড়ের অনুষ্ঠান শেষে ফেসবুক লাইভে এসে কড়া জবাব অভিনেত্রীর। ‘এতদিনে কেন বিয়ে হল না দাদার?’ অপরাজিতা বলেন, ‘ওঁনাকে (দাদার স্ত্রীকে) আমার দিদিমা পছন্দ করে গিয়েছিলেন। দিদিমা চেয়েছিলেন ওর সঙ্গে দাদার বিয়েটা হোক। রানি দি (অপরাজিতার বৌদি)সারাক্ষণ দিদার সঙ্গে থাকত। দিদিমা মারা যান, সেটা ২০১১ সাল। সেইসময় ওই দিদির সঙ্গে বিয়ে দেওয়াটা সম্ভব হয়নি। আমাদের পরিবারে কিছু অসুবিধা ছিল, ওর তো ভাই মারা যায়। তাঁকে গোটা সংসারের হাল দিদিকে ধরতে হয়েছিল’।
দাদাকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে একদিকে ইমোশন্যাল, অন্যদিকে ক্ষুব্ধ অভিনেত্রী। তিনি বলেন, ‘আমার দাদার শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা আছে। সেটার সঙ্গে উনি লড়াই করেন, ওনেক ওষুধ চলে। উনি সরল-সাধাসিধে মানুষ, এলাকায় অনেক মানুষ ওকে হাসির পাত্র বানানোর চেষ্টা করে। ‘ওর কিছু হবে না’- এইসব বলে। আমি এই ধরণের মানুষকে ঘৃণা করি। এটা আমার দাদার সঙ্গে হামেশা ঘটে, গতকালও ঘটেছে ওর বিয়ের পর। এটা অত্যন্ত কদর্য মনের পরিচয় দেয়। কারুর ভালোতে যদি আপনি খুশি না হন, তাহলে আপনি ঘৃণ্য মনের পরিচয় দিয়েছেন। তারা সূদূরে থাকেন না, আমাদের মাঝখানেই থাকেন। পরবর্তীতে আমরা ফের যখন বিয়ের কথা ভাবি, আমার মা অসুস্থ হয়ে পড়েন। মা দু-বছর বিছানায় শয্যাশায়ী ছিলেন। মা মারা যাওয়ার পরপর দাদাও অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওঁর শারীরিক অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়।’এরপর রানিদিদির সেবা যত্নেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন অপরাজিতার দাদা। শেষ দু-বছর শয্যাশায়ী ছিলেন অপরাজিতার মা। তাঁরও সেবা করেছেন রানিদিদি। অভিনেত্রীর কথায়, ‘আমার দাদার জন্য, মায়ের জন্য উনি নিজের জীবনপাত করে দিয়েছেন…’। তাই দাদা সুস্থ হয়ে ওঠবার পর যখন বন্ধু অর্পিতা রানিদিদির সঙ্গে অপরাজিতার দাদার বিয়ের প্রস্তাব দেন তখন স্বস্তি পান অভিনেত্রী। তবে স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ যদি স্বেচ্ছায় বিয়ে করতে চান তবেই তিনি রাজি। মত দিতে বেশি সময় নেননি দুজনে। মায়ের ইচ্ছেতেই হাওড়ার একশো বছরের পুরোনো ভাঙা বাড়িতেই নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দাদার বিয়ে দিলেন অপরাজিতা।