February 17, 2025

প্রচুর শিক্ষিত ‘করিৎকর্মা’ রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব?‌বিরোধীদের চোখে ‘পার্ট টাইম রেলমন্ত্রী’ রিল বানাতে ব্যস্ত থাকেন, অথচ রেল দুর্ঘটনা থেমে থাকে না!‌

0
Rail Accident

দুর্ঘটনা ঘটলে মোটরবাইকের পিলিয়নে বসে পৌঁছে যান ঘটনাস্থলে। ঢুকে পড়েন দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের ইঞ্জিনের নিচে। খবরের কাগজের দারুন ছবি। ‘করিৎকর্মা’ রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। প্রশংসা কুড়োতে পছন্দ করেন সমাজমাধ্যম থেকে। বিরোধীরা তাঁকে ‘পার্ট টাইম রেলমন্ত্রী’ বলেন। কারণ রেলমন্ত্রী রিল বানাতে থাকেন। অথচ তিনি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেল দুর্ঘটনা থেমে থাকে না। দেড় মাসে যাত্রিবাহী ট্রেনে তিনটি দুর্ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু। আহত অসংখ্য। ঝাড়খণ্ডে হাওড়া-মুম্বই মেলের দুর্ঘটনায় অশ্বিনীকে কটাক্ষ করে আম আদমি পার্টি এক্স সমাজমাধ্যমে লিখেছে, ‘রেলমন্ত্রীর রিল বানানো আর প্রধানমন্ত্রীর জুমলাবাজি ছাড়া অন্য কোনও কিছু করার সময় নেই।’’

আজই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বণিকসভার একটি অনুষ্ঠানে দাবি করেন, তাঁর আমলে রেলে বরাদ্দ আট গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। মোদী যখন ওই দাবি করছেন, তার কয়েক ঘণ্টা আগেই হাওড়া-সিএসএমটি মুম্বই মেল চক্রধরপুরের কাছেলাইনচ্যুত হয়ে মারা গিয়েছেন দু’জন। প্রাক্তন রেলকর্তাদের অনেকেরই আক্ষেপ, কার্যত মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে রেলসফর। যে কোনও দিন, যে কোনও সময়ে যে কোনও লাইনে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এর জন্য রেল মন্ত্রক-সহ মোট তিনটি মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকা অশ্বিনী বৈষ্ণবের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে।

রেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব কেন এক জন আংশিক সময়ের মন্ত্রীর হাতে দেওয়া হবে? শুধু বিরোধী শিবির নয়, বিজেপির অভ্যন্তরেও এই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিচ্ছে। ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচারের মতো মন্ত্রকের দায়িত্বও বৈষ্ণবের হাতে রয়েছে। দলে কি উপযুক্ত ব্যক্তির অভাব?‌ এক জনকে রেল-সহ তিনটি মন্ত্রকের দায়িত্ব দিতে হবে? অশ্বিনী প্রাক্তন আমলা, অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন সচিবালয়ে কাজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দেখিয়েছেন। আর তাতেই প্রধানমন্ত্রী তাঁকে তিনটি মন্ত্রকের দায়িত্ব দিয়েছেন!

১৯৯৪ ব্যাচের প্রাক্তন আমলা অশ্বিনীর বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ, রেলের সার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিবর্তে কসমেটিক সার্জারি বা রূপসজ্জার উপরে জোর দেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতীতে একই ভুল করেছিলেন প্রাক্তন রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা মল্লিকার্জুন খড়্গেরা। রেলের সার্বিক পরিকাঠামো, নতুন লাইন পাতা, বৈদ্যুতিকরণ, সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা, আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা চালু করা ইত্যাদির উপরে তেমন জোর না দিয়ে নিজের নিজের রাজ্যে নতুন ট্রেন চালিয়ে সস্তা জনপ্রিয়তা কুড়াতে চেয়েছিলেন। বৈষ্ণবও কার্যত একই পথে হেঁটে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন ছেড়ে জোর দেন বন্দে ভারত ট্রেন চালুর উপরে। প্রবল উপেক্ষিত হয়েছে রেলের সুরক্ষা ব্যবস্থা। দুর্ঘটনার শিকার রেল। দুর্ঘটনার কারণ কামরা বেলাইন হওয়া। লাইনের ফাটল, লাইনের তলা থেকে জমি ধসে যাওয়ার মতো কারণেই ও লাইনের রক্ষণাবেক্ষণের অভাবেই একের পর এক বিপদের খাঁড়া সাধারন মানুষের উপর এসে পড়ছে।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed