বেসমেন্টে জমা জলে ডুবে মৃত্যু ২ আইএএস পরীক্ষার্থীর, বর্ষায় বিপর্যস্ত হিমাচল, মৃত বেড়ে ৫৬, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল
একটানা প্রবল বৃষ্টি। বিপত্তি দিল্লিতে। আইএএস কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে জল। প্রথমে তিন পড়ুয়ার নিখোঁজ হওয়ার খবর পায় পুলিশ। রাতে তল্লাশি চালিয়ে দুই ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার। এখনও নিখোঁজ বাকি এক পড়ুয়া। ঘটনাটি পুরনো রাজেন্দ্র নগর এলাকার। সন্ধে থেকে মুষলধারে বৃষ্টিতে জলমগ্ন এলাকা। কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টেও জল ঢুকে যায়। সেই সময় উপরের তলায় ক্লাস চলছিল। প্রায় তিন ঘণ্টা বেসমেন্টে আটকে ছিলেন তিন পড়ুয়া। খবর পেয়েই কোচিং সেন্টারে পৌঁছয় পুলিশ, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং দমকলের পাঁচটি ইঞ্জিন। এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। টর্চ নিয়ে পড়ুয়াদের খোঁজ শুরু করে উদ্ধারকারী দল। দীর্ঘক্ষণ তল্লাশি চালিয়ে দুই ছাত্রীর দেহ উদ্ধার। বাকি একজনের খোঁজ চলছে। বেসমেন্ট থেকে জল বের করার চেষ্টাও চালাচ্ছে দমকল বাহিনী। দিল্লির শিক্ষামন্ত্রী অতিশী সমাজ মাধ্যমে লিখেছেন, একটানা ভারি বৃষ্টিতে রাজেন্দ্র নগরে জল জমে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ।
এদিকে, বর্ষায় প্রবল দুর্যোগে বিপর্যস্ত হিমাচল প্রদেশ। বাড়ল হতাহতের সংখ্যা। একমাসের মধ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বিপুল। হিমাচলে আরও দুর্যোগের আশঙ্কা রয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের তরফে জারি করা হয়েছে সতর্কতাও। ২৭ জুন বর্ষা প্রবেশের পর থেকে এ পর্যন্ত হিমাচল প্রদেশে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত বহু। এর মধ্যে উঁচু থেকে পড়ে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে, ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন জলে ডুবে। সাপের কামড়ে আটজন এবং বাজ পড়ে আরও আটজন, একজন হড়পা বানে তলিয়ে মারা গেছেন। ভূমিধস এবং মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। প্রশাসনের তরফে আরও জানানো হয়েছে, প্রবল বৃষ্টিতে হিমাচল জুড়ে একশোর বেশি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত। ফসল, রাস্তাঘাট সবমিলিয়ে ৪১০ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে এ রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে মৌসম ভবন জানিয়েছে, হিমাচল জুড়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাত জারি থাকবে। রাজ্যে হলুদ সতর্কতাও জারি করা হয়েছে। এই আবহাওয়ায় ফসলের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
অতি ভারি বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত গুজরাট। এ রাজ্যে ৬৫ জনের মৃত্যু। গৃহহীন হাজার হাজার মানুষ। ১৫ জুন গুজরাটে বর্ষা প্রবেশ করেছে। ২৭ জুলাই পর্যন্ত গুজরাটে ৬৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বজ্রাঘাতে, ধসে চাপা পড়ে, জমা জলে ডুবে, উপড়ে পড়া গাছে চাপা পড়ে মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটছে। আহত বহু। দেবভূমি দ্বারকা, সুরাট, রাজকোট সহ একাধিক এলাকায় বহু বাড়িতে ধস, রাস্তায় জল জমা এবং বিদ্যুৎ বিভ্রাটের খবর পাওয়া গিয়েছে। প্রশাসন সূত্রে খবর, জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে জাতীয় বিপর্যস্ত মোকাবিলা বাহিনী। এ পর্যন্ত সাড়ে ১৪ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি এখনই বদলাবে না গুজরাটে। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, গোটা রাজ্যে অতি ভারি বৃষ্টির সতর্কতা জারি।