সোনারপুরের ত্রাস জামাল প্রাসাদোপম বাড়ির মালিক!প্রাসাদে এলাহি সাজসজ্জা সুইমিং পুল,রয়েছে ঘোড়া, হদিশ মিলল গুপ্তঘরের?
সোনারপুরের ত্রাস জামাল প্রাসাদোপম বাড়ির মালিক। বাড়ির ভিতর সুইমিং পুল। পোষ্য কচ্ছপের আনাগোনা। রয়েছে ঘোড়া। দেখভালের জন্য অসংখ্য কর্মী। বাড়িতে পরিচারক-পরিচারিকারও অগুনতি। জামালের আয়ের উৎস কেউ জানে না। নিজের বাড়ির ভিতরে আলাদা পৃথিবী গড়ে তুলেছিলেন জামাল। অভিযোগ, সেখানে সালিশি সভা বসাতেন। সেই সালিশি সভাতেই শিকলে বেঁধে মহিলাকে নির্যাতন করেছিলেন জামাল। যা নিয়ে হইচইয়ের পর থেকেই এলাকাছাড়া সোনারপুরের ‘ত্রাস’। জামালের দাবি, “তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।” পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করা হয়। বর্তমানে বন্দি জামাল। পুলিশের জালে সোনারপুরের জামালউদ্দিন সর্দার। পুলিশের জালে পড়তেই সোনারপুরের ‘ত্রাস’ জামাল সর্দার টানা তিনদিনের প্রচণ্ড চেষ্টায় পুলিশের জালে। শুক্রবার রাতে কলকাতা লেদার কমপ্লেক্স এবং নরেন্দ্রপুর থানার সীমান্ত এলাকা থেকে জামাল সর্দারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বারুইপুর মহকুমা আদালতে হাজির করাও হয়। তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক লাভলি মৈত্র বলেছিলেন, জামাল সর্দারকে পুলিশ গ্রেফতার।
জামাল সর্দারের বিরুদ্ধে মুখ খুলে ছিলেন একের পর এক নির্যাতিতা মহিলা। একজন মহিলাকে এবং তাঁর স্বামীকে সারারাত ধরে মারধর করার অভিযোগও উঠেছিল জামালের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতা ওই গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁর স্বামীকে শিকল দিয়ে বেঁধে উলটো করে ঝুলিয়ে সারারাত ধরে মারধর করে ওই জামাল। স্বামীকে বাঁচাতে জামালের হাতে পায়ে ধরলেও মারধর থামায়নি সে। এই গৃহবধূর সঙ্গে দেখা করে কথা দিয়েছিলেন সোনারপুর দক্ষিণের বিধায়ক লাভলি মৈত্র। জামাল সর্দারকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন পুলিশকে। শেষ পর্যন্ত জামাল শ্রীঘরে। গত ৭ জুলাই জামাল সর্দারের বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়। সালিশি সভার নামে এক মহিলার পায়ে শিকল বেঁধে মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ হয়েছিল। ওই ঘটনায় জামাল সর্দারের দুই সাঙ্গপাঙ্গ মুজিদ খাঁ এবং অরবিন্দ সর্দারকে আগেই গ্রেফতার করেছিল সোনারপুরের থানার পুলিশ। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে জামাল সর্দারের কোনও খোঁজ মিলছিল না। একের পর এক গ্রামবাসী তাঁর বিরুদ্ধে সালিশি সভা বসিয়ে হেনস্থা, তোলাবাজির অভিযোগ করেছিলেন। তখন থেকেই ‘পলাতক’ ছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের প্রতাপনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ত্রাস ওই জামাল সর্দার।
রুবিজানের স্বামী জানান, তাঁদের পারিবারিক গণ্ডগোল হয়েছিল। তাই একদিন রাতে তাঁকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় জামালের লোকজন। ‘জামাল একা নয়, মুজি, উসমান, অরবিন্দ নামে চারজন আমায় তুলে নিয়ে গিয়েছিল। গ্রিলে বেঁধে মারধর করেছিল। উল্টো করে ঝুলিয়ে রেখে মেরেছে।’ জামালের বিশাল বাড়ির সামনের গেটে ঝুলছিল বড় তালা। বন দফতরের অফিসাররা গিয়েও তাই খালি হাতে ফিরে এসেছিল। পুলিশ জামালের মোবাইল লোকেশন ‘ট্র্যাক’ করতে থাকে। মঙ্গলবার দুপুরের পর সেই মোবাইল ফোন ভাঙড়ের কাছে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। তারপর খুলতেই পুলিশ ধরে ফেলে জামাল সর্দারকে এবং সফল হয় অপারেশন।
কুলতলির সাদ্দামের বাড়ির টানেল চোখ কপালে তুলেছিল পুলিশের। এবার সোনারপুরের জামালউদ্দিনের বাড়িতে হদিশ মিলল গুপ্তঘরের! বাড়িতে তল্লাশি চালানোর সময় বিষয়টি টের পায় পুলিশ। ভেঙে দেখা হচ্ছে, কী রয়েছে ভিতরে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রবল শোরগোল এলাকায়। জামালকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি অভিযান যায় পুলিশ। সেই সময়ই আন্ডারগ্রাউন্ডের হদিশ মিলেছে বলে খবর। খতিয়ে দেখা হচ্ছে, সেখানে কী আছে। কেন বাড়িতে এই আন্ডারগ্রাউন্ড তৈরি করা হয়েছিল। খতিয়ে দেখছে পুলিশ।