October 3, 2024

মমতার টাকা নেবে না সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার, সজল ঘোষের পুজোকে নোটিস ধরাল কলকাতা পুলিশ

0

নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুজোর অনুদান বাড়িয়ে ৮৫ হাজার টাকা করেন। উত্তর কলকাতার দুর্গা পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় পুজো মণ্ডপ সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার। ২০২৩-এ রাম মন্দির করে কার্যত তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। গত বছর অত্যাধিক মানুষের সমাগমে ভিড় আটকাতে বন্ধ করে দিতে হয়েছিল মণ্ডপ। এবার সেই পুজো কমিটিই মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া অনুদান নেবে না বলে ঘোষণা করল। বিজেপি কাউন্সিলর তথা এই পুজোর মূল উদ্যোক্তা সজল ঘোষ জানান, রাজ্য সরকার ডিএ দিতে পারছে না, চাকরি দিতে পারছে না। সজলের দাবি, এই অনুদান দিয়ে ভোট বৈতরণী পারের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই মানবিকতার কারণে এই টাকা তারা প্রত্যাখ্যান করছেন।
অনুদানের ৮৫ হাজার টাকাই এবার ফিরিয়ে দিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার পুজো কমিটি।পুজোর মূল উদ্যোক্তা সজল ঘোষ বলেন, “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানাই উনি পুজো নিয়ে ভেবেছেন সেই কারণে। আমরা একবার এই অনুদানের টাকা নিয়েছিলাম যখন হাজার দশেক ছিল। সেই সময় ডিএ বা চাকরির দাবিতে রাস্তায় কেউ বসে থাকত না। চাকরির দাবিতে মেয়েরা মাথা কামাতেন না। আজ যখন তারা রাস্তায় বসে আছেন বছরের পর বছর এই টাকা নিলে তাঁদের অভিশাপ লাগবে না?” সজল আরও বলেন, “এই টাকাটা দিয়ে সরকার বহু বছরের ডিএ দিয়ে দিতে পারত। এই টাকায় অনেকের চাকরি ও বেতন হতে পারত। ইতিহাসে থাকার জন্য উনি এগুলো করছেন।”

এই ঘোষণার পরই সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারের পুজোকে নোটিস দিল কলকাতা পুলিশ। এই বছরের দুর্গাপুজোর থিম তাদের কী তা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি পুজোর সময় ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কী ব্যবস্থা নেবে তারা সেই মর্মেও নোটিসের জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিতে হবে। গত বছর রাম মন্দির উদ্বোধনে সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যার খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এসেছিলেন উদ্বোধনে। লেজার লাইটের আলোয় মণ্ডপে মহালয়ার দিন থেকেই দর্শনার্থীরা ভিড় জমাতে শুরু করেন। ষষ্ঠী, সপ্তমীতে কার্যত জনপ্লাবন তৈরি হয়। ভিড়ের চাপ সামলাতে পরে মণ্ডপ বন্ধ রাখতে হয় বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের এই পুজোকে। রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুর শ্রীভূমির পুজোও বন্ধ করতে হয়েছিল একবার। সেই সময় বুর্জ খালিফার আদলে বানানো হয়েছিল মণ্ডপ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্যই নির্দেশ দেন রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ সহ ক্লাব কমিটিগুলিকে। একাধিক প্রবেশ ও প্রস্থান গেট বানানো সহ ভিড়ের চাপে যাতে কোনও পদপিষ্টের ঘটনা না ঘটে তা নজরে রাখার কথা বলেন। সেই মতো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ক্লাবগুলিকে বলব কোন পুজোর কী থিম পুলিশকে শেয়ার করুন। আমি জানি অনেক ক্লাব আগেভাগে থিম জানাতে চান না। তবুও পুলিশকে জানিয়ে রাখলে সুবিধা হয়। আমি এক সংবাদপত্রে দেখেছি কেউ নাকি ১১২ ফুটের দুর্গাপুজো করছে। ভাবতে পারেন? এতে পদপিষ্ট হয়ে যাবে। আমি লাইটিং, লেজারের খেলা করলাম। এতে বিমান দুর্ঘটনা হতে পারে। অন্য মানুষের ক্ষতি হতে পারে।”

মমতার নির্দেশে সন্তোষ মিত্র স্কোয়্যারকে থিম জানানোর নোটিস দেয় কলকাতা পুলিশ। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শোরগোল। এ প্রসঙ্গে সজল ঘোষ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন থিম শেয়ার করতে হবে। আর থানার পুলিশ বলে দিচ্ছে কোনটা করতে হবে। ওরা অনুরোধ করতে পারে, জোর করতে পারে না আমায় আমি কী করব। ওরা বলছে নাগরদোলা চলবে না মেলায়। তাহলে তো সবজায়গার জন্য একই নিয়ম বর্তায়। কালীপুজোয় নাগরদোলা চলতে পারে অথচ দুর্গাপুজোয় না? এ কেমন আইন?”

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed