‘টানেল ম্যান’ সাদ্দাম সন্ত্রাসবাদী নন? তিনি নাকি একজন সমাজসেবী! বিচারকের সামনে দাবি সাদ্দামের আইনজীবীর
“সাদ্দাম একজন সমাজসেবী। এলাকায় প্রায়শয়ই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করতেন। পুলিশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ রয়েছে। তাহলে কীভাবে তিনি টেররিস্ট হবেন? ১১৩ টেররিস্ট অ্যাক্টে যা দেওয়া হয়েছে, তা একেবারেই যুক্তিহীন। সেরকম কিছু ঘটেনি। তাঁর মক্কেলের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র নেই। সাদ্দামের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন।” মান্নানের আইনজীবীও সাদ্দামকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে উড়িয়ে দিয়ে আইনজীবীর দাবি, মান্নানের ভেড়ি রয়েছে। ভেড়ির পাশে যদি কেউ গা ঢাকা দেন, তবে তার দায় মান্নানের নয়। কোনভাবেই তিনি এই মামলায় যুক্ত নন। অথচ কেন গ্রেপ্তার করা হল, তা স্পষ্ট নয়। সওয়াল জবাব শেষে ধৃতদের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
সরকারি আইনজীবীর দাবি, সাদ্দাম এবং মান্নানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। গত সোমবার পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজেও সাদ্দামকে স্পষ্ট দেখা গিয়েছে। জেরার স্বার্থে সাদ্দাম এবং তার ‘আশ্রয়দাতা’ মান্নানকে জেরার স্বার্থে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানান। কুলতলির ‘টানেল ম্যান’ সাদ্দাম সন্ত্রাসবাদী নন। তিনি নাকি একজন সমাজসেবী। কুলতলি কাণ্ড নিয়ে জোর শোরগোলে বিচারকের সামনে বারুইপুর মহকুমা আদালতে দাবি সাদ্দামের আইনজীবীর। যদিও বিচারক তাঁর কথায় পাত্তা না দিয়ে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। আদালতের নির্দেশে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতে সিপিএম নেতা মান্নান।
অথচ বারুইপুরের পুলিশ সুপার পলাশচন্দ্র ঢালি সাংবাদিক সম্মেলন করে নিশ্চিত করেছেন, শুধু নকল সোনার কারবার নয়, বাংলাদেশ থেকে দুষ্প্রাপ্য মূর্তি এনে বিক্রির অভিযোগ রয়েছে কুলতলির সাদ্দাম সর্দারের বিরুদ্ধে। সিপিএম নেতা মান্নান খানের আলঘর থেকে ‘এল চাপো’ সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সাদ্দামের কুকীর্তি ফাঁস বারুইপুরের পুলিশ সুপারের। কাটা চুলের ব্যবসা করতেন সাদ্দাম। সেই চুল বিক্রির জন্য ১২ লক্ষ টাকা তাঁকে দিয়েছিলেন নদিয়ার এক ব্যবসায়ী। সেই চুল সরবরাহ করা হয়নি। এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের হয়েছিল কুলতলি থানায়। সেই সূত্র ধরে ১৫ দিন যাবৎ সাদ্দামকে খুঁজছিল পুলিশ। খোঁজ পেয়ে ১৫ জুলাই পুলিশ অভিযান চালিয়ে সাদ্দামকে ধরতে গেলে এলাকার বহু মহিলা-পুরুষ বেরিয়ে এসে তাদের ঘিরে ধরে। সইরুল নামে এক যুবক বন্দুক বের করে ভয় দেখায়। সাদ্দামকে টেনে নিয়ে চলে যায়।
এর পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন সাদ্দাম। শেষ পর্যন্ত ঠাকুরানি নদী ঘেঁষা আলাঘর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাম নেতার মান্নান খানের আলাঘরেই লুকিয়ে ছিলেন। নকল সোনার মূর্তির বিক্রির পাশাপাশি কাটা চুল বিক্রির ব্যবসা ও একইসঙ্গে বাংলাদেশ থেকে দুষ্প্রাপ্য মূর্তি এনেও বিক্রিও করেন।