October 7, 2024

জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন পাহারা দিচ্ছিলেন ‘নাগরাজ’? পুরী জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডার ভর্তি অলঙ্কারসামগ্রী

0

পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডারের দরজা খুলল ৪৬ বছর পরে। ভিতরে কী কী রয়েছে। ৮০০ বছরের পুরনো মন্দিরের ভান্ডার থেকে বহু অলঙ্কার এবং রত্ন সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে মন্দির চত্বরেই অস্থায়ী ভাবে তৈরি একটি সুরক্ষিত প্রকাষ্ঠে। রত্নভান্ডারের ভিতরে দু’টি প্রকোষ্ঠ বা রত্নকক্ষ রয়েছে। একটি বাইরের কক্ষ। অন্যটি ভিতরের।

দু’টি কক্ষের ভিতরেই রয়েছে জগন্নাথ, বলভদ্র এবং সুভদ্রার অলঙ্কারসামগ্রী। বাইরের কক্ষটি থেকে যাবতীয় অলঙ্কার সিন্দুকে ভরে অস্থায়ী ‘ভল্টে’ রাখা হলেও ভিতরের কক্ষ থেকে প্রায় কিছুই বার করে আনা যায়নি। সময় পেরিয়ে যাওয়ার কারণেই মাঝপথে কাজ বন্ধ করতে হয়। তালা ভেঙে ভিতরের কক্ষটিতে প্রবেশ করা গিয়েছে। রত্নভান্ডারে প্রবেশাধিকার ১১ সদস্যের দলের প্রতিনিধির।

ওড়িশার রাজা অনঙ্গভীম দেব জগন্নাথদেবের অলঙ্কার তৈরির জন্য প্রায় দেড় হাজার কেজি সোনা দিয়েছিলেন মন্দির কর্তৃপক্ষকে। সোনা রত্নভান্ডারেই থাকার কথা। বাইরের প্রকোষ্ঠেই রয়েছে জগন্নাথের একটি সোনার মুকুট এবং তিনটি সোনার হরিদকণ্ঠী মালা। প্রত্যেকটি তৈরি হয়েছে ১২০ তোলা, অর্থাৎ ১৪০০ গ্রাম (প্রায় দেড় কেজি) সোনা দিয়ে। রত্নভান্ডারে রয়েছে জগন্নাথ এবং বলভদ্রের সোনার তৈরি শ্রীভুজ বা সোনার হাত।

এ ছাড়া রত্নভান্ডারে রয়েছে জগন্নাথ এবং বলভদ্রের সোনার তৈরি শ্রীভুজ বা সোনার হাত। রয়েছ জগন্নাথ এবং বলভদ্রের সোনার পা-ও। ভিতরের রত্নকক্ষে আছে ৭৪টি সোনার গহনা। প্রত্যেকটির ওজন কমপক্ষে ১ কেজি করে। রয়েছে সোনা, হিরে, প্রবাল, মুক্তো দিয়ে তৈরি ‘প্লেট’। ১৪০টি ভারী রূপার গহনাও রয়েছে মন্দিরের ভিতরের রত্নকক্ষে।

জগন্নাথের অলঙ্কারসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে সোনার তৈরি ময়ূরের পালক। কপালে পরার সোনার পট্টি। যার নাম চালুপাটি। জগন্নাথের সোনার কানের দুল শ্রীকুণ্ডল। সোনার কদম্ব মালা, সোনার চক্র, সোনার গদা, সোনার পদ্ম এবং সোনার শঙ্খ। রত্নখচিত সোনার তৃতীয় নয়নও রয়েছে জগন্নাথ এবং সুভদ্রার গহনার তালিকায়। সোনার পাতের তৈরি একটি চোখের মাঝে রয়েছে হিরে। অন্যটির মাঝে রয়েছে পান্না।

জগন্নাথ মন্দিরের রত্ন পাহারা দিচ্ছিলেন ‘নাগরাজ’? ৪৬ বছর পর পুরীর রত্নভাণ্ডার খোলা হয়। সেখানে প্রবেশ করে ওড়িশা সরকারের তৈরি ১১ জনের প্রতিনিধি দল। ওই দলের সভাপতি ওড়িশা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বনাথ রথ। চাবি না পেয়ে তালা ভাঙা হয় রত্নভান্ডারের ভিতরের কক্ষে প্রবেশের দরজার। সেখানে ঢোকেন ১১ সদস্যের কমিটি। প্রায় অর্ধশতক যে প্রকোষ্ঠ খোলা হয়নি সেখানে সাপখোপ থাকতে পারে, সেই সতর্কতায় ডাক পড়েছিল সর্প বিশেষজ্ঞদেরও। যদিও সেই বিপদ ঘটেনি। রত্নভাণ্ডার পর্যবেক্ষণ করে দেখেন ওড়িশা হাইকোর্টের বিচারপতি।

রত্নভাণ্ডারে সাপের অস্তিত্ব নিয়ে আমজনতার ধারণা ছিল, হয়তো ৪০ বছর ধরে বহুমূল্য রত্ন পাহারা দিয়েছেন নাগরাজ। বিচারপতি জানান, ভিতরে সাপ দেখা যায়নি। তাঁর কথায়, ‘‘রত্নভান্ডারে যে দলটি প্রবেশ করেছিল, সেখানে সাত-আট জন মন্দির কমিটির সদস্যও ছিলেন। বহুদা যাত্রা শুরু হয়েছে বলে তাঁরা ব্যস্ত ছিলেন। তাই আমরা ভাল করে খতিয়ে দেখে সব রত্ন সরানোর সময় পাইনি। বিগ্রহের অলঙ্কার, রত্ন সরানোর জন্য অন্য একটি দিন স্থির করা হয়েছে।’’

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed