October 5, 2024

শতবর্ষের ডার্বিতে গ্যালারি ভরল না!‌ মরশুমের প্রথম ডার্বির রং লাল হলুদ, টানা তিন ম্যাচে জয় অধরা মোহনবাগানের

0

ইস্টবেঙ্গল – ২ ( বিষ্ণু, জেসিন)
মোহনবাগান – ১ (সুহেল)

গ্যালারি প্রায় ফাঁকা। ৬০ হাজারের যুবভারতীতে হাজার দশেক সমর্থক। মোহনবাগানের তুলনায় সংখ্যা কিঞ্চিৎ বেশি ইস্টবেঙ্গলের। মাঠে দেবজিৎ মজুমদার, ডেভিড লালানসাঙ্গা, অভিষেক সূর্যবংশী, গ্লেন মার্টিন্সরা। কিন্তু দর্শক কই! শতবর্ষের ডার্বিকে উল্লেখযোগ্য করতে প্রথম ডার্বির‌ গোলদাতা নেপাল চক্রবর্তীর পরিবারকে আমন্ত্রণ জানায় আইএফএ। দর্শক টানতে ব্যর্থ বাংলার ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। কত সংখ্যক টিকিট বাজারে ছাড়া হয়েছিল, সেই বিষয়েও স্বচ্ছতার অভাব। কলকাতা লিগের শতবর্ষের ডার্বি বাংলার ফুটবলের জন্য লজ্জার একটি অধ্যায় হয়ে থাকল।

কলকাতা লিগের প্রথম ডার্বির অর্থাৎ শতবর্ষের ডার্বি ইস্টবেঙ্গলের।‌ লিগের প্রথম গোলদাতা নেপাল চক্রবর্তীর ছেলে দীপক চক্রবর্তী সাক্ষী থাকল লাল হলুদের জয়ের। মোহনবাগানকে ২-১ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল। গোলদাতা পিভি বিষ্ণু এবং জেসিন‌ টিকে। শেষ মিনিটে সুহেল‌ ভাটের গোল সবুজ মেরুনের। পাঁচ বছর পর ঘরোয়া লিগের ডার্বি খেলতে নেমেছিল দুই প্রধান। শেষবার কলকাতা লিগে ২০১৯ সেপ্টেম্বর মুখোমুখি হয় ইস্ট-মোহন। দাপুটে ফুটবল বিষ্ণু, জেসিন,‌ অমনদের। বিনো জর্জের দলের বিরুদ্ধেও কলকাতা লিগে জয়ের খাতা খুলতে পারল না মোহনবাগান। প্রথম দু’ম্যাচ ড্রয়ের পর ইস্টবেঙ্গলের কাছে হার। ম্যাচের সেরা বিষ্ণু। তিন ম্যাচে তিনটেই জয়। ৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ইস্টবেঙ্গল। ৪ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট সংগ্রহ করে একনম্বরে ভবানীপুর। অন্যদিকে তিন ম্যাচে মাত্র ২ পয়েন্ট মোহনবাগানের।

বিনো জর্জ প্রথম একাদশে রাখেন দেবজিৎ, ডেভিড, বিষ্ণু, হিরাকে। মোহনবাগানের প্রথম একাদশে ছিলেন অভিষেক সূর্যবংশী, গ্লেন মার্টিন্স, অমনদীপরা।‌ প্রথম থেকেই গোলের জন্য ইস্টবেঙ্গলের একাধিক সুযোগ তৈরি করেন বিষ্ণু। মোহনবাগান গোলকিপার রাজা বর্মনকে খুব বেশি পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি। নজর কাড়তে পারেনি গত কলকাতা লিগের নায়ক ডেভিড লালানসাঙ্গা। মহমেডানের জয়ের অন্যতম কান্ডারী ছিলেন। ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে ম্যাড়ম্যাড়ে অভিষেক। অন্যদিকে দেবজিতকেও কোনও পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি।

দ্বিতীয়ার্ধে তিনট পরিবর্তন। সায়ন, সার্থক, জেসিনকে নামান বিনো জর্জ। ম্যাচের ৫১ মিনিটে লাল হলুদকে এগিয়ে দেন বিষ্ণু। ম্যাচের ৬৪ মিনিটে ২-০ করেন জেসিন টিকে। শুক্রবার ঘরের মাঠে প্রাক ম্যাচ প্রস্তুতিতে ঝামেলার বিতর্কে জড়ানো জেসিন‌ এবং অমনের জুটিতে গোল। অমনের পাস থেকেই গোল করলেন জেসিন। সংযুক্তি সময়ের অন্তিমলগ্নে টাইসনের পাস থেকে গোল করেন সুহেল ভাট। গোলটা স্বান্তনা পুরস্কার মোহনবাগান।

মরশুমের প্রথম ডার্বি নিয়ে ইস্টবেঙ্গলের ডার্বি জয়ী কোচ বিনো জর্জ জানান গোল সংখ্যা না বাড়ার কোনও আক্ষেপ নেই। বিনো বলেন, ‘‌গোল হয়তো বাড়তে পারত। তবে না বাড়ার কোনও আক্ষেপ নেই। এটা ডার্বি। গোল করা সহজ নয়। সব ফুটবলার চাপে থাকে। জয়টাই বড়। মরশুমের শুরুতে ডার্বি জেতায় ছেলেদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে। বিষ্ণু ম্যাচের সেরা হলেও প্রচুর গোল মিস করেছেন। নয়তো হ্যাটট্রিক করতে পারতেন। এই প্রসঙ্গে বিনো বলেন, ‘বিষ্ণুর বয়স কম। সবে শুরু করেছে। প্রতিনিয়ত উন্নতি করছে। গোল মিস খেলারই অঙ্গ। আমরা কয়েকদিন হল প্র্যাকটিস শুরু করেছি। যত দিন যাবে, তত আরও ভাল ছন্দে চলে আসবে দল।’ লাল হলুদ জার্সিতে অভিষেকে ফিকে ডেভিড লালালসাঙ্গা। তবে সেই নিয়ে ভাবছেন না ইস্টবেঙ্গলের রিজার্ভ দলের কোচ। জানান, সবে প্রথম ম্যাচ। তাই এটা স্বাভাবিক। ডেভিডকে নিয়ে অত্যন্ত আশাবাদী বিনো। গ্যালারিতে বসে দলের জয় উপভোগ করেন ইস্টবেঙ্গলের হেড কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত।

আনোয়ার আলিকে নিয়ে তোলপাড় ময়দান। ইস্টবেঙ্গলের জার্সিতে কি দেখা যাবে? দেবব্রত সরকার বলেন, ‘‌এটা দিল্লি এফসি বনাম মোহনবাগানের বিষয়। ওরা বলতে পারবে। আমি কে এই বিষয়ে কথা বলার? লাল হলুদ জার্সিতে দেখা যাবে কিনা ভবিষ্যৎ বলবে।’‌ রেফারিং নিয়ে বিস্ফোরক ইস্টবেঙ্গলের শীর্ষকর্তা। দেবব্রত সরকার বলেন, ‘‌ম্যাচের নায়ক প্রাঞ্জল। আমাদের অনেকে আপত্তি করেছিল। ও বড় রেফারি। কিন্তু বড় ম্যাচের টেম্পারামেন্ট নিতে পারে না। ভবিষ্যতে ভাবতে হবে। আইএফএর সঙ্গে কথা বলব। দৃষ্টিকটু রেফারিং। হয়তো অক্ষমতা আছে। আমাদের দল ভাল খেলেছে। আরও ভাল খেলতে হবে। সবে তিনটে ম্যাচ হয়েছে। ডার্বি আর কদিন পরে হলে ভাল হত। তবে দল ধীরে ধীরে আরও উন্নতি করবে। এখান থেকে আমাদের সিনিয়র দলে ফুটবলার নিতে হবে।’‌ হারলেও দলের খেলা নিয়ে অখুশি নন মোহনবাগান কোচ দেগী কার্ডোজো।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed