কলকাতা পৌরনিগমে বর্ষাতি কেলেঙ্কারি- মুখ খুললেন মেয়র, দরপত্র ছাড়া ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২০৪০টি বর্ষাতি কেনায় গন্ডগোল
গত কয়েক বছর ধরে সরকারি প্রায় সমস্ত বিভাগের সঙ্গেই ‘কেলেঙ্কারি’ শব্দটা যুক্ত হয়ে পড়েছে – যার সূত্রপাত ঘটেছিল নিয়োগ দুর্নীতি দিয়ে। এবার শিশু দের জন্য কেনা ‘বর্ষাতি’ কেলেঙ্কারি সামনে। খবরে প্রকাশ, ২০১৮ সালে কলকাতা পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলির পড়ুয়াদের জন্য ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২ হাজার ৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়। বর্ষাতি কেনার এই প্রক্রিয়ায় পুর শিক্ষা বিভাগ নিয়ম-বহির্ভূত ভাবে এগোনোয় আপত্তি জানিয়েছিল পুর অর্থ বিভাগ। পুরসভা সূত্রের খবর, বর্ষাতি কেনার জন্য দরপত্র প্রক্রিয়ায় ‘ছাড়’ দেওয়ার আবেদন জানিয়ে মেয়রের কাছে ফাইল যায়। কিন্তু মেয়র ওই ফাইলের উপরে ‘নো’ লিখে জানান, এ ভাবে দরপত্র প্রক্রিয়া করা যাবে না। অভিযোগ, মেয়রের বারণ উপেক্ষা করেই পুর শিক্ষা বিভাগের তরফে দরপত্র ছাড়া ৭৩ লক্ষ ৮৩ হাজার টাকায় ২২০৪০টি বর্ষাতি কেনা হয়! সেই কেনাতেই বিস্তর গন্ডগোল সামনে এসেছে। পৌর নিগমের বার্ষিক অডিটে ধরা পড়েছে সেই বেনিয়ম।
অডিট রিপোর্ট সামনে আসতে নাগরিক মহলের চক্ষু চরকগাছ। বিরোধীরা অবশ্য বলছেন, এই সরকারের কাছ থেকে এটাই প্রত্যাশিত। বছরখানেক আগে পুরো বিষয়টি জানতে পেরে ক্ষুব্ধ মেয়র দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে তদানীন্তন পুর কমিশনার বিনোদ কুমারকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে কী পদ্ধতি অবলম্বন করা উচিত ছিল এবং তদানীন্তন পুর শিক্ষা বিভাগের আধিকারিকেরা কী পন্থা নিয়েছিলেন, সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে সাত সদস্যের তথ্য অনুসন্ধান কমিটি মেয়রের কাছে তা জমা দিয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে কমিটি জানিয়েছে, বর্ষাতি কেনার ক্ষেত্রে বড়সড় গরমিল রয়েছে। মেয়র বলেন, ‘‘কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে তদানীন্তন দুই আধিকারিকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। পুর বোর্ড দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। দুর্নীতি করেও যাঁরা পার পেয়ে যাবেন ভাবছেন, তাঁরা ভুল করছেন।” প্রশ্ন, সত্যিই কি দুর্নীতি করে সবাই শাস্তি পাচ্ছে?