October 3, 2024

মিউনিখে ফরাসি বিপ্লবের অবসান! দুরন্ত জামাল, ১২ বছর পর ইউরো ফাইনালে স্পেন

0

স্পেন-২(জামাল, ওলমো) ফ্রান্স-১(কোলো মুয়ানি)

ফরাসি বিপ্লবের অবসান মিউনিখে। দিদিয়ের দেশঁ ফুটবলার এবং কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জয়ী অথচ নজির গড়া হল না ইউরোয়। ‌মিউনিখে ফ্রান্সকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইউরো কাপের ফাইনালে স্পেন। এক গোলে পিছিয়ে পড়েও জোড়া গোলে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন। এক যুগ পরে ইউরো কাপের ফাইনালে স্পেন। ২০১২ সালে প্রথম ইউরো ফাইনালে ইতালিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল স্পেন। ছন্দে থাকা জামাল, ওলমোরা টানা ছয় ম্যাচ জিতে ফাইনালে। স্পেনকে বিশ্বকাপে চেনা ছন্দে না পাওয়া গেলেও ইউরোতে আবার বাজিমাত তিকিতাকার। লুইস ডি লা ফুয়েন্তের কোচিংয়ে ধরন কিছুটা বদলেছে। নাক ভাঙার পর এদিন প্রথম মাস্ক ছাড়া খেলা কিলিয়ান এমবাপের অ্যাসিস্ট থেকেই এগিয়ে যায় ফ্রান্স। কয়েকটা গোলের সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপে।

চলতি ইউরোয় সেরা ছন্দে স্পেনের সেমিফাইনালের ধারাবাহিকতা অব্যাহত। এক গোলে পিছিয়ে পড়েও বিরতিতে ২-১। চার মিনিটের ঝড়ে তছনছ ফরাসি বিপ্লব। দুরন্ত লামিনে জামাল। ইউরোর ইতিহাসে কনিষ্ঠতম ফুটবলার হিসেবে গোলের নজির গড়লেন। ম্যাচের ৯ মিনিটে এমবাপের ক্রস থেকে হেডে গোল করেন কোলো মুয়ানি। এই গোলই তাঁদের ‘ওয়েক আপ কল’ ছিল। ১২ মিনিটের মধ্যে সমতা ফেরায় স্পেন। ম্যাচের ২১ মিনিটে ১-১। দুর্দান্ত গোল লামিনে জামালের। কনিষ্ঠতম ফুটবলার হিসেবে পেলের রেকর্ড ভেঙে মেজর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে খেলার নজির। এবার গোল করে রেকর্ডবুকে নাম তুললেন। ইউরোর ইতিহাসে কনিষ্ঠতম গোলদাতা। বক্সের বাইরে থেকে তাঁর দূরপাল্লার কোনাকুনি শট পোস্টে লেগে গোলে ঢুকে যায়। কিছু করার ছিল না ফরাসি কিপার মাইগনানের। ম্যাচের ৩ মিনিটে প্রথম সুযোগ স্পেনের। জামালের পাস থেকে ফ্যাবিয়ান রুইজের হেড ক্রসপিসের ওপর দিয়ে ভেসে যায়। এই পর্যায়ে এরকম গোল মিস ক্ষমাহীন অপরাধ। অবশ্য তার খেসারত দিতে হয়নি স্পেনকে। ৪ মিনিটে জোড়া গোল। সমতা ফেরানোর চার মিনিটের মধ্যে ২-১।

নাভাসের ক্রস হেড করে নামান সালিবা। ওলমো বাঁ পায়ে রিসিভ করে ডান পায়ে বল নিয়ে চৌয়ামেনিকে কাটিয়ে গোল লক্ষ্য করে গড়ানো শট নেয়। কুন্ডের পায়ে লেগে বল জালে জড়িয়ে যায়। প্রথমে আত্মঘাতী গোল দেওয়া হয়। পরে সেটা বদলে দানি ওলমোকে দেওয়া হয়। কারণ তাঁর শট গোলমুখী ছিল। কুন্ডের পায়ে না লাগলেও বল গোলেই যেত। ম্যাচের শুরু থেকেই বল ধরে পজেশনাল ফুটবল খেলে স্পেন। ফ্রান্সের গোলটা ছাড়া প্রথমার্ধে কোনও উল্লেখযোগ্য সুযোগ নেই। একবার গতি বাড়িয়ে বক্সে ঢুকে পড়া এমবাপের শট বিপক্ষের পায়ের জঙ্গলে আটকে যায়। ম্যাচের ৩৫ মিনিটে রুইজের শট বিপক্ষের ফুটবলারের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। ম্যাচের ৪১ মিনিটে জামালের শট হার্নান্দেজের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়।

ফ্রান্স দলে তিনটে পরিবর্তন হয়। দলে ফেরেন কন্তে, ডেম্বেলে এবং ব়্যাবিও। কার্ড এবং চোটের জন্য স্পেনেও তিনটে বদল, রক্ষণে দুটো। চোটের জন্য ৫৭ মিনিটে নাভাসকে তুলে নিতে বাধ্য হন স্পেনের কোচ। ৬২ মিনিটে কোলো মুয়ানি, ব়্যাবিয়ো এবং কন্তের বদলে গ্রিজম্যান, বারকোলা এবং কামাভিগনাকে নামান দেশঁ‌। এমবাপে বক্সের ভেতর বল পেলেই তাঁকে তিন-চারজন ঘিরে ধরছিল। ম্যাচের ৭৬ মিনিটে গোলের সুযোগ এসেছিল ফ্রান্সের সামনে। কিন্তু বক্সের ওপর দিয়ে ভাসিয়ে দেন হার্নান্দেজ। ৭৯ মিনিটে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ গোলদাতা অলিভার জিরুকে নামান মরিয়া দেশঁ। বয়সভিত্তিক দলকে সাফল্য দেওয়ার পর, এবার স্পেনের জাতীয় দলকে ইউরো কাপের ফাইনালে তোলেন ফুয়েন্তে। ম্যাচের ৮৬ মিনিটে এমবাপের মিস। স্প্যানিশ ডিফেন্ডারদের কাটিয়ে বক্সে ঢুকে পড়লেও গোলে রাখতে পারেননি। ফ্রান্সের অধিনায়কের শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। শেষ মিনিটে গ্রিজম্যানের হেড বাইরে যায়। চোখের জলে মাঠ ছাড়েন ফ্রান্সের সমর্থকরা। যোগ্যো দল হিসেবেই ফাইনালে স্পেন।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed