ব্রিটেন জয় লেবার পার্টির লাল ঝড়ে ৪০০ পার! প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টার্মার স্থলাভিষিক্ত হলেন ঋষি সুনক বিপর্যয়ে

নজর ব্রিটেনে। সরকারে পালাবদল। মসনদ হারা কনজারভেটিভ পার্টি অর্থাৎ টোরি। পালাবদলের দিকেই পাল্লা ভারী। ১৪ বছর পর আবারও ব্রিটেনের মসনদে লেবার পার্টি। ৪০০-এর বেশি আসন পেল। ২০০১ সালের পর কোনও দল ৪০০-র গণ্ডি পেরলো ব্রিটেনে। ১৯৪৫ সালের পর এই প্রথম বার জুলাই মাসে ভোট হল ব্রিটেনে। নির্বাচনে মোট ৪৫১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় (ভারতে দুপুর সাড়ে ১২টা) থেকে ভোটগ্রহণ রাত ১০টা পর্যন্ত। গণনায় ৪০০ বেশি আসন জিতে ব্রিটেন জয় লেবার পার্টির। প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল, লেবার পার্টি ও কনজারভেটিভ পার্টির (টোরি)। লেবার পার্টির নেতৃত্বে ছিলেন কায়ের স্টার্মার আর কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বে সুনক। সুনককে আর প্রধানমন্ত্রী চাইছেন না ব্রিটেনবাসী। ভারতীয় বংশোদ্ভূত সুনকের উপর আস্থা হারিয়েছেন। ২০১৯ সালে ভোটে লেবার পার্টি আশা জাগালেও ব্রিটেনবাসী কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষেই রায় দিয়েছিলেন। সে বার কনজারভেটিভ পার্টি পায় ৩৬৫টি আসন। লেবার পার্টি ২০৩টি আসন। ‘গেট ব্রেক্সিট ডান’ স্লোগানে ভর করে ব্রিটেন জয় করেছিল। প্রধানমন্ত্রী হন বরিস জনসন। ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সরকারি বাসভবনে আড়াই বছর। ২০২২ সালে জুলাই মাসে প্রধানমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তার পর লিজ ট্রাসের ৪৯ দিনের প্রধানমন্ত্রিত্ব পর্বের শেষে দেশের প্রধানমন্ত্রী হন ঋষি।
‘আজ থেকে পরিবর্তন শুরু হল’, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হয়েই বললেন লেবার পার্টির নেতা স্টার্মার, দু’বছর পর জাতীয় নির্বাচনের মুখোমুখি হতে হয় ঋষিকে। টানা ১৪ বছর ক্ষমতায় থাকা কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ছিল ‘প্রতিষ্ঠানবিরোধী ক্ষোভ’। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল অর্থনীতি, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং অভিবাসন। ব্রেক্সিট–পরবর্তী সময় থেকে ভঙ্গুর অর্থনীতি, জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি, অভিবাসন সমস্যা-সহ সাম্প্রতিক সময়ে অপরাধের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় ব্রিটেনের জনগণ বিরক্ত ছিল ঋষি সুনকের সরকারের বিরুদ্ধে। সেটাই ভোটবাক্সে প্রভাব ফেলল। লিবারেল ডেমোক্র্যাটরা এ বারের ভোটে ভাল ফল করল। গত বার তারা মাত্র ১১টি আসন পেয়েছিল। ২০২৪ সালে সেই দলই ৭০-এর বেশি আসন জিতল। নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন কট্টরপন্থী দল রিফর্ম ইউকে-ও নতুন দল হিসাবে চারটি আসন জেতে। ঋষির স্থলাভিষিক্ত স্টার্মার। ভোটের ফল স্পষ্ট হতেই সুনক অভিনন্দন জানান তাঁর উত্তরসূরি হতে যাওয়া স্টার্মারকে। প্রথা মেনে বাকিংহাম প্রাসাদে গিয়ে রাজা তৃতীয় চার্লসকে ভোটের ফলাফল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেন সুনক। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে ফিরে বিদায়ী বক্তৃতা। বাকিংহাম প্রাসাদে গিয়ে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করে আসেন স্টার্মার। সরকার গড়ার ব্যাপারে কথা বলে ডাউনিং স্ট্রিটের সেই ‘১০’ লেখা কালো দরজার সামনে বক্তৃতায় পেশায় আইনজীবী লেবার নেতা বলেন, ‘‘আজ থেকেই পরিবর্তনের পালা শুরু হল দেশে।’’