হাওড়ার মাছবাজারে চিত্র প্রদর্শনী! রুই-কাতলা-ইলিশ-বাটার আড়তে হিরণ মিত্রের আঁকা ছবি


হাওড়ার মাছবাজারে শিল্পী হিরণ মিত্রের একক চিত্র প্রদর্শনী হতে চলেছে চলতি মাসে। চিত্র প্রদর্শনী হয় শীতাতাপ নিয়ন্ত্রিত গ্যালারিতে। শহরতলির মাছবাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সামনে নিজের আঁকা ছবির প্রদর্শনীর আয়োজন করছেন শিল্পী হিরণ। ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর এবং ২০২৪ সালের ১ জানুয়ারি হাওড়ার কালীবাবুর বাজারে একটি প্রদর্শনী করেছিলেন হিরণ। আগে থেকেই তৈরি ছবি থেকে বাছাই ২০টি নিয়ে সাজিয়েছিলেন মাছবাজার। এ বার তেমন নয়। হিরণ জানিয়েছেন, এই প্রদর্শনীর পরিবেশ মাথায় রেখেই তিনি নতুন ৩১টি ছবি এঁকেছেন। ‘আর্ট ইন এভরিওয়ান’ নামক প্রদর্শনীতে ছবি থাকবে মাছবিক্রেতাদের সাজানো পসরার ঠিক উপরে। মেঝেতে রুই, কাতলা, ইলিশ, বাটা থাকবে। তার ঠিক উপরেই ঝুলবে ক্যানভাস। শিল্পী জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী ছবি জায়গা পাবে প্রদর্শনীতে। যার সৃষ্টি হয়েছে মাছবাজারের কোলাহলের কথা ভাবনায় রেখেই। হিরণ বলেন, ‘‘প্রচলিত যে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা, তাকে ধাক্কা দিতেই আমার এই পরিকল্পনা। ছবিকে এলিট শ্রেণির ঘেরাটোপ থেকে একেবারে সাধারণের কাছে নিয়ে আসতে চাই। আমি মনে করি, সব শ্রেণিকে সঙ্গে নিয়েই শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। সেই কারণেই মাছবাজারকে বেছে নেওয়া।’’

হাওড়া ময়দানের কাছেই আড়াইশো বছরের পুরানো কালীবাবুর বাজার। স্থানীয় জমিদার বংশের কালীনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বাজারটি তৈরি করেছিলেন। ভিতরে গৃহস্থালির সামগ্রী থেকে সব্জি বা মাছ সবেরই আলাদা আলাদা বাজার রয়েছে। ১৩১ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন। ‘কালীবাবুর বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি’ তৈরি হয় ১৮৯১ সালে। শতাব্দীপ্রাচীন সেই সমিতিই এই প্রদর্শনী আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা। সমিতির সম্পাদক রতিকান্ত বর বলেন, ‘‘আমরা এই প্রদর্শনীর আয়োজন করতে পেরে খুব আনন্দিত। বাইরের লোকেরা আমাদের বাজারে আসবেন। যাঁরা ছবি বোঝেন, তাঁরা নানা কথা বলবেন। সে সব আমরা শুনব।’’রতিকান্ত জানান, হাওড়ার একটি নাট্যসংস্থার মাধ্যমেই হিরণ ও মাছবাজারের যোগাযোগ। প্রস্তাব শুনে রাজি হয়ে যায় মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতি। তবে আগের বার তাড়াহুড়োর মধ্যে হয়েছিল বলে সে ভাবে আয়োজন করা যায়নি। ৯ থেকে ১১ জুলাই দুপুর বাদ দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বাজারের সঙ্গে প্রদর্শনী চলবে। সন্ধ্যায় যে হেতু বাজারে বেশি ভিড় থাকে না আর অল্প দোকান খোলে, তাই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় নাটক, কবিতা পাঠ, গান হবে। কয়েকটি ছোট পত্রিকার স্টলও বসতে পারে। প্যালেস্তাইন পরিস্থিতি নিয়েও একটি নাটিকা হবে।