তাজিম্মুলকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজত আদালতের, গুলি চালিয়ে বাম নেতাকে খুনকাণ্ডেও গ্রেফতার হন ‘জেসিবি’!
রাজনৈতিক চাপানউতর। এর পরেই তাজিমুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ইসলামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। অতীতেও একাধিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত তাজিমুল। শুধুমাত্র শাসকদলের নেতা হওয়ায় প্রতি বার ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন। সিপিএমের দাবি, গত পঞ্চায়েত ভোটের সময় তাদের মিছিলে গুলি ছোড়ার ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত তাজিমুলই। পুলিশ গ্রেফতারও করেছিল। দিন পনেরোর মধ্যেই ছাড়া পেয়েছিলেন জেসিবি। উত্তর দিনাজপুরে কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি মাসিরুদ্দিন বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে চোপড়ায় জোটের মিছিলে গুলি চালিয়েছিল তাজিমুলই। ও-ই সামনে দাঁড়িয়ে গুলি চালিয়েছিল। এক সিপিএম নেতা মারা গিয়েছিলেন। অনেকে জখম হয়েছিলেন।’’ গুলিকাণ্ডে যে তাজিমুল গ্রেফতার হয়েছিলেন, তা স্বীকার করেছেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইলাল আগরওয়াল। পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নের শেষ দিনে মিছিল করে মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছিলেন বাম ও কংগ্রেস জোটের প্রার্থীরা। সেই মিছিলে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। জোটের দাবি ছিল, ওই ঘটনাতেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন মনসুর নইমুল নামে এক সিপিএম কর্মী।
চোপড়ার ঘটনায় গ্রেফতার তৃণমূল নেতা তাজিমুল ইসলাম। পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজত দিল আদালত। তাজিমুল ওরফে জেসিবিকে ইসলামপুরের আদালতে পেশ করে চোপড়া থানার পুলিশ। আদালতে তাজিমুলের ১০ দিনের হেফাজত চায়। ইসলামপুরের পুলিশ সুপার জবি থমাস কে জানান, তাজিমুলকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পাঁচ দিন পরে আবার আদালতে তোলা হবে। তাজিমুলের বিরুদ্ধে দু’টি জামিনঅযোগ্য এবং তিনটি জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করেছে পুলিশ। চোপড়া থানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করার আগে এবং পরে স্বতঃপ্রণোদিত ওই মামলা গুলি দায়ের করা হয় চোপড়া থানার পুলিশের তরফে। পুলিশ সূত্রে খবর, চোপড়ার ঘটনায় জেসিবির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির পাঁচটি ধারায় মামলা করা হয়েছে। রবিবার স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ওই মামলাগুলি দায়ের করে পুলিশ (সোমবার থেকে দেশে নতুন ফৌজদারি আইন চালু হয়েছে। কিন্তু রবিবার সেই আইন চালু না হওয়ায় ভারতীয় দণ্ডবিধি মেনেই দায়ের করা হয় মামলা)। পুলিশ সূত্রে খবর, জেসিবির বিরুদ্ধে, জামিন অযোগ্য ৩৫৪ ধারায় খুনের চেষ্টার মামলা দায়ের করা হয়েছে। যার সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। ৩০৭ ধারায় মহিলার শ্লীলতাহানি এবং তাঁর উপর বলপ্রয়োগের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এটিও জামিন অযোগ্য ধারা। যার সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের কারাদণ্ড। এ ছাড়া ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩২৩, ৩২৫ এবং ৩৪ ধারাতেও মামলা হয়েছে জেসিবির বিরুদ্ধে।