October 3, 2024

কুড়ি-‌বিশ ক্রিকেটে চ্যালেঞ্জ নিতে ব্যর্থ প্রোটিয়ারা, বিরাট-অক্ষরের যুগলবন্দিতে বিশ্বজয় ভারতের

0

বিরাট কোহলির গোটা বিশ্বকাপে ব্যর্থ। ফাইনালে জ্বলে উঠলেন। বিরাট অর্ধশতরানে ভর করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে কঠিন চ্যালেঞ্জ দেয় ভারত। ৫৯ বলে ৭৬ করে আউট হন কোহলি। ৩৪ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর বিরাট কোহলি-অক্ষর প্যাটেলের ব্যাটে ভর করে দুর্দান্ত কামব্যাক। ২০ ওভারের শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ভারতের রান ১৭৬। জয়ের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজন ১৭৭ রান। কোহলিকে ওপেন করানো নিয়ে বিতর্কের ঝড় বইছিল। সমালোচকদের মুখ বন্ধ করে দিলেন। সত্যিই, ফাইনালের জন্য সেরাটা তুলে রেখেছিলেন বিরাট। চলতি বিশ্বকাপে শুরু থেকেই আগ্রাসী মনোভাব দেখাতে গিয়ে আউট হচ্ছিলেন। কিন্তু এদিন শুরুতে ৩ উইকেট হারানোর পর, পুরোনো কোহলিকে দেখা যায়। পুরো দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন। চতুর্থ উইকেটে ৭২ রান যোগ করেন বিরাট এবং অক্ষর। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট।

টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন রোহিত শর্মা। খুবই স্বাভাবিক। হাই-প্রোফাইল ফাইনালে প্রথমে ব্যাট করে বিপক্ষের ঘাড়ে রান চাপিয়ে দেওয়াই সাধারণত দলগুলোর লক্ষ্য হয়। তারওপর প্রথম ব্যাট করে বেশি সফল ভারত। টি-২০ বিশ্বকাপের ইতিহাসে টসে হারার পর মাত্র একবার ম্যাচ জেতার নজির রয়েছে। ২০০৯ সালে শহিদ আফ্রিদির নেতৃত্বে জেতে পাকিস্তান। বাকি সংস্করণে টসে জয়ী দলই চ্যাম্পিয়ন হয়। এদিন শুরুটা ভাল করে ভারত। বিশেষ করে বিরাট কোহলি। প্রথম ওভারেই তিনটে কপিবুক চার। নিজের ইনিংসের প্রথম দুটো বলে চার। দেখে মনেই হয়েছিল, রান পাবেন। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডকে হারানোর পর রোহিত জানিয়েছিলেন, ফাইনালের জন্য নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছেন বিরাট। হলও তাই। শুরুতে তিন উইকেট হারানোর পর দলকে একাই এগিয়ে নিয়ে গেলেন ‘ভিন্টেজ’ কোহলি। দ্বিতীয় ওভারে হোঁচট খায় ভারত। কেশব মহারাজের ওভারে জোড়া উইকেট হারায় ভারত। মারতে গিয়ে ৯ রানে ক্লাসেনের হাতে ধরা পড়েন রোহিত। ভারতের কাছে বড় ধাক্কা। ভারতীয় ব্যাটারদের মধ্যে সবচেয়ে ছন্দে ছিলেন রোহিত। মাত্র এক বলের ব্যবধানে ফেরেন ঋষভ পন্থ। দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দেন। দ্বিতীয় বলে সুইপ মারতে গিয়ে আউট হন। ২৩ রানে ২ উইকেট হারায় ভারত। উইকেট ছুড়ে দেন সূর্যকুমার যাদব। আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করতে গিয়ে প্রথম তিনটে উইকেট দক্ষিণ আফ্রিকাকে উপহার দেয় ভারত। এত তাড়াহুড়ো করার কোনও প্রয়োজন ছিল না। ছয় মারতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে ক্লাসেনের হাতে ধরা পড়েন সূর্য (৩)। দুর্দান্ত ক্যাচ। দারুণ ফিল্ডিং করে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪.৩ ওভারের মধ্যে তিন উইকেট হারানোয় চাপে পড়ে যায় ভারত।

পার্টনারশিপ গড়ে তোলার জন্য পাঠানো হয় অক্ষর প্যাটেলকে। অনবদ্য ব্যাটিং ভারতীয় অলরাউন্ডারের। উইকেটের এক প্রান্ত ধরে রাখেন বিরাট, অন্যদিকে স্কোরবোর্ড সকল রাখেন অক্ষর। চারটে ছক্কা হাঁকান। দারুণ ব্যাট করছিলেন। অর্ধশতরান পাওয়া উচিত ছিল। কিন্তু নিজের ভুলে রান আউট হন। ৩১ বলে ৪৭ রান করে ফেরেন অক্ষর। ছয় নম্বরে নেমে চটজলদি ২৭ রান করেন শিবম দুবে। বরাবরই বড় মঞ্চে জাত চেনায় সেরা ক্রিকেটাররা। এদিন আরও একবার সেটা করে দেখালেন বিরাট কোহলি। তিনটে চার মেরে শুরু করেছিলেন। রোহিত আউট হওয়ার পর খোলসের মধ্যে ঢুকে পড়েন। লক্ষ্য ছিল শেষপর্যন্ত টিকে থাকা। তাই কোনও অহেতুক ঝুঁকি নেননি। ইনিংস অ্যাঙ্কর করেন। ৪৮ বলে অর্ধশতরান সম্পূর্ণ করেন। ইনিংসে ছিল চারটি চার। ৫০ এর গণ্ডি পেরোনোর পর হাত খোলেন। তখনও বাকি ৩ ওভার। শেষপর্যন্ত ৫৯ বলে ৭৬ রান করে আউট হন কোহলি। ইনিংসে ছিল ২টি ছয়, ৬টি চার। জসপ্রীত বুমরা, অর্শদীপ সিং, হার্দিক পাণ্ডিয়া দুটি করে উইকেট নেন। অক্সর প্যাটেল একটি উইকেট নেন। ভারত জিতল ৭ রানে। বিরাটের চওড়া ব্যাটে ভর করে বিশ্বজয় টিম ইন্ডিয়ার।

About The Author

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed