উরুতে জড়িয়ে সোনা পাচার সুন্দরী অভিনেত্রীর। রানিয়া গোপন স্থানে লুকিয়ে রেখেছিলেন অনেক সোনা। সোনা পাচারের অভিযোগে ধৃত কন্নড় অভিনেত্রী রানিয়া রাও আপাতত জেলবন্দি। ১৪ কিলো সোনা উরুতে পেঁচিয়ে, বিমানবন্দরের গ্রিন চ্যানেল দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। এই গ্রীন চ্যানেলে কোনও যাত্রী হাজির হলে শুল্ক বিভাগের কাছে কিছুই ঘোষণা করার মতো কিছু থাকে না। কন্নড় চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রানিয়া রাওয়ের সোনা পাচার মামলার তদন্তে একাধিক চমকপ্রদ তথ্য উঠে আসছে। লাভেলে রোডে অভিনেত্রীর বাড়িতে তল্লাশি করে এরপর বিপুল নগদ টাকা ও রসিদবিহীন সোনার হদিশ পায় পুলিশ। স্বাভাবিক ভাবেই বিপাকে অভিনেত্রী।
রিপোর্ট, রানিয়া রাও ডিআরআই তদন্তকারীদের জানিয়েছিলেন তার কাছে মোট ১৭টি সোনার বার ছিল। দুবাইসহ ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিও ভ্রমণ করেছেন। প্রতি ভ্রমণ থেকে তিনি প্রায় ১২ লক্ষ টাকা আয় করতেন। এই মামলায় এখনও পর্যন্ত বাজেয়াপ্ত মোট ১৭.২৯ কোটির সম্পত্তি। ডিআরআই আধিকারিকদের কথায়, বিমানবন্দরে ৩৪ বছর বয়সী অভিনেত্রীর কাছ থেকে ১২.৫৬ কোটি টাকার সোনার বার বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ২.০৬ কোটি টাকার সোনার গয়না এবং মোট ২.৬৭ কোটি টাকার ভারতীয় মুদ্রা উদ্ধার। আদালত রানিয়ার জামিন আবেদনের রায় স্থগিত রেখেছে। ডিআরআই রিপোর্ট অনুযায়ী মামলাকে জাতীয় নিরাপত্তার সাথে জড়িত বলে উল্লেখ এবং রাওয়ের হেফাজতের দাবি।
অভিনেত্রী নিজের উরুতে টেপ এবং ব্যান্ডেজের সাহায্যে ১৪টি সোনার বার পেঁচিয়ে পা রাখেন ভারতে। লুকানোর জন্য প্যান্ট পরেছিলেন। সোনা পাচারের জন্য রানিয়া বিশেষ ভাবে পোশাক তৈরি করাতেন। সহজেই নজর এড়িয়ে সোনা পাচার করার জন্য বেশ কয়েকটি জ্যাকেট বানিয়েছিলেন। বিশেষ ভাবে তৈরি রিস্ট বেল্ট ছিল, যাতে করে সোনা পাচার করতেন। গত ১ বছরে রানিয়া ৩০ বার দুবাই গিয়েছেন। ঘনঘন দুবাই ভ্রমণের জেরে ডিরেক্টরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের সন্দেহ। ‘মাণিক্য’(২০১৪) সিনেমাতে কন্নড় সুপারস্টার সুদীপের বিপরীতে অভিনয় করার জন্য পরিচিত রানিয়া রাও। কয়েকটি দক্ষিণী চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। ১০১৬ সালে তামিল সিনেমা ‘ওয়াঘা’ এবং ২০১৭ সালের কন্নড় সিনেমা ‘পটাকি’ আছে। রানিয়া রাও হলেন আইপিএস অফিসার কে রামচন্দ্র রাওয়ের সৎ মেয়ে। রামচন্দ্র বর্তমানে কর্ণাটক স্টেট পুলিশ হাউজিং কর্পোরেশনের ডিরেক্টর জেনারেল।
আইনজীবীর কাছে নিজে মানসিক অবসাদে ভুগছেন বলে জানান। গ্রেপ্তারির স্মৃতি তাড়া করে বেড়াচ্ছে দুঃস্বপ্নের মতো। ১৪ কেজিরও বেশি ২৪ ক্যারেট সোনা উদ্ধার অভিনেত্রীর কাছ থেকে। মূল্য ১ কোটি টাকারও বেশি। বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় ২ কোটি ৬৭ লক্ষ টাকা এবং ২ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সোনা। টাকা ও সোনার কোনও রসিদ বা উৎসের প্রমান দিতে ব্যর্থ রানিয়া। দুবাইয়ের শুল্ক দপ্তর জানায় গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে অভিনেত্রী দুবাই থেকে সোনা কিনে বলেছিলেন, সোনা নিয়ে জেনেভায় যেতে চান। অথচ, সোনা নিয়ে তিনি ভারতেই ফিরেছিলেন। দুবাই ভ্রমণ ইতিহাস থেকে পুলিশ নিশ্চিত, সোনা পাচারের কাজেই ৩০ বার দুবাই যেতে হয়েছিল কন্নড় অভিনেত্রীকে। তদন্তকারীদের দাবি, তদন্তে সহযোগিতা না করার কারণে হেফাজতে রাখা। নচেৎ প্রমাণ নষ্টের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে দাবি পুলিশের। জামিন পাওয়াও বেশ কঠিন। অভিনেত্রীর বিয়ের ভিডিও খতিয়ে দেখে নজর রাখা হচ্ছে অতিথিদের তালিকার দিকেও। সোনা চোরাচালান চক্রের সদস্য বা আরও বড় চক্রান্তের হদিশ মেলার সম্ভাবনাও প্রবল বলে মনে করছে পুলিশ ও তদন্তকারীরা।