ফেভারিট রোহিত শর্মার দল? রবিবাসরীয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল দুবাইয়ে। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের শিরোপা জয়ের লড়াই। এদিকে চোট পেয়ে অনিশ্চিত নিউজিল্যান্ড পেসার। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে ফিল্ডিংএ চোট পাওয়া কিউয়ি পেসারের হেনরির খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা। হেনরিখ ক্লাসেনের ক্যাচ নিয়ে মাটিতে বিপজ্জনক ভাবে পড়ে চোট পেয়ে হেনরি মাঠেই ছটফট করতে থাকেন। ফিজিয়োর চিকিৎসার পরও অস্বস্তি, মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয়। ১০ ওভারের বদলে সাত ওভার বল করে ৪২ রান দিয়ে দু’টি উইকেট নেন। নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার বলেন, “ম্যাট হেনরির কাঁধের অবস্থা কেমন সেটা জানতে আরও অপেক্ষা করতে হবে। কাঁধ বেশ ফুলে আছে। অন্তত দু’দিন অপেক্ষা করতে হবে।” ভারতের বিরুদ্ধে নিউজিল্যান্ডের সফলতম বোলার হেনরিই ৪২ রানে ভারতের পাঁচ ব্যাটারকে আউট করে ক্রিকেটজীবনের সেরা বোলিং ফিগার। হেনরি না খেললে সুবিধা রোহিত শর্মাদের।
ভারত সব ম্যাচ দুবাইয়ে খেলার কারণে মাঠ সম্পর্কে অভিজ্ঞতা অনেকটাই। রাচিন রবীন্দ্র ভারতকে টেক্কা দিতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। দ্রুত মাঠ এবং পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কথাও বলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের জয়ে রচিন রবীন্দ্র ওপেন করতে নেমে দুরন্ত শতরানের ইনিংস খেলেন। রাচিন রবীন্দ্র এবং কেন উইলিয়ামসনের জোড়া সেঞ্চুরির সুবাদে ফাইনালে কিউইরা। নিউজিল্যান্ড সব ম্যাচ পাকিস্তানে খেলে ভারতের বিরুদ্ধে গ্রুপ-পর্যায়ের ম্যাচটি দুবাইয়ে খেলে।
গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে মাত্র ৬ রান করে হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ক্যাচ আউট হন রাচিন। ফাইনালে বড় স্কোর করতে মরিয়া কিউয়ি তারকা।
ফাইনালে সবার চোখ বিরাট কোহলির দিকেই। ফর্মে ফিরেছেন কিং কোহলি। ৩৬ বছর বয়স। কোহলি এখনও মাঠে কিশোরের মতোই তরতাজা। ফিল্ডিং থেকে শুরু করে পিচের মাঝে দৌড়, সবেতেই বাকিদের সামনে উদাহরণ। কোহলি জানিয়েছেন, তাঁর একমাত্র লক্ষ্য থাকে দলকে জেতানো। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে যান। পরিশ্রম করেছেন। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে শতরান। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেও ম্যাচ জেতানো ইনিংস। বিরাটের উপর ভরসায় ভারত। ফাইনালেও এই খেলা আশা করছেন প্রত্যেকেই। কোহলি অবশ্য সে সব ভাবছেন না। তিনি মাঠে নামতে ভালবাসেন। ক্রিকেট খেলতে ভালবাসেন। ব্যাট করতে ভালবাসেন। রবিবাসরীয় ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আরও এক বার করে দেখাতে সচেষ্ট কোহলি। ভারতীয় ব্যাটার বিরাটের কথায়, “কেরিয়ারের এই পর্যায়ে এসেও প্রতিটা ম্যাচের আগে একই রকম উত্তেজিত।
ফের চোকার্স প্রোটিয়ারা। চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফির ফাইনালে নিউজিল্যান্ড। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। লাল বলে ঘরের মাটিতে ০-৩ হারের বদলা সাদা বলে নেওয়ার সুযোগ রোহিত শর্মাদের সামনে। গত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে হারের বদলা নেওয়ার লড়াইয়ে গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে হারিয়েছেন রোহিতেরা। সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে গত এক দিনের বিশ্বকাপের ফাইনালের বদলা। ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের কাছে ০-৩ ব্যবধানে টেস্ট সিরিজ়ে হারের বদলা নেওয়ার সুযোগ রোহিতদের সামনে। প্রথম টেস্ট বিশ্বকাপ ফাইনালেও নিউজিল্যান্ডের কাছে হারতে হয়েছিল ভারতকে। রবি ফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারালেই একসঙ্গে জোড়া হারের বদলা নিতে সক্ষম হবে টিম ইন্ডিয়া।
নিউজিল্যান্ড: ৩৬২/৬ (রাচীন ১০৮, উইলিয়ামসন ১০২, এনগিডি ৩/৭২)
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩১২/৯ (মিলার ১০০*, ভ্যান ডার ডুসেন ৬৯, স্যান্টনার ৩/৪৩)
৫০ রানে জয়ী নিউজিল্যান্ড
কেন উইলিয়ামসন এবং রাচীন রবীন্দ্রর জোড়া সেঞ্চুরি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে নিউজিল্যান্ড। রানের পাহাড়ে কিউয়ি ব্রিগেড। হারল দক্ষিণ আফ্রিকা। ডেভিড মিলারের চেষ্টা। ফাইনালে যাওয়া হল না প্রোটিয়া বাহিনীর। চোকার্স দক্ষিন আফ্রিকা। আইসিসি টুর্নামেন্ট ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-২০ বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি প্রত্যেক টুর্নামেন্টে দাপট সত্ত্বেও হার প্রোটিয়া ব্রিগেডের। ট্রফি জয়ের স্বপ্ন অধরা। পুনরাবৃত্তি বুধের লাহোরেও।
টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক মিচেল স্যান্টনার। আউট ফর্মে থাকা ওপেনার উইল ইয়ং। রাচীন এবং উইলিয়ামসনের ১৬৪ রানের জুটি। দুজনের ব্যাট থেকেই আসে সেঞ্চুরি। ওপেন করতে নেমে রাচীনের সেঞ্চুরি ৯৩ বলে। ১০১ বলে ১০৮ রান করে আউট। উইলিয়ামসন বাউন্ডারি মেরে সেঞ্চুরি পূরণ করেন ৯১ বলে। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৩৬২ রান কিউয়েদের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এক ইনিংসে সর্বোচ্চ স্কোর।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দু’টি শতরান করার নজির রাচিন রবীন্দ্রর। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শতরান। সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শতরান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দু’টি শতরান রাচিনের। এর আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় একই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দু’টি শতরান করেছিলেন। একই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একাধিক শতরান করার নজির ছিল সাত ব্যাটারের। যোগ হল রাচিনের নাম। ২০০০ সালে সৌরভ একই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দু’টি শতরান করেছিলেন। ২০১৫ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে শিখর ধাওয়ান। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একাধিক শতরান করেছিলেন ক্রিস গেল ২০০৬ সালে, সৈয়দ আনওয়ার ২০০০ সালে, হার্শেল গিবস ২০০২ সালে, উপুল থরঙ্গা ২০০৬ সালে এবং শেন ওয়াটসন ২০০৯ সালে। ১০১ বলে ১০৮ রানের ইনিংসে ১৩ চার এবং ১ ছক্কাও।
পাহাড় রান তাড়া করতে ইনিংসের শুরুতে বেশ আত্মবিশ্বাসী প্রোটিয়া ব্যাটাররা। ৭১ বলে মাত্র ৫৬ রানের মন্থর ইনিংস খেলেন টেম্বা বাভুমা। ৬৯ রান রাসি ভ্যান ডার ডুসেনের করেন। টেলএন্ডারদের সঙ্গী করে লড়াই মিলার ম্যাচের শেষ বলে সেঞ্চুরি করলেন। দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাস্ত করে ফাইনালে নিউজিল্যান্ড। চ্যাম্পিয়ান্স ট্রফি ঘরে তোলার লড়াইয়ে ভারতের বিরুদ্ধে স্যান্টনাররা। বিশ্ব ক্রিকেট বলছে শিরোপা জয়ের ক্ষেত্রে সেরার সেরা বিরাট-রোহিতদের টিম ইন্ডিয়াই।