অল্পের জন্য বিপদ থেকে রক্ষা। লাইফগার্ডদের তৎপরতায় দ্রুত উদ্ধার। বড়সড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেলেন স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী। পুরীতে ঘুরতে গিয়ে সমুদ্রে স্পিডবোট উলটে যায়। বিপদ হয়নি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা তথা সিএবি সভাপতি স্নেহাশিস ও তাঁর স্ত্রী অর্পিতার। বরাতজোরে বেঁচেছেন স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় এবং তাঁর স্ত্রী অর্পিতা। পুরীতে ছুটি কাটাতে গিয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা ও বৌদি। দুর্ঘটনার মুখে পড়েন সস্ত্রীক স্নেহাশিস। ফেরিটি উল্টে যায়। রক্ষা পেয়েছেন বাংলার ক্রিকেট সংস্থা সিএবির সভাপতি স্নেহাশিস ও তাঁর স্ত্রী। উদ্ধার করা হয়েছে দুজনকেই। দুর্ঘটনার ভিডিয়োয় পরিস্কার, ফেরি উল্টে যাওয়ার পরে সমুদ্রের ধারে থাকা নিরাপত্তারক্ষীরা অর্থাৎ লাইফগার্ড উদ্ধারকাজ করে ফেরিতে থাকা সকলকেই উদ্ধার করে।

একদল ট্যুরিস্টের সঙ্গে স্পিডবোটে উঠেছিলেন দুজনেই। সেখানেই বিপত্তি। স্পিডবোট সমুদ্রে উলটো অবস্থায় ভেসে। লাইফগার্ডদের তৎপরতায় উদ্ধার। সিএবি প্রেসিডেন্টের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। সামনেই বেঙ্গল প্রো টি-টোয়েন্টি লিগ। তার পরে বাংলার ক্রিকেট সংস্থায় নির্বাচন। ব্যস্ততার শেষ নেই স্নেহাশিসের। তাই একটু স্ত্রীর সঙ্গে পুরীতে ছুটি কাটাতে গিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে এই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হবেন, তা স্বপ্নেও ভাবেননি সৌরভের দাদা-বৌদি। ঘটনার জন্য অর্পিতা স্পিডবোট চালককেই দায়ী করে বলেন, “সমুদ্রের পরিস্থিতি উত্তাল ছিল। এই বোটটা ১০জনের জন্য তৈরি। কিন্তু মাত্র তিন-চারজনকে বোটে তোলা হয়। এটাই দিনের শেষ সফর ছিল। আমরা এই নিয়ে সাবধান করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু বোটচালক আমাদের বারবার আশ্বস্ত করেছিল। একটি বড় ঢেউয়ের ধাক্কায় তাঁদের বোটটি বিপদে পড়ে। যদি লাইফগার্ডরা সময়মতো না আসতেন, তাহলে আমাদের বিপদ আরও বাড়তে পারত। ওই ঘটনার কথা মনে করলেই আতঙ্কিত হচ্ছি। আমার মতে, ওই বোটে যদি আরও লোক থাকত, তাহলে বোট উলটে যেত না। কর্তৃপক্ষের উচিত এই ধরনের খেলাধুলো বন্ধ করা। আমি কলকাতায় ফিরে মুখ্যমন্ত্রী ও পুলিশ সুপারকে চিঠি লিখব।”

কলকাতায় ফিরে এই ধরনের বিপজ্জনক খেলা বন্ধ করবেন বলে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন অর্পিতা। পুরীর সমুদ্রে এই ধরনের জলক্রীড়া বন্ধ করার দাবি তুলেছেন অর্পিতা। তদন্তের দাবিও তুলেছেন স্নেহাশিসের স্ত্রী। স্নেহাশিসের ঘনিষ্ঠ সঞ্জয় দাস বলেন, “হ্যাঁ, এই রকম একটা ঘটনা ঘটেছিল। তবে বড় বিপদ হয়নি। ওরা ভাল আছে।” স্নেহাশিস গাঙ্গুলি জানান, “জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছিল। ফেরি উল্টে গিয়েছিল। মৎস্যজীবী ও স্থানীয় মানুষেরা আমাদের বাঁচিয়েছেন। জগন্নাথের কৃপায় দ্বিতীয় জীবন পেলাম।” পুরীর উত্তাল সমুদ্রে স্পিডবোট উল্টে যায়। স্নেহাশিস ও তাঁর স্ত্রী অর্পিতা সমুদ্রে ২ জনেই পড়ে যান, হাবুডুবু খাওয়ার সময় তাঁদেরকে দেখতে পান স্থানীয়রা। তৎপর লাইফ গার্ডদের সাহায্যে সস্ত্রীক রক্ষা পান স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। দুর্ঘটনার সেই ছবি ভাইরাল। দুর্ঘটনার পর গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে ওড়িশা সরকার। ইডেন থেকে আইপিএলের দুটি ম্যাচ সরে যাওয়ার পর ছুটি কাটাতে সস্ত্রীক পুরীতে গিয়েছেন বঙ্গ ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা সিএবি-র প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায়। সেখানেই আচমকা দুর্ঘটনার কবলে পড়েন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা ও বৌদি।

সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের দাদা এবং সিএবি-র বর্তমান সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতায় ফিরে বলেন, “আমি প্রতি বছর পুরী যাই। এটা গত ৩১ বছর ধরে চলছে। জগন্নাথের মন্দিরে পুজো দিই। শনিবার আমরা হঠাৎ ঠিক করি সমুদ্রে যাব। কেন এরকম সিদ্ধান্ত নিলাম জানি না। একেবারে শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা। বিকাল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ আমরা একটা বোটে উঠি। আমাদের সঙ্গে আরও এক দম্পতি ছিলেন। বোটে আমাদের সঙ্গে লাইফগার্ড ছিল। হঠাৎ একটা বড় ঢেউ বোটের উপর আছড়ে পড়ে। বোটটা সঙ্গে সঙ্গে পুরো উল্টে যায়। আমরা সমুদ্রে পড়ে যাই। জলের তলায় বোটের নীচে চাপা পড়ে যাই। তখনও বুঝতে পারিনি কী হয়েছে। এই সময় আর একটা ঢেউ আসে। তার ফলে বোটটা আমাদের উপর থেকে সরে যায়। এটাই আমাদের বাঁচার সুযোগ করে দেয়। ততক্ষণে আরও কয়েক জন লাইফগার্ড চলে আসেন। তাঁরাই আমাদের উদ্ধার করেন। জগন্নাথকে ধন্যবাদ। মনে হচ্ছে আমাদের পুনর্জন্ম হল।”