Friday, May 23, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

দেবাশিসের বিরাট ঘোষনা, পাল্টা সৃঞ্জয়!‌ মোহনবাগানে চড়চড়িয়ে বাড়ছে নির্বাচনের উত্তাপ?‌ বাগবিতণ্ডা বর্তমান ও প্রাক্তন সচিবের!‌

বিস্ফোরক ঘোষণা দেবাশিস দত্তের, টুটু’দা মোহনবাগানের সচিব হলে আমি ভোট লড়ব না, কিন্তু ওঁকে লিখিত দিতে হবে। পাল্টা সৃঞ্জ, উনি জলঘোলা করছেন। মোহনবাগানে বাড়ছে নির্বাচনের উত্তাপ। সৃঞ্জয় বোস এবং দেবাশিস দত্ত দু’তরফেই লাগাতার প্রচার। দেবাশিস দত্তের এক বিরাট ঘোষণা। ভোটের আগে ইশতেহার প্রকাশের দিনে, টুটু বসুর প্রসঙ্গ উঠতেই বিস্ফোরক ঘোষণা। জানালেন, ‘টুটুদা যদি ইলেকশনে দাঁড়ায় আমি ইলেকশনে লড়ব না’। শর্ত রেখে সাফ জানান, ‘টুটুদা যদি ইলেকশনে দাঁড়ান, সচিব পদে লড়তে চান, তিন বছর চালাতে চান আমি ইলেকশনে লড়ব না। তাঁকে লিখিত দিতে হবে তিনি তিন বছর চালাবেন। ২০১৮ সালে টুটু বসু ছ’মাস পর নিজে সচিব পদ ছেড়ে ছেলেকে দিয়ে দিয়েছিলেন। উনি যদি এটা লিখিতভাবে সদস্যদের গ্যারান্টি দেন তাহলে আমি ইলেকশনে লড়ব না’।

টুটু বসুর প্রতি শ্রদ্ধার সুর দেবাশিস দত্তের গলায়। স্পষ্ট স্বীকারোক্তি, টুটু বসু আমাকে হাত ধরে নিয়ে এসেছিলেন এবং অঞ্জন মিত্র আমাকে হাত ধরে গড়ে তুলেছিলেন। টুটু বসু, অঞ্জন মিত্রের আশীর্বাদ ছিল বলেই আমি যতটুকু হতে পেরেছি আজকে হয়েছি। আমার সঙ্গে টুটুদার কোনওদিন লড়াই হতে পারে না। আমি সেই লড়াইতে নামার আগেই আমার বশ্যতা স্বীকার করছি। আমি টুটু বসুর বিরুদ্ধে লড়াই করব না’।দেবাশিস দত্তের খোলাখুলি প্রস্তাব উড়িয়ে দিলেন সৃঞ্জয় বসু। মোহনবাগানের সচিব দেবাশিস দত্তের শর্ত, ‘‘টুটু’দা যদি ক্লাবের সচিব পদে আসতে চান, আমি নিজে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব। কিন্তু ছ’মাস পর উনি যদি নিজের ছেলে সৃঞ্জয় বসুকে চেয়ারে বসিয়ে দেন, তা হলে হবে না। সেটা ওঁকে লিখিত দিতে হবে।’’ দেবাশিসের প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়ে সৃঞ্জয়ের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘নির্বাচনের মুখে জলঘোলা করে এটা ভোটারদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা। আমার গ্রুপ আমাকে সচিব পদে প্রার্থী করেছে। গত দু’মাস ধরে আমরা প্রচার করছি। এখন উনি এ সব বলে ভোটারদের বিভ্রান্ত করতে চাইছেন!’’

জুন মাসে মোহনবাগানের নির্বাচন ঘিরে ময়দান সরগরম। সচিব পদে লড়ছেন দেবাশিস এবং টুটুর জ্যেষ্ঠ পুত্র সৃঞ্জয়। দেবাশিসকে প্রশ্ন টুটু-অঞ্জনের নাম এক নিঃশ্বাসে উচ্চারণ করতে পারলে নির্বাচনের প্রচারপত্রে টুটুর ছবি নেই কেন? দেবাশিসের জবাব, ‘‘টুটু’দা সভাপতি পদ থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছেন। কোনও এক জনের পক্ষে প্রচার করবেন বলেছেন। তাই ওঁর ছবি ব্যবহার করতে পারিনি। ওঁর অনুমতি না নিয়ে এটা করা যায় না।’’ মোহনবাগানের নির্বাচন ঘিরে বসু পরিবারে ভাঙন ধরানোর নায়ক শাসক দেবাশিসের শিবিরের সঙ্গে রয়েছেন সৃঞ্জয় বসুর ভাই সৌমিক বসু মোহনবাগান ক্লাবের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি। এক অনুষ্ঠানে সৌমিক দেবাশিসের হয়ে প্রচারও করেছেন। টুটু বসু দেবাশিসের নাম না করে বলেছিলেন, ‘‘ও মিত্র পরিবারকে (মোহনবাগানের প্রাক্তন সচিব অঞ্জন মিত্র) ধ্বংস করেছে। আমার আর অঞ্জনের সম্পর্ক নষ্ট করেছে। অঞ্জনের মেয়ে সোহিনীকে আমি কো–অপ্ট মেম্বার করেছিলাম। ও আপত্তি তুলেছিল। আমি তা শুনিনি। আমার পরিবারেও ফাটল ধরানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু সেই চক্রান্ত ধরে ফেলেছি। ও লোভী। আমি এখনও বেঁচে আছি। আমার পরিবারে আমি এখনও বটবৃক্ষ। আমি বেঁচে থাকতে সংসারে ফাটল ধরতে দেব না। নির্বাচনে সৃঞ্জয় বনাম সৌমিক লড়াই হবে না।’’ দেবাশিস বলেন, ‘‘আমার আর টুটু’দার লড়াই হতে পারে না। উনি অভিভাবক। বাবা-মা তো সন্তানকে বকতেই পারেন। সেই অধিকার আছে। কিন্তু আমার স্থির বিশ্বাস উনি ব্যক্তিগত জায়গা থেকে ওই কথাগুলো বলেননি। কারও চাপে বলেছেন। ওঁর পরিবার যখন ২০১৪ সালে বিপদে পড়েছিল, তখন পাশে আমি আর ওঁর ছোট ছেলে সৌমিক ছিল।’’

মোহন-ঐতিহ্যের দখল নিতে চায় দু’পক্ষই, বাগানের ভোটে তরজা শুরু শ্যামপুকুরের সেনবাড়ি নিয়ে ,সৃঞ্জয়ের কাছে প্রোমোটারের যে চিঠি গিয়েছে। চিঠি প্রসঙ্গে দেবাশিস বলেন, ‘‘রুইয়া গ্রুপ নতুন আবাসন তৈরির কাজ করছে। সংস্থার কর্ণধার এখন বিদেশে। ফিরলে ওঁর সঙ্গে কথা হবে। সেন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা হবে। শেষ পর্যন্ত হয়ত কলকাতা পুরসভার কাছেও আমাদের যেতে হবে। সময় লাগতে পারে। সৃঞ্জয়ও একই উদ্যোগ নিয়েছে। ও যদি সচিব নির্বাচিত হয়, তা হলে আমি ওকে সাহায্য করব। আমি যদি সচিব পদে আবার নির্বাচিত হই, চাইব সৃঞ্জয় এই কাজে আমারা পাশে থাকুক। পরিবার তো একটাই— মোহনবাগান।’’

লড়াই দেবাশিস বনাম সৃঞ্জয়ের। দু’জনের লড়াই জেলায়-জেলায়, পাড়ায়-পাড়ায় রাজ্যের শাসকদলের মধ্যে বিভাজন তৈরি। নির্বাচন জুন মাসে। সাধারণ নির্বাচনের ঢঙে দু’পক্ষ প্রায় ৬০টি সভা করে ফেলেছে। দুই শিবিরের মঞ্চেই দেখা দিয়েছেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা থেকে শুরু করে পুরপিতা, বিধায়ক, মন্ত্রীদেরও! খেলা এবং রাজনীতির ময়দানে গুঞ্জন, সৃঞ্জয়ের হয়ে আসরে নেমেছেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডে, বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাদা স্বাধীন মল্লিক। দেবাশিসের পক্ষে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মন্ত্রী অরূপ রায় এবং প্রদীপ মজুমদার, তৃণমূলের সাসংদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, দুই বিধায়ক খোকন দাশ, নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং সাংসদ তথা প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। সৃঞ্জয়ের হয়ে আসরে নেমেছেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, প্রয়াত মন্ত্রী সাধন পাণ্ডের মেয়ে শ্রেয়া পাণ্ডে, বিধায়ক তথা প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের দাদা স্বাধীন মল্লিক। দেবাশিসের পক্ষে ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মন্ত্রী অরূপ রায় এবং প্রদীপ মজুমদার, তৃণমূলের দুই বিধায়ক খোকন দাশ, নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এবং সাংসদ তথা প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। যদিও ব্যারাকপুরের তৃণমূল সাংসদ পার্থ নৈহাটিতে ইস্টবেঙ্গল সমর্থক হিসাবেই পরিচিত।

নির্বাচনে রাজনীতির যোগ। মানতে চাননি দেবাশিস। বলেন, ‘‘যাঁদের বিভিন্ন মঞ্চে দেখা যাচ্ছে, তাঁরা রাজনীতির লোক হতে পারেন, কিন্তু প্রত্যেকের সঙ্গেই মোহনাবাগানের কোনও না কোনও যোগ রয়েছে। কেউ সদস্য, কেউ কার্যকরী সমিতিতে আছেন, কেউ সমর্থক। ফলে ক্লাবের ভোটে তাঁরা যে কোনও একটা পক্ষ নেবেন, এটা তো স্বাভাবিক। এখানে রাজনীতির রং লাগানো উচিত নয়। কোনও উপরওয়ালা (বোঝাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী)নেই। অনেকে মুখ্যমন্ত্রীর কথা বলছেন। কিন্তু উনি যদি আমাকে না চাইতেন, বলেই দিতেন, তুমি ভোটে দাঁড়িও না। ওঁর সঙ্গে আমার সেরকমই সম্পর্ক। কিন্তু উনি কখনও তা বলেননি। বরং উনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে একাধিক বার আমাদের কাজের প্রশংসা করেছেন।’’দেবাশিসের সঙ্গে থাকা প্রাক্তন ফুটবলার মানস ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই নির্বাচনে রাজনীতির রং লাগাবেন না।’’ অথচ, মানসের পাশে বসে প্রসূন তার কিছুক্ষণ আগে আক্ষেপ করে বলেন, ‘‘কেন এই নির্বাচনে এত রাজনীতি হবে? কেন কাউন্সিলরেরা জড়িয়ে পড়বেন? মোহনবাগানের নির্বাচনই বা কেন হবে? সবাই কি কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে একসঙ্গে চলতে পারে না?’’ প্রসূনকে কিছু দিন আগে হাওড়ায় সৃঞ্জয়ের হয়ে প্রচার করার পরই দেবাশিসের পাশে থেকে বলেন, ‘‘দেবাশিস সুন্দর ভাবে ক্লাব চালাচ্ছে। ও বড় বড় কথা বলে না। ওকে ধাক্কা মারবেন না। আমার কাছে পরিবার একটাই— মোহনবাগান।’’ টিম দেবাশিস দত্তের ভাষায় ‘আমরা কী করেছি, কী করতে চাই’ নাম দিয়ে একটি প্রচার-পুস্তিকা প্রকাশ করা হয়। সেখানে পরিকাঠামো, ক্রীড়া ও ক্লাবের পরিবেশের দিক দিয়ে গত তিন বছরে দেবাশিসের শাসক গোষ্ঠী কী কী করেছে, তার খতিয়ান রয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁরা কী কী করতে চান, সেটাও বলা হয়েছে। দেবাশিসের পাশে ছিলেন মোহনবাগানের প্রাক্তনী সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়।

মন্ত্রী বনাম মন্ত্রী। মেয়র বনাম ডেপুটি মেয়র। নেতা বনাম নেতা। বসু বনাম বসু! পশ্চিমবঙ্গ দেখছে অভিনব লড়াই। কেন অভিনব? কারণ, উপরে উল্লিখিত চারটি লড়াইয়ের মধ্যে তিনটি লড়াইয়েই দুই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষই একটি দলের— তৃণমূল! চতুর্থটি পারিবারিক লড়াই। তবে সেখানেও ঘাসফুলের আঘ্রাণ আছে বইকি। যে ঘাসফুল ফুটেছে সবুজ ঘাসের মাঠে, সে মাঠের নাম মোহনবাগান। বয়স একশো বছরেরও বেশি। খাতায়-কলমে লড়াই দেবাশিস দত্ত বনাম সৃঞ্জয় বসুর। প্রথম জন বর্তমান সচিব। দ্বিতীয় জন প্রাক্তন সচিব। একটা সময়ে দু’জনে হাত ধরাধরি করে মোহনবাগান দল গড়েছেন। এ বার তাঁরা যুযুধান। দেবাশিসের নেতৃত্বে সবুজ-মেরুনের বর্তমান শাসকগোষ্ঠীর স্লোগান ‘আমরাই মোহনবাগান’। সৃঞ্জয়-কামী নেতৃত্বে বিরোধীদের সুর ‘তোমাকে চাই’। এই ‘আমরা-ওরা’র লড়াইয়ে তৃণমূলে যে বিভাজন সবচেয়ে স্পষ্ট, তা হল কলকাতার মেয়র এবং ডেপুটি মেয়রের মধ্যে। মেয়র ফিরহাদ সৃঞ্জয়ের নেতৃত্বে বিরোধী গোষ্ঠীর পক্ষে। খিদিরপুরে ঘনিষ্ঠ তিন কাউন্সিলর মোহন-ভোটে সৃঞ্জয়ের হয়ে কাজ করছেন। উত্তর কলকাতায় ডেপুটি মেয়র অতীনের নেতৃত্বে অনেক কাউন্সিলর দেবাশিসের হয়ে সক্রিয়। তৃণমূলের অন্দরে দক্ষিণ কলকাতা বনাম উত্তর কলকাতার একটা দ্বন্দ্ব চিরকালই ছিল। মোহনবাগানের ভোটে তার ছায়া।

মোহনবাগানের ভোটে বরাবরই উত্তর কলকাতার বড় ভূমিকা থাকে। কারণ, সবুজ-মেরুনের মোট ৬,৮১৮ ভোটারের মধ্যে ২,০১০টি ভোটই উত্তরের শ্যামবাজার, বাগবাজার, ফড়িয়াপুকুর, শোভাবাজার অঞ্চলের। বসুবাড়ি, সেনবাড়ির মতো বহু বনেদি পরিবারের ভোট আছে এখানে। ১৯১১ সালের শিল্ডজয়ীদের মূ্র্তি প্রতিষ্ঠা এবং রাস্তার নামকরণ ‘মোহনবাগান লেন’ হয়েছিল অতীনের হাত ধরে। একাধিক বার প্রকাশ্যেই তাঁর মুখে শাসকগোষ্ঠীর প্রশংসা শোনা গিয়েছে। মোহনবাগান নির্বাচনে সিপিএম-বিজেপি উপস্থিতি রয়েছে। উত্তর কলকাতায় সৃঞ্জয়ের হয়ে ভোট টানার কাজে নেমেছেন রাজ্য সিপিএমের সম্পাদক মহম্মদ সেলিমের ‘ঘনিষ্ঠ’ সঞ্জয় ঘোষ (বাপ্পা)। দেবাশিসের সভায় হাজির ছিলেন মানিকতলা বিধানসভা উপনির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী কল্যাণ চৌবের স্ত্রী তথা প্রয়াত মোহনবাগান সচিব অঞ্জন মিত্রের কন্যা সোহিনী। মন্ত্রীদের মধ্যে অরূপ রায় এই নির্বাচন নিয়ে খানিক দোটানায়। প্রথমে হাওড়ায় তিনি শাসকগোষ্ঠীর কর্মসূচিতে ছিলেন। এখন সৃঞ্জয়ের সমর্থনে সভাতে দাবি করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই বিরোধীদের হয়ে আসরে নেমেছেন। নবান্নের সমর্থন যে সৃঞ্জয়ের দিকেই। মোহনবাগানের নির্বাচনে উত্তর কলকাতার পরেই গুরুত্ব হাওড়ার। অরূপ সরে যাওয়ায় শাসকগোষ্ঠী আসরে নামিয়েছেন প্রাক্তন ফুটবলার ও ক্লাবের বর্তমান কার্যকরী সমিতির সদস্য সত্যজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে। হাওড়ার বালির ‘ভূমিপুত্র’। হাওড়ার ভোটারদের উপর তাঁর যথেষ্ট ‘প্রভাব’ রয়েছে বলে দাবি। শাসকগোষ্ঠীর দেবাশিসের হয়ে হাওড়ায় প্রচার করছেন কর্মসমিতির আর এক সদস্য কাশীনাথ দাসও। দীর্ঘ দিন হাওড়া পুরনিগমে ঠিকাদারির কাজ করার ফলে কাশীনাথের বিভিন্ন মহলে প্রভাব রয়েছে বলে অভিমত।

মোহনবাগানের নির্বাচন ঘিরে জেলা তৃণমূলও বিভক্ত। শাসকগোষ্ঠীর হয়ে দুর্গাপুর এবং বর্ধমানের সভায় গিয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার এবং দুই প্রভাবশালী বিধায়ক খোকন দাশ ও নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। উত্তর ২৪ পরগণায় বিরোধীদের হয়ে কাজ করছেন জ্যোতিপ্রিয়ের দাদা স্বাধীন। জেলায় শাসকগোষ্ঠীর পক্ষে ভূমিকা নিচ্ছেন সাংসদ পার্থ। মোহনবাগানের কর্মসমিতির প্রাক্তন সদস্য তথা রাজারহাট-নিউ টাউনের তৃণমূল বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় আবার সৃঞ্জয়ের পক্ষে ময়দানে। সৃঞ্জয় পাশে পাচ্ছেন বিধাননগরের মেয়র পারিষদ তথা রাজারহাট-গোপালপুরের বিধায়ক অদিতি মুন্সির স্বামী দেবরাজ চক্রবর্তীকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমর্থন কার দিকে? মুখ্যমন্ত্রী গত কয়েকটি অনুষ্ঠানে দেবাশিসের প্রশংসা করেছেন। কালীঘাট স্কাইওয়াকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে মঞ্চে দেখা গিয়েছে সৃঞ্জয়কে। সেখানে দেবাশিস মঞ্চের নীচে ছিলেন। দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে ছিলেন দু’জনেই। দেবাশিসের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা নির্বাচনী প্রচারে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা অধিকাংশই ক্লাবের সদস্য। ফলে ক্লাবের ভোটে তাঁদের মতামত তো থাকবেই।’’ সৃঞ্জয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গলে আগেও বহু রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন। তাঁরা সদস্য বা সমর্থক হিসেবে ক্লাবের নির্বাচনে নেমেছিলেন। এখনও নামছে‍ন। এ নিয়ে মেরুকরণ করা ঠিক নয়।’’ বাগানে জোড়াফুল ফুটবে কার বাগানে?

সোমবার থেকেই মোহনবাগান নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন পত্র দেওয়া শুরু হয়ে যেতে পারে। এখনই চূড়ান্ত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। বুধ রাতে ক্লাব তাঁবুতে নির্বাচন কমিটির সদস্যরা চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায়ের নেতৃত্বে আলোচনায় প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত, সোমবার থেকে মনোনয়ন পত্র দেওয়ার বিষয়টি। তবে এই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে শনিবার। নির্বাচন কমিটির পরিকল্পনা করেছে মনোনয়ন পত্রের সঙ্গে চূড়ান্ত ভোটার তালিকাও অর্থের বিনিময় সংগ্রহ করতে পারবেন বৈধ সদস্যরা। এই প্রক্রিয়া চলবে ২ জুন পর্যন্ত। প্রাথমিকভাবে ঠিক হয়েছে, ৩ জুন মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ। মনোনয়ন জমা শেষ হলে ৩ জুন থেকেই সেই পেপার স্ক্রুটিনি শুরু হয়ে যেতে পারে। ত্রুটিনি শেষ হওয়ার দু’দিন পর ঘোষণা করা হবে নির্বাচনের দিন। নির্বাচন কোথায় হবে তা এখনও স্থির করা হয়নি। নির্বাচন বোর্ডের সদস্যরা আশা করছেন ৩০ জুনের মধ্যে এই পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। ১০০ টাকার বিনিময়ে ক্লাব থেকে মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করতে পারবেন সদস্যরা। একজন সদস্য সর্বোচ্চ পাঁচটি পেপার সংগ্রহ করতে পারবেন। প্রত্যেকটি নমিনেশন জমা দিতে গেলে ১০,০০০ টাকা ‘কশান মানি’ জমা দিতে হবে। পুরো বিষয়টিতে কিছু চূড়ান্ত হয়নি। ক্লাব তাঁবুতে নিজেদের মধ্যে বৈঠকে নির্বাচনী বোর্ডের সদস্যরা। বোর্ডের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীমকুমার রায় ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্বরূপ দে, অনুপকুমার কুণ্ডু, অসীম মৌলিক ও সুকোমল রায়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles