Saturday, May 24, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

আইপিএল ফ্যান পার্কে উৎসবের আমেজ!‌ রায়গঞ্জের স্টেডিয়ামে ক্রিকেট সমর্থকদের উন্মাদনা উপভোগ করলেন অভিষেক ডালমিয়া

মাঠে গিয়ে খেলা দেখতে না পারা দর্শকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা। আইপিএল যত এগোচ্ছে উন্মাদনা ততই বাড়ছে। সাবালক আইপিএলের উদ্বোধন হয়েছিল ইডেন গার্ডেন্সেই। আঠেরোয় পা রাখা আইপিএল সত্যিই সাবালক। এবার আইপিএল ফ্যানেরাও বেশ উৎফুল্ল। স্টেডিয়ামে গিয়ে আইপিএল দেখার সুযোগ নাও হতে পারে। অনেক দূরে অবস্থিত মাঠ। টিকিটের দামও চড়া। স্টেডিয়াম থেকে দূরে বাইশ গজের মজা দিতে ফ্যান পার্ক উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। শনি অপরাহ্নে নাইট রাইডার্স বনাম কিংস ইলেভেনের খেলা দেখতে প্রচুর মানুষের ভিড় রায়গঞ্জ স্টেডিয়ামে। খেলার মাঝে চার ছক্কার সঙ্গে সঙ্গে তুমুল উচ্ছ্বাস। পার্কে আসা ক্রিকেট ভক্তদের উন্মাদনা ছিল দেখার মতো।

জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মাতিয়ে দিয়েছিলেন শাহরুখ খান, শ্রেয়া ঘোষালরা। ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে ইতিমধ্যেই পাঁচটি ম্যাচ খেলেছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স। ইডেনে এখনও দু’টি ম্যাচ বাকি নাইটদের। মহেন্দ্র সিংহ ধোনির চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে ম্যাচও। ৭ মে-র যে দ্বৈরথকে ঘিরে এখন থেকেই তৈরি তুমুল আগ্রহ। ধোনি-দর্শনের সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা। টিকিটের জন্য হাহাকার শুরু। সেই আবহেই জেলায় জেলায় আইপিএল উন্মাদনাকে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। ইডেনের চৌহদ্দি ছাড়িয়েও হাজির আইপিএল! খেলা দেখার সুযোগ তো থাকছেই, সঙ্গে উপহার, দেদার খাওয়াদাওয়া।

দেশের ৫০টিরও বেশি শহরে আইপিএল ফ্যান পার্ক ২০২৫ তৈরি। শনি ও রবিবার দু’দিনের জন্য ফ্যান পার্ক রায়গঞ্জে। রবিতে ডাবল হেডার। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও লখনউ সুপার জায়ান্টের ম্যাচের আনন্দ রায়গঞ্জ স্টেডিয়ামে উপভোগ করলেন শহরের মানুষজন। এর আগে রাজ্যের চারটি জেলায় আইপিএল ফ্যান পার্ক বসানো হয়েছিল। এই জেলায় প্রথম এ ধরনের আয়োজন ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা। প্রবেশে কোনও খরচ বহন করার প্রশ্নই নেই। বড় স্ক্রিনে খেলা দেখার সুযোগ। ফ্রি এন্ট্রি কুপনের উপরে লাকি ড্র বাড়তি পাওনা। আইপিএল ফ্যান পার্কের আকর্ষণের কারণ? যে মাঠে ফ্যান পার্ক গড়া হয়েছে, সেখানে জায়ান্ট স্ক্রিন। বড় পর্দায় ম্যাচের লাইভ প্রদর্শণী। রবিবার আইপিএলে ডাবল হেডার অর্থাৎ, একই দিনে দুই ম্যাচ দেখানো হয়। প্রথম ম্যাচে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও লখনউ সুপার জায়ান্টস। সেই ম্যাচে ঋষভ পন্থের লখনউকে ৫৪ রানের বিরাট ব্যবধানে হারিয়ে দেয় হার্দিক পাণ্ডিয়ার মুম্বই। দ্বিতীয় ম্যাচে নয়াদিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ৬ উইকেটে হারায় রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। এই জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে বিরাট কোহলিরা।

এই দুই ম্যাচই জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানোর ব্যবস্থা ছিল রায়গঞ্জে আইপিএলের ফ্যান পার্কে। পাশাপাশি দর্শকদের জন্য ছিল বিভিন্ন ক্যুইজ শো, উপহার জেতার সুযোগ। খাওয়াদাওয়া। পুরোটাই উৎসবের আবহ। যে দর্শকরা কিংবা ফ্যানেরা স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে পারছেন না, তাঁদের জন্য মাঠের আমেজ যাঁরা মাঠে গিয়ে খেলা দেখতে পারছেন না, তাঁদের জন্য থাকছে ফ্যান পার্কে গিয়ে আইপিএল উন্মাদনায় মেতে ওঠার সুযোগ। কলকাতার বাইরে, জেলায় জেলায় আইপিএলকে পৌঁছে দেওয়ার বিশাল এক উদ্যোগ।

প্রিয় ক্রিকেটারের সই করা জার্সি প্রাপ্তি। খেলার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক বিনোদন, ফুড কোর্ট ও কিডস প্লে জোন। ফেস পেইন্টিং–এ নিজেকে দলের সমর্থনে সাজিয়ে তোলা। চিয়ার-ও-মিটার, ৩৬০ ডিগ্রি ফটো বুথ সহ নানাভাবে আকর্ষণীয় করে তুলেছে ফ্যান পার্কের পরিবেশ। ফ্যান পার্কে আসা খুদে ক্রিকেটার ঋষভ আগরোয়াল বলে, ‘দারুন মজা লেগেছে। খুব ভাল লাগছে এত বড় স্ক্রিনে খেলা দেখতে। ইডেনে খেলা দেখার মতোই ফিলিং হচ্ছে। খুব মজার। বাড়ির টিভিতে খেলা দেখলে এমনটা মনে হয় না।’ রায়গঞ্জের এক বাসিন্দা বলেন, ‘নিদের শহরের ফ্যান পার্কের ইভেন্ট। খুব ভালো লাগছে। সপরিবার উপভোগ করতে এসেছি। একেবারে অন্যরকম অভিজ্ঞতার সম্মুখীণ হলাম আমরা।’

ফ্যান পার্কে উপস্থিত বিসিসিআই-‌এর আট প্রতিনিধির দল। হাজির বঙ্গ ক্রিকেট সংস্থা অর্থাৎ সিএবি’‌র প্রাক্তন সভাপতি ও আইপিএল গভর্নিং বডির সদস্য অভিষেক ডালমিয়া সস্ত্রীক। উত্তর দিনাজপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক সুদীপ বিশ্বাসের কথায়, ‘ সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ও উন্মাদনা আমাদের অর্থাৎ আয়োজকদের সত্যিই উদ্বুদ্ধ করেছে। এর ফলে জেলায় ক্রিকেটের প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। রায়গঞ্জ স্টেডিয়ামে বিসিসিআইয়ের প্রতিনিধি সত্যপাল নিকারের কথায়, ‘যাঁরা কোনও দিন স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখতে পারেননি, তাঁদের কথা চিন্তা করেই এই আয়োজন। লাইভ ম্যাচ দেখার সুযোগ করে দেখা হয়েছে যেখানে স্টেডিয়ামের আমেজ থাকবে। ফ্যান পার্কে কোনও প্রবেশমূল্য লাগছে না। ছোট থেকে বড় সকলের জন্য নানা বিনোদনের ব্যবস্থা থাকছে।’ সিএবি’‌র প্রাক্তন সভাপতি ও আইপিএল গভর্নিং বডির সদস্য অভিষেক ডালমিয়ার কথায়, ‘‌ অনবদ্য এক ভাবনা। জেলায় জেলায় এরকম আয়োজন প্রত্যেককেই ক্রিকেটের প্রতি আরও আরও প্রশমিত করতে পারবে বলে মনে হয়।’‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles