পাকিস্তানের মদত। একের পর এক জঙ্গি হামলা। জবাব পাকিস্তানে ঢুকেই দিতে হবে ভারত। পহেলগাঁওয়ের ঘটনা। আতঙ্কিত পাকিস্তান। ২৩ এপ্রিল পাঁচ দফা পদক্ষেপ। ভারতের কড়া বার্তা পাকিস্তানকে। উল্টে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার ঘোষণা পাকিস্তানের। পরীক্ষার ওপর কড়া নজর দিল্লির। হামলায় পাকিস্তানি জঙ্গিরা জড়িত। দাবি অস্বীকার পাকিস্তানের। পাকিস্তান ২৪-২৫ এপ্রিল ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাবে। করাচি উপকূলের অদূরে তাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে থেকেই ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি পাক সরকারের। ভারতের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সমস্ত ঘটনার উপর তীক্ষ্ণ নজর।
ভারত একাধিক পদক্ষেপ করেছে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। কূটনৈতিক সম্পর্ক ত্যাগ। সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত। পাক কূটনীতিকদের বহিষ্কার। ওয়াঘা সীমান্ত পুরোপুরি বন্ধ। ভিসায় ভারতে থাকা পাকিস্তানিদের দেশত্যাগ। পহেলগাঁও হামলায় পাকিস্তান যোগ! মুজফ্ফরাবাদ-করাচিতে আশ্রয় জঙ্গিদের। ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণে ইঙ্গিত। জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জনকে হত্যা করার পর পাকিস্তানের সেফ হাউসে পালিয়ে গিয়েছে হামলাকারী জঙ্গিরা। ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণে এমনটাই ইঙ্গিত, দাবি তদন্তকারীদের। হামলার দায় নিয়েছে লস্করের ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফোর্স’ টিআরএফ। ফরেন্সিক বিশ্লেষণ এবং প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ানের ভিত্তিতেও জানা গেছে, ৫ হামলাকারী একে রাইফেল এবং অত্যাধুনিক যন্ত্র-সহ স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র নিয়ে পর্যটকদের উপর হামলা চালায়। কেউ কেউ সেনার উর্দিও পরেছিল। তদন্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিক বলেন,‘পহেলগাঁওয়ে হামলা কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। পরিকল্পনা মাফিক সঙ্গে যথেষ্ট পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র এনে এই হামলা। আমাদের গোয়েন্দা তথ্যে পাকিস্তানের অপারেটিভদের সঙ্গে সরাসরি যোগ। ডিজিটাল তথ্যপ্রমাণ, হামলার পর পাকিস্তানের মুজফ্ফরাবাদ এবং করাচির সেফ হাউসে আশ্রয় নিয়েছে জঙ্গিরা। অতীতে ভারতে লস্করের বড় হামলার মূল কেন্দ্র পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং আইএসআই নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র থেকে তত্ত্বাবধান হয়।
জানুয়ারিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী এলওসি এবং আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইবি থেকে ভারতে অত্যন্ত দক্ষ লস্কর এবং জইশ-ই-মোহাম্মদ জঙ্গিদের অনুপ্রবেশের জন্য সক্রিয়ভাবে সহায়তা করে। সেই সূত্র ধরেই অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসবাদীদের এবং তাদের সহায়তাকারীদের খুঁজে বের করার জন্য জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ ফেব্রুয়ারি এবং মার্চ মাসে জম্মু ও কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি জায়গায় ব্যাপক তল্লাশি। ভারতে প্রবেশের পর, এই সন্ত্রাসবাদীদের স্থানীয় কর্মীরা খাবার, আশ্রয় এবং অর্থ দিয়ে সহায়তা করেছিল। সন্ত্রাসবাদীরা কাঠুয়া, উধমপুর, ডোডা, কিস্তোয়ার, রিয়াসি, রাজৌরি, পুঞ্চের মতো জেলাগুলিতে এবং কাশ্মীর উপত্যকায় প্রবেশ করে। বর্তমানে উপত্যকায় প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ জন উচ্চ প্রশিক্ষিত বিদেশী সন্ত্রাসবাদী রয়েছে। পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই সন্ত্রাসীবাদীদের অফলাইন সংস্করণে আলপাইন কোয়েস্ট অ্যাপ দিয়ে সজ্জিত করে। একটি নেভিগেশন অ্যাপ যা প্রায়শই পেশাদার ট্রেকাররা ব্যবহার করেন। তথ্য বলছে আইএসআই এই অ্যাপের মাধ্যমে অনুপ্রবেশকারী সন্ত্রাসবাদীদের ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ক্যাম্প, পুলিশ কনভয় চলাচল এবং ব্যারিকেডের বিবরণ সরবরাহ করছে। এনক্রিপ্ট করা রেডিও কমিউনিকেশন ডিভাইসও ব্যবহার করছে যার সার্ভার পাকিস্তানে।
ভারতকে পাঙ্গা নিতে এলে পাকিস্তানের অবস্থা খারাপের দিকেই যাবে। পাকিস্তানের থেকে সামরিক শক্তিতে অনেক এগিয়ে ভারত। পাকিস্তানের থেকে সামরিক শক্তিতে অনেক এগিয়ে ভারত। অভিযোগ, পহেলগাঁও পুরো হামলার নেপথ্যে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পর্যায়ে পাঁচটি ঘা ভারতের। বদলা নেওয়ার দাবি। উরি হামলার পরে যেভাবে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানো হয়েছিল এবং পুলওয়ামা হামলার পরে যেভাবে এয়ার স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারত, তেনই সামরিক পদক্ষেপের দাবি। ভারত এবং পাকিস্তানের সামরিক শক্তির ফারাক বিস্তর। গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০২৫ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, সামরিক শক্তির নিরিখে বিশ্বের চতুর্থ সেরা দেশ ভারত। পাকিস্তান ১২ নম্বরে।
ভারতের সেনাবাহিনীর ট্যাঙ্ক ৪,২০১। পাকিস্তানের ২,৬২৭। ভারতের গাড়ি ১৪৮,৫৯৪, পাকিস্তানের ১৭,৫১৬, ভারতের সেলফ-প্রপেলড আর্টিলারি ১০০ পাকিস্তানের ৬৬২। ভারতের টোড আর্টিলারি ৩,৯৭৫, পাকিস্তানের ২,৬২৯। এমএলআরএস রকেট আর্টিলারি ২৬৪, পাকিস্তানের ৬০০। ভারতীয় বায়ুসেনার এয়ারক্রাফট ২,২২৯, পাকিস্তানের ১,৩৯৯। ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান ৫১৩, পাকিস্তানি বায়ুসেনার ৩২৮। অ্যাটাক টাইপ ভারতের ১৩০, পাকিস্তানের ৯০। স্পেশাল মিশন ভারতের ৭৪, পাকিস্তানের ২৭। হেলিকপ্টার ভারতের ৮৯৯, পাকিস্তানের ৩৭৩। অ্যাটাক হেলিকপ্টার ভারতের ৮০, পাকিস্তানের ৫৭। ভারতীয় নৌসেনার মোট সম্পদ ২৯৩। পাকিস্তানি নৌসেনার ১২১। এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ভারতের ২, পাকিস্তানের ০। ডেস্ট্রয়ার ভারতের ১৩, পাকিস্তানের ০। ফ্রিগেট ভারতের ১৪, পাকিস্তানের ৯। সাবমেরিন ভারতের ১৮, পাকিস্তানের ৮। প্যাট্রোলিং ভেসেল ভারতের ১৩৫, পাকিস্তানের ৬৯। নীতি বিষয়ক গবেষণা এবং উপদেষ্টা সংস্থা ফেডারেশন অফ আমেরিকান সায়েন্টিস্টের তরফে যে রিপোর্ট প্রকাশে দাবি, ভারতের ভাণ্ডারে ১৮০টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। পাকিস্তানের ভাঁড়ারে আছে ১৭০টি পারমাণবিক অস্ত্র। বিশ্বের দেশগুলির পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা তালিকায় ভারত এবং পাকিস্তান সামনের সারিতে। রাশিয়া এবং আমেরিকার হাতে বিশ্বের সবথেকে পারমাণবিক অস্ত্র আছে। ভারতের দীর্ঘদিনের বন্ধু রাশিয়ার হাতে থাকা পারমাণবিক অস্ত্রের সংখ্যা ৪,২৯৯। ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেশের হাতে ৩,৭০০টি পারমাণবিক অস্ত্র আছে। পাকিস্তানের ‘বন্ধু’ চিনের কাছে আছে ৬০০টি পারমাণবিক অস্ত্র।