Saturday, April 19, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

‌ব্রিগেড সমাবেশে বক্তা মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়! সিপিএম তরুণ নেত্রীর স্পষ্ট কথা, যোগ্যদের চেয়ারে ফেরাতেই হবে

মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। বামেদের প্রতিবাদের মুখ। ২০ এপ্রিল ব্রিগেডের সমাবেশের বক্তা তালিকায় নাম। সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, অনাদি সাহু, নিরাপদ সর্দার, বন্যা টুডু, অমল হালদার এবং সুখরঞ্জন দে অন্যান্য সংগঠনের নেতারা। কলকাতায় বড় সমাবেশে বড় নাম মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। গণসংগঠনের নামে ব্রিগেড সমাবেশ। মূল ভিত্তি সিপিএম। বিধানসভা নির্বাচন কড়া নাড়ছে। কলকাতায় ব্রিগেড সমাবেশ। বাংলায় দুর্নীতি থেকে একাধিক ইস্যুতে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব বামেরা। লাগাতার চাঁচাছোলা ভাষায় জোড়াফুল শিবিরকে আক্রমণ মিনাক্ষীদের। শিয়ালদা স্টেশন, হাওড়া স্টেশন, শ্য়ামবাজার, হাজরা, পার্ক সার্কাস, সেন্ট্রাল মেট্রো স্টেশন এবং সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে ব্রিগেডমুখী মিছিল বেরোবে। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, সুজন চক্রবর্তী, সুজন চক্রবর্তী, শতরূপ ঘোষরা মিছিলের নেতৃত্বে।

সদ্য সমাপ্ত হওয়া পার্টি কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। অনেকের মধ্যে মতপার্থক্য ছিল বা এখনও মতপার্থক্য দলের অন্দরে থাকলেও মিনাক্ষীর যোগ্যতা ও লড়াকু প্রতিবাদী চরিত্র ও ভাবমূর্তি জনসাধারনের উপর প্রভাব বিস্তার করছে। সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।। যোগ্যেতই সিপিএমের ব্রিগেডের বক্তা তালিকাতেও মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নাম।২০ এপ্রিল ব্রিগেড সমাবেশ। আয়োজক দলের শ্রমিক, কৃষক, খেতমজুর সংগঠন। সিপিএমের বক্তা তালিকায় শেষ মুহূর্তে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের নাম সামনে নিয়ে আসা হয় বঙ্গ সিপিএম দলের তরফে। প্রথমে ব্রিগেডের বক্তা তালিকায় নাম দেওয়া হয়নি। ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড ভরাতে এবং দলের নিচুতলার কর্মীদের দাবিতে মীনাক্ষীকে মঞ্চে রাখছে সিপিএম। মীনাক্ষীকে বক্তা তালিকায় না রাখলে বৃদ্ধ নেতাদের ভাষণ শুনতে গরমের দাবদাহকে উপেক্ষা করে ভিড় জমবে না সেটা জানেন আলিমুদ্দিনের নেতারা। মীনাক্ষীকে রাখা বাধ্যতামূলক করতে হচ্ছে বক্তা তালিকায়। পার্টি কংগ্রেসে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বামেদের ব্রিগেডের বক্তা তালিকায় মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়।

২০ এপ্রিল বিগ্রেডে বামেদের ব্রিগেড সমাবেশ। তাৎপর্যপূর্ণের বিষয় হল, সিপিএমের বড় মঞ্চে সাধারণত পক্ককেশের নেতারা বক্তব্য রাখেন। প্রকাশিত বক্তাদের তালিকায় দলের তরুণ মুখ মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। বিভিন্ন মহলে কৌতূহল। বিষয়টি নিয়ে চর্চাও শুরু দলের অন্দরে। তাও, মানতেই হবে তরুন প্রজন্মের মুখ মীনাক্ষী। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে দিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করিয়ে মাঠ ভরাতে ডাক দেওয়া হয়েছে। বিরোধী আসনে বসার পর থেকে সিপিএমের ব্রিগেডে ভিড় হয়েছে ভালই। ২০২৪ সালে যুবনেত্রী মীনাক্ষীর আয়োজনে ‘ইনসাফ যাত্রা’ সমাবেশেও ভাল ভিড় হয়েছিল। তখন শূন্যতা না কাটলেও এবার সম্ভাবনা দেখছে সাধারন মানুষ। ঠিক যেমন দুর্নীতির জটাজালে জড়িয়ে পড়ার আগের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বিশ্বাস করেছিলেন জনসাধারন।

নেতৃত্বও বুঝতে পারছেন বক্তা তালিকায় শুধু প্রবীণদের রাখলে হবে না, তরুণদেরও রাখতে হবে। মীনাক্ষীকে অন্তর্ভুক্ত করণ যথাযথ বলে মনে করছেন। দলের কলকাতার এক নেতা বলেন, “মীনাক্ষীর বক্তব্যে একটা আলাদা ঝাঁঝ আছে, যেটা জনতাকে আকর্ষণ করে। নীচুতলা থেকে অনেকেই খোঁজ নিচ্ছিলেন, ব্রিগেডে বক্তা তালিকায় মীনাক্ষীর নাম রাখা হয়েছে কিনা, কর্মীদের আবেগকে গুরুত্ব দিতে এই সিদ্ধান্ত।” একসময় কেশপুর, গড়বেতা, গোঘাট, আরামবাগ-সহ রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছিল সিপিএমের একচেটিয়া দাপট। বিরোধী তো দূরে থাক, বহু এলাকায় শরিকরাও সিপিএমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ করতেন। ২০১১ সালে পালা বদলর পর থেকে ছবিটা বদলে গিয়েছে। সিপিএম-সহ বামেরা ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু। বিধানসভায় শূন্য। মিটিং, মিছিলে লোক হলেও সেভাবে ভোট বাক্সে তার প্রভাব না পড়ায় বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগে শীর্ষ নেতারাও।

পর্যবেক্ষকদের মত, সম্ভবত সে কারণেই শুধু পক্ককেশে ভরসা না রেখে তরুণদেরও গুরুত্ব বাড়াচ্ছে বামেদের বড় শরিক। এবারের ব্রিগেডে আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অতীতে প্রতিটি ব্রিগেডের আয়োজন হয়েছে সিপিএমের তরফে। এবারে অবশ্য সরাসরি সিপিএমের ডাকে ব্রিগেড হচ্ছে না। শ্রমিক ও গণ সংগঠনগুলির উদ্যোগে এই সমাবেশ হতে চলেছে। মীনাক্ষী ছাড়াও বক্তব্য রাখবেন দলের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম, অনাদি সাহু, নিরাপদ সর্দার, বন্যা টুডু, অমল হালদার ও সুখরঞ্জন দের মতো নেতারাও।

অন্যদিকে বঙ্গ–সিপিএম নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন বক্তা তালিকায় শুধু প্রবীণদের রাখলে চলবে না। নতুন প্রজন্মের নেতা–নেত্রীদেরও রাখতে হবে। তাই শুরুতে বক্তা তালিকায় নাম না থাকলেও পরে মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে চাপে পড়ে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক সিপিএমের এক নেতা বলেন, ‘‌মীনাক্ষীর বক্তব্যে একটা আলাদা ঝাঁঝ আছে। সেটা অস্বীকার করার জায়গা নেই। যেটা জনতাকে টানে। নীচুতলা থেকে বহু কর্মীই খোঁজ নিচ্ছিলেন, ব্রিগেড সমাবেশের বক্তা তালিকায় মীনাক্ষীর নাম রাখা হয়েছে কিনা। তাই ওইসব কর্মীদের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে এমন সিদ্ধান্ত শেষ মুহূর্তে নেওয়া হয়েছে।’‌ সঙ্গে অন্যান্য বাম দলের নেতারা থাকবেন।

শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেতমজুর, বস্তিবাসীদের সংকটের সঙ্গেই বেকারত্ব, চাকরিহারাদের সমস্যা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধেও আওয়াজ উঠবে ২০ এপ্রিলের বাম ব্রিগেড সমাবেশে। চাকরি দুর্নীতির প্রতিবাদকে সামনে রেখে ব্রিগেড সফল করতে, প্রচার থেকে সমাবেশে হাজির হওয়ার ডাক দিলেন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। প্রায় ২৬ হাজার চাকরি হারানো শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের কথা তুলে ধরে ইতিমধ্যেই পথে নেমেছে বামেরা। এই ইস্যুকে শুধুই পথেঘাটে নয়, আসন্ন ব্রিগেড সমাবেশেও নিয়ে যেতে চাইছে সিপিআইএম। চাকরি দুর্নীতির বিরুদ্ধেও ব্রিগেড সভায় আওয়াজ তোলার ইঙ্গিত দিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তথা যুব সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় ।

মীনাক্ষীর কথায়, “যোগ্য ও অযোগ্য শিক্ষকদের ক্ষেত্রে এই দুটো শব্দ ব্যবহার করাটাই আমাদের কাছে বড় লজ্জার বিষয়। নিয়োগের সব প্রক্রিয়া সরকার করবে, আর তাতে দুর্নীতি হলে দায় এড়াবে এটা হতে দেব না। দুর্নীতির টাকা একসঙ্গে খেয়ে এখন তো ঢেঁকুর তুলতে হবে। দুর্নীতি হয়েছে দেশের অনেক ক্ষেত্রে। রাজ্যে দুর্নীতি প্রতিযোগিতায় নেমেছে সরকার। চক্র চালাচ্ছে রাজ্যের সরকার। স্কুল, কলেজ সিলেকশন কমিশন সব ক্ষেত্রে দুর্নীতি। পরীক্ষার দিন, টাইম, খাতা দেখা, ইন্টারভিউ সব তুমি করবে আর দুর্নীতি হলে আমি কিছু জানি না। সরকারি চাকরির পরীক্ষা। সরকারের একটা নিয়োগের সহজ নিয়ম আছে। সেটা করলে এত কাণ্ড হত না। যোগ্য অযোগ্য এই দুটো শব্দ ব্যবহার রাজ্যের মানুষের কাছে লজ্জার। ১০০ দিনের কাজ থেকে কলেজ, স্কুল, দমকল-সহ একাধিক নিয়োগ দুর্নীতি। প্রায় ২২ লাখ ছেলেমেয়ে পরীক্ষা দিয়েছিল। ২১ লাখ ৭৪ হাজার পরীক্ষার্থী অনুত্তীর্ণ, তার মানে একটা মাপকাঠি ছিল। সেটা কেন বলছ না। টাকার লোভে গোটা রাজ্যে বেকারদের রাস্তায় বসাল। টাকা নিয়ে ওরা অযোগ্যদের নিয়োগ করবে। আজ যাঁরা সরকারে, তাঁরা জলে আগুন লাগানো নেতানেত্রী তাঁদের মুখে অযোগ্য কথা উঠছে কেন? তার মানে অযোগ্য ছিল। যাঁদের অযোগ্য বলছো, তাঁরা অযোগ্য হল কী করে? আমি সাদা খাতা দিলে তুমি পাশ করালে কী স্বার্থে? কেউ ঘুষের টাকা নিয়ে গেলে সেটা নেওয়ার লোক ছিল নিশ্চয়ই। সরকার দেখিয়ে দিল মেধার জায়গা নেই। যোগ্যরা বিপদে। আন্দোলন করছে রাস্তায় তাঁরা। আন্দোলনকারীরা ঘুষখোরদের উপর ভরসা কেন করবে? মুখ্যমন্ত্রী ভুয়ো নিয়োগপত্র দিয়েছিলেন নেতাজি ইনডোরে। রাজ্যের বিজেপির নেতারা এই চাকরিহারাদের নিয়ে হইহই করছে। দুর্নীতিতে জড়িত শুভেন্দু অধিকারী। ২০২৬ সালে তুমি তো ঘুরে বেড়াতে মমতার আঁচল ধরে। জেলায় গেলে শুনতে পাওয়া যায় তখন মালদা, মুর্শিদাবাদ তোমার দায়িত্বে ছিল টাকা তোলার। তখন সেই টাকা খেয়ে এখন ঢেঁকুর তুলছো। বিরোধী দলের ভূমিকা কী? মুকুল রায় ছিল, কৃষ্ণ কল্যাণী ছিলেন পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে, তখন কেন বলেননি? রাজ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ৮০০০ স্কুলে তালা দিয়েছে আগেই। মদের দোকান খুলিয়েছে। যাঁরা যোগ্য তাঁরা মান সম্মান নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন। রাস্তায় দাঁড়িয়ে মারপিট করে চাকরি আদায় করবেন? এই জন্য ওঁরা শিক্ষিত হয়েছিলেন! যাঁরা যোগ্য তাঁদের চেয়ারে ফেরত পাঠাতেই হবে। নাহলে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে তছনছ হয়ে যাবে। আগে স্কুলসংখ্যা বেড়েছিল, এখন বন্ধ হচ্ছে, ছাত্রছাত্রী নেই। এরা যাচ্ছে ভিন রাজ্যে কাজ করতে। আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত বারবার বাংলায় আসছেন। ওঁদের স্কুল খুলছেন। রাজ্য অনুমোদন দিচ্ছে। উত্তর থেকে পশ্চিমের জেলায় এই স্কুল বাড়ছে। উগ্রতা শেখাচ্ছে। আসলে লেখাপড়া কম হলে বেকার বাড়বে, সস্তায় শ্রম কেনা যাবে। বেগার খাটানো যাবে।’‌’‌

বাংলার শাসক থেকে শূন্যে নেমে আসা সিপিআই(এম)-এর বড় ভরসা তিনিই। সিপিআই(এম)-এর যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্য়ায়। কার্যত নজিরবিহীনভাবে সিপিআই(এম)-এর কেন্দ্রীয় কমিটিতে দলের তরুণ নেত্রী। তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ে সিপিআই(এম)-এর ২৪তম পার্টি কংগ্রেস। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, এই মুহূর্তে বঙ্গ সিপিআই(এম)-এ অন্তত মীনাক্ষীর মতো আর কেউ লোক টানতে পারেন না। সেই ক্যারিশমাকেই সিপিআই(এম) কাজে লাগাতে চাইছে বলে মনে করা হচ্ছে। সামনের বছর বাংলায় ফের ভোট। তার ঠিক আগের বছর মীনাক্ষীর এই ‘উন্নতি’ তাই নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। মীনাক্ষীর উত্থান মূলত দলের যুবনেত্রী হিসাবে। সদ্য তিনি ৪০ বছর বয়স পূর্ণ করেছেন। শীঘ্রই যুবনেত্রীর পদ থেকে সরে যাবেন। জুন মাসে দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সম্মেলনে রাজ্য সম্পাদকের পদ ছাড়বেন মীনাক্ষী। একইসঙ্গে, ডিওয়াইএফআই থেকে বেরিয়ে এসে পুরোদস্তুর সিপিআই(এম)নেত্রী হিসাবে মাঠে নামবেন। অতীত ঘাঁটলে দেখা যায়, এর আগেও সিপিআই(এম)-এর রাজ্য কমিটিতে মীনাক্ষীর মতো অল্প বয়সীদের জায়গা দেওয়া হয়েছে। রাজ্যস্তরে যুব আন্দোলন করতে করতে দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা পাওয়ার এহেন ঘটনা নজিরবিহীন! একথা বলছেন দলেরই শীর্ষ নেতারা। অন্যদিকে, আর কিছুদিনের মধ্যে সিপিআই(এম)-এর রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলী গঠন করা হবে। সূত্রের দাবি, সেখানেও মীনাক্ষীকে জায়গা দেওয়া হতে পারে এবং উচিৎও মনে করছেন বাম মহল।

সালটা ২০০৮। তখনও বঙ্গে ক্ষমতায় বামেরা। ওই বছরই ডিওয়াইএফআই এর ডাকে শেষবার ভরেছিল ব্রিগেড। উড়েছিল লাল পতাকা। যদিও তখন সবে কুড়ির গণ্ডি পার করেছে কুলটির ‘ডাকাবুকো’ মেয়েটা। কে জানত এক যুগ পর এই মেয়েই হয়ে উঠবে বামেদের অন্যতম প্রধান মুখ, কমরেডদের ‘ক্যাপ্টেন’। তাঁর হাত ধরেই ফের ‘লাল টুকটুকে দিনের স্বপ্ন’ দেখবে বাম ব্রিগেড, তাঁর কাঁধেই আসবে ‘কিছু ছোট ছোট কুঁড়িদের ফোটানোর’ গুরু দায়িত্ব! ১৬ বছর পর ফের ব্রিগেড চলো ডাকে রাজ্যজোড়া ইনসাফ যাত্রায় সাড়া ফেলেছিল ডিওয়াইএফআই। কলকাতায় আবার লাল পতাকার মিছিল। ‘ফ্যাসিবাদ’ বিরোধী মীনাক্ষীর মেঠো স্লোগান। মূল বক্তার কাটআউটে ভরপুর গোটা রাজ্য। তাঁর হয়ে ব্যাট ধরেছিলেন খোদ বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। তিনিই সম্ভাবনা, তিনিই ভবিষ্যৎ, জোরালো কণ্ঠে বলছেন বাম নেতারা। বিধানসভার আগে এই ব্রিগেডের হাত ধরেই নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নটা যেন আরও বেশি করে দেখছে বামেরা। রাজনীতির আঙিনার মীনাক্ষীর ‘মেঠো’ ‘গ্রাম্য’ প্রান্তিক উচ্চারণ-আচরণ- সারল্যে ভরা ভাবমূর্তিই তাঁকে শহুরে-আধা শহুরে মানুষদের সঙ্গে মিশে যেতে সাহায্য করছে। দুর্নীতির জটাজালে আবদ্ধ এক মহিলার হাত থেকে রক্ষা পেতে বাংলার জনগন সারল্যে ভরা মিনাক্ষীকে বেছে নিতে চলেছেন। আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করছেন রাজ্যবাসী। গ্রামে গঞ্জে শহরে অলিতে গলিতে আবারও শোনা যেচ্ছে আর বিশ্বাসভঙ্গের দিকে তাকানোর প্রশ্নই নেই। সোজা কথায়, মিনাক্ষীতে মজেছেন বঙ্গবাসী।

মীনাক্ষীর বাড়ি কুলটির প্রত্যন্ত গ্ৰাম চলবোলপুরে। ছোট থেকে বেড়ে ওঠা। পড়াশোনা। গ্রামের লোকেরা মীনাক্ষীকে অবশ্য ‘পলি’ নামেই চেনেন। ছোট থেকে এই নামেই তাঁর এলাকায় পরিচিতি। গ্রামের সেই মেয়েই আলো করবে ব্রিগেডের মঞ্চ। তাঁর দিকে তাকিয়ে বঙ্গ সিপিএমের নেতারা। তাকিয়ে রাজ্যবাসী। তৃণমূল গুন্ডা ও দুর্নীতিবাজদের ভয়ে রাজ্যবাসী লুকিয়ে হলেও টিভির পর্দায় চোখ রাখবে। নতুন মেয়েটা কী বলছে, তা শোনার জন্য। খুশিতে ভাসছেন গ্রাম গঞ্জের লোকজনও। মীনাক্ষী ধীরে ধীরে বড় নেত্রী হয়ে উঠেছেন। শিক্ষিত মার্জিত ভদ্র স্বভাবের। মিথ্যা কথা বলতে পারদর্শীও নন। ভুরি ভুরি মিথ্যা আর প্রতারণার জটাজালে ফাঁদে মানু, আজ তিতিবারক্ত। একটু সততায় ভরা মেয়েকেই চাইছেন গ্রামের সকলেই। গ্রাম থেকে শহরের প্রবীনরা বলছেন, তাঁর হাত ধরেই ন্যায় বিচার পাক রাজ্যের আম-আদমি। নবীনরা বলছেন পলিদি তো এখন তাঁদের অনুপ্রেরণা।

ক্যাপ্টেন হতে নারাজ মীনাক্ষী। মীনাক্ষী সাফ বলেছেন, “আমি তো ক্যাপ্টেন নই। আমাদের ক্যাপ্টেন আমাদের গঠনতন্ত্র, আমাদের আদর্শ, আমাদের নীতি।” মীনাক্ষীই যে আগামীতে দলের মূল কান্ডারি অকপটেই স্বীকারও করেছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। মেয়ের কাঁধে ভর করেই দেখছেন দিনবদলের স্বপ্নে বিভোর সাধারন মানুষ। মিনাক্ষীই বামেদের প্রধান মুখ। অথচ মিনাক্ষী মনে করেন, কমিউনিস্ট পার্টিতে কেউ মুখ হয় না। অন্যায়ের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়াই মূল উদ্দ্যেশ্য। পাৰ্টির দলগত নেতৃত্বের মধ্যে অন্যদের মতো আমিও এক সৈনিক মাত্র।‌

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles