বীরভূমের প্রখর রোদ। সিউড়ির এমজিআর স্পোর্টস অ্যাকাডেমির মাঠে এনসিসি ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৫-এর রোমাঞ্চকর ফাইনাল। পূর্ব মেদিনীপুর ড্রাগনসের জয় দুর্দান্ত সুপার ওভারে। রানার্স আলিপুরদুয়ার থান্ডার্স। ম্যাচের পরিসমাপ্তি নাটকীয় পটভুমিকায়। ফাইনালের দুই দলই ২০ ওভারে ১৩০ রান করার ফলে ম্যাচে টাই ভাঙতে সুপার ওভারের সিদ্ধান্ত। দর্শকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতোই। ড্রাগনসের ব্যাটার শুভ গুছাইত সুপার ওভারে ১৬ রান করেন। বিকাশ পাত্রের দুর্দান্ত সুপার ওভারে থান্ডার্সকে ৭ রানে বেঁধে রেখে ম্যাচটি জিতে নেয়। ৯ রানে থান্ডার্সকে হারিয়ে শিরোপা জেতে ড্রাগনস।

টস জিতে থান্ডার্স অধিনায়ক দেবী রায় প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নেন। ইনিংসের শুরুটা ভালো হয় নি। থান্ডার্স প্রথম উইকেটটি শুরুতেই হারায়। ওপেনার হিমাংশু সিং মাত্র ৪ রান করে বিকাশ পাত্রের বলে আউট হন। মনোজ পাসওয়ান ১৩ রান করে ঋত্বিক গুছাইতের হাতে ক্যাচ দেন। সুজিত বিশ্বাস ২৫ বলে ২৮ এবং শুভদীপ শর্মা ২৬ বলে ১৮ রানের সাহসী ইনিংস। থান্ডার্স দলকে রুখে দেয় রোহিত মন্ডল বিধ্বংসী আক্রমণ এবং গুরুত্বপূর্ণ উইকেট শিকার। দেবী রায় ২১ রানের ইনিংস খেলেন। মালি ১৬ এবং আলমন্দা ১৩ রানে আউট হন। থান্ডার্স ১৯.৩ ওভারে ১৩০ রানে অলআউট হয়ে যায়। পাত্র এবং গুছাইত বল হাতে তিনটি করে উইকেট নেন। থান্ডার্সের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে দেন দুজনেই।

ড্রাগনরা জয়ের জন্য ১৩১ রান তাড়া করতে নেমে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। প্রথমেই হারায় কুন্দন হুটাইত এবং প্রীতম শাহকে। শুভ গুছাইত ইট প্রথম দিকে লড়াই করেছিলেন। সানি বর এগিয়ে এসে পাঁচটি বিশাল ছক্কা সহ ৩৭ বলে ৪৫ রান করেন। ড্রাগনদের আশাও বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। থান্ডার্সের সুজিত মালি এবং অতনু রাহা গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন। স্কোর দাঁড়ায় ৮৭/৭। এক নাটকীয় মোড়। রোহিত মণ্ডল ১৯ বলে ১৪ রান এবং শঙ্কর পানিগ্রাহী ২২ বলে ১১ রান করেন। ড্রাগনস ইনিংস শেষ হয় ৯ উইকেটে ১৩০ রানে। মণ্ডল শেষ বলে রান আউট হন।

সুপার ওভারে, ড্রাগনস প্রথমে ব্যাট করে এবং শুভ গুছাইত দুটি বাউন্ডারি এবং একটি বিশাল ছক্কা হাঁকিয়ে ১৬ রান করেন সঞ্জীব বাসফোরের ওভারেই। বিকাশ পাত্র সুপার ওভারে বোলিং করে ৭ রান খরচ করেন। পূর্ব মেদিনীপুর ড্রাগনসের জয় নিশ্চিত হয়।

ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের অর্থাৎ বিসিসিআই সদস্য ন্যাশনাল ক্রিকেট ক্লাব অর্থাৎ এনসিসি বীরভূমের এমজিআর স্পোর্টস একাডেমিতে আয়োজিত ক্রিকেট টুর্নামেন্টে। এই টুর্নামেন্টে বাংলার বিভিন্ন জেলার ছয়টি দল অংশগ্রহন করে। কালিম্পং ফ্যালকনস, দার্জিলিং আনস্টপবেলস, আলিপুরদুয়ার থান্ডার্স, ঝাড়গাম ফায়ারবোল্টস, পূর্ব মেদিনীপুর ড্রাগনস এবং কম্বাইন্ড অ্যাভেঞ্জার্স। টুর্নামেন্টের খেলোয়াড়রা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অন্য কোনও সদস্য অ্যাসোসিয়েশনের সাথে সম্পর্কিত নয়। টুর্নামেন্টের প্রধান লক্ষ্য কালিম্পং, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, ঝাড়গ্রাম এবং পূর্ব মেদিনীপুরের মতো জেলাগুলো থেকে ক্রিকেটারদের প্রতিভা চিহ্নিত করণ। জেলা অ্যাসোসিয়েশনের সহায়তায় খেলোয়াড়দের ক্রিকেটীয় দক্ষতা প্রদর্শনের প্ল্যাটফর্ম হল এনসিসি। কম্বাইন্ড অ্যাভেঞ্জার্স দলে ছিল অনন্য মিশ্রণ, যেখানে বিভিন্ন জেলার খেলোয়াড়রা অংশগ্রহণ করেন।

টুর্ণামেন্টের স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হল ফ্যানকোড। পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিল সদস্য অভিষেক ডালমিয়া, সিএবি জয়েন্ট সেক্রেটারি দেবব্রত দাস, এনসিসি প্রেসিডেন্ট পবণ ভালোটিয়া, সিএবি অ্যাপেক্স কাউন্সিল মেম্বার নীরজ কাজারিয়া সহ বিশিষ্টরা।