ইংল্যান্ডে দ্বিশতরান হাঁকালেন করুণ নায়ার। করুণ নায়ার। আট বছর আগে যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই যেন নতুন সফর শুরু করলেন করুণ নায়ার। ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে ডবল সেঞ্চুরি। কামব্যাকের বার্তা করুণের। তিন নম্বর জায়গাটা নিজের জন্য পাকা করে ফেললেন। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট শুরুর আগে বেসরকারি টেস্টে ভারতীয় এ দলের হয়ে প্রথম দিনের শেষে ১৮৬ রানে অপরাজিত ছিলেন করুণ। ভারতের রান ছিল ৩ উইকেট হারিয়ে ৪০৯। ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনে দ্বিশতরান করে করুণ ২৮১ বলে ২০৪ রানে আউট হন। ইনিংসে ছিল ২৬টি চার। সেঞ্চুরি পেলেন না ধ্রুব জুরেল। ৯৪ রানে আউট হন ভারতীয় উইকেটকিপার।
রোহিত-বিরাটের টেস্ট অবসরের পর প্রশ্নের উত্তর অনেকটাই মিলল। করুণের ইনিংস। ভারতীয় দলকে ভরসা দিতেও পারে। করুণ এ দলের হয়ে তিন নম্বরে ব্যাট করতে নামেন। মূল ভারতীয় দলে অধিনায়ক শুভমান গিলের জায়গা। যশস্বীর সঙ্গে ওপেনে গিল। তিন নম্বরে করুণ খেলতে পারেন। সম্ভাবনাও খুলে গেল। প্রথম দিন ৯২ রানে আউট হন সরফরাজ খান। রান পাননি বাংলার অভিমন্যু ঈশ্বরণ। রান পেলেন না নীতীশ কুমার রেড্ডি। আউট হন ৭ রানে। শার্দূল ঠাকুর ২৭ রান ও হর্ষ দুবে ৩২ রান। ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত ৫৫৭ রানে থামে ভারতীয় এ দলের ইনিংস।
ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে প্রথম বেসরকারি টেস্টে ২৬টি চার এবং একটি ছক্কায় ২৮১ বলে ২০৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজের জন্য ভারতের প্রথম একাদশে ঢুকে পড়ার প্রবল দাবিদার। রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলির অবসরের পরে ভারতীয় টেস্ট দলের প্রথম একাদশে যে একাধিক শূন্যস্থানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। নাম বিবেচনার কোনও খামতি রাখলেন না ভারতের ট্রিপল সেঞ্চুরিয়ন করুণ। ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে নিজের জাত চেনালেন ধ্রুব জুরেলও। করুণের মতো মাইলস্টোন ছুঁতে না পারলেও ইংল্যান্ড লায়ন্সের বিরুদ্ধে ১২০ বলে ৯৪ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে গৌতম গম্ভীরদের নোটবুকে নিজের নাম তুলে রাখলেন। নিশ্চিতভাবে ইংল্যান্ডে ভারতের প্রথম পছন্দের উইকেটকিপার হলেন সহ-অধিনায়ক ঋষভ পন্ত। জুরেলকে প্রয়োজন পড়লে স্রেফ ব্যাটার হিসেবেই মিডল অর্ডারে খেলতে পারেন গম্ভীররা।
২০ জুন থেকে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ভারত। সেই সফরের আগে টেস্ট থেকে অবসর নিয়েছেন রোহিত এবং বিরাট। রোহিত আগেরবার ইংল্যান্ড সফরে দুর্দান্ত খেলেছিলেন। দীর্ঘদিন ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপে চার নম্বর জায়গাটা নিয়ে কাউকে ভাবতে হত না। এই পরিস্থিতিতে নয়া অধিনায়ক শুভমন গিলের নেতৃত্বে টিম ইন্ডিয়াকে বড় শূন্যস্থান ভরাট করতে হবে। গম্ভীররা দুটি বেসরকারি টেস্টের দিকে তাকিয়ে আছেন। এমনিতে প্রথম পছন্দ হিসেবে টেস্টের প্রথম একাদশে ঢোকার দৌড়ে সবথেকে বেশি এগিয়ে আছেন করুণ। রোহিতের অনুপস্থিতিতে ভারতের ওপেনার কেএল রাহুলকে ওপেনিংয়ে পাঠিয়ে করুণকে চারেও নামাতে পারে ভারত। এরপর ঋষভ পন্ত, রবীন্দ্র জাদেজা, নীতীশকুমার রেড্ডি বা শার্দুল ঠাকুররা।
২০১৭ সালে শেষবার টেস্ট খেললেও বিদর্ভের দুটি মরশুম দারুন করুণের। ইংল্যান্ডে কাউন্টি খেলার অভিজ্ঞতা আছে। সেইসঙ্গে ইংল্যান্ড লায়নসের বিরুদ্ধে প্রথম বেসরকারি টেস্টে যা খেললেন, তাতে বাড়তি ব্যাটার হিসেবে নিজের নামে কার্যত সিলমোহর ফেলে দিলেন। ভারতের প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর জানান, ভারতের ব্যাটিং লাইন-আপে করুণের অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ। বিরাট এবং রোহিতের অবসরের পরে ভারতের অভিজ্ঞতার অভাব প্রকট। ঘাটতি মেটাতে পারেন করুণ।