নতুন গ্রাম। মহানন্দা নদীর কোলে। নাম কী? গ্রামের নাম ‘তিস্তাপল্লি’। কাজ শুরু। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে গড়ে উঠছে। মহানন্দা নদীর কোলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে গড়ে উঠছে ‘নতুন গ্রাম’। নাম দেওয়া হয়েছে ‘তিস্তাপল্লি’। তিস্তা নদীর গ্রাসে দেড়বছর আগে চলে গিয়েছিল লালটং এবং চমকডাঙি গ্রাম। তারপর থেকে গ্রামবাসীদের জীবনে নেমে এসেছিল শুধু হাহাকার। আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছিলেন বাসিন্দারা। সহায়সম্বলহীন হয়ে কোনও রকমে বেঁচে ছিলেন। তবে এবার আশার আলো তাঁরা দেখতে পেলেন। দু’টি গ্রামের সব হারানো গ্রামবাসীদের জমির পাট্টা দেন মুখ্যমন্ত্রী। নতুন গ্রাম ‘তিস্তাপল্লি’ গড়ার নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই এবার গ্রামবাসীরা নয়া গ্রাম গড়তে শুরু করলেন। নতুন গ্রাম ‘তিস্তাপল্লি’ একটা পর্যটন কেন্দ্রও হবে। গ্রামবাসীদের রুজি রোজগার বাড়বে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পর্যটকরা মোহিত হবেন। গ্রামবাসীদের আর্থিক অবস্থা নিয়ে প্রশ্ন? পাহাড় নদী জঙ্গল ঘেরা এই গ্রামে হোম স্টে গড়ে উঠলে পর্যটকরা এসে থাকতে পারবেন। গ্রামবাসীদের পাশে দাঁড়ালেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। ৬ মাসের মধ্যে গ্রামবাসীদের বাংলার বাড়ি, মিশন নির্মল বাংলা, পথশ্রী সহ রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্প দিতে চান। আদর্শ গ্রাম গড়তে চান মেয়র। গ্রামবাসীরা আনন্দিত। গ্রামবাসীদের এই সহায়তাগুলি মিললে নতুন গ্রাম ‘তিস্তাপল্লি’ গড়তে তাঁদের খুব একটা সমস্যা হবে না। পর্যটকদের আনাগোনা শুরু হলে আর্থিক শ্রীবৃদ্ধিও ঘটবে। পাহাড় নদী জঙ্গল ঘেরা নিরিবিলি গ্রামে বহু পর্যটকই সময় কাটেতে চান। সব একসঙ্গে আছে। সিকিমের সেই হরপা বান লালটং এবং চমকডাঙি গ্রামকে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল। ২০২৪ সালের বর্ষায় তিস্তার গর্ভে তলিয়ে যায় দুটি গ্রাম। প্রশাসনের সহায়তায় গ্রামবাসীদের সরিয়ে নেওয়ার ফলে প্রাণে বেঁচে যান সকলে। হারিয়ে যায় সবকিছু। মুখ্যমন্ত্রী কিছুই ভোলেননি। ফুলবাড়িতে প্রশাসনিক সভা করতে এসে তাঁদের হাতে জমির পাট্টা তুলে দেন। নিজেই নতুন গ্রামের নামকরণ করেন ‘তিস্তাপল্লি’। গ্রামটির ভৌগোলিক অবস্থান অত্যন্ত আকর্ষণীয়। ১৩১টি পরিবারের লোকসংখ্যা প্রায় ৫২৪ জন। শিলিগুড়ি থেকে তিস্তাপল্লির দূরত্ব ১৩ কিমি। মহানন্দা নদীর দুটি বাঁধের মাঝখানে তৈরি হচ্ছে নতুন গ্রাম ‘তিস্তাপল্লি’। পাহাড়, জঙ্গল এবং নদীর পাশে এই নতুন গ্রাম গড়ে উঠছে। সব হারানো গ্রামবাসী মোহন মুখিয়া, জীতেন শৈবরা বলেন, ‘তিস্তার গর্ভে ভিটেমাটি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছিলাম। দুশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারতাম না। দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় পেলাম নতুন ঠিকানা। এখন নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারব।’ মেয়রের বক্তব্য, ‘পাহাড়, জঙ্গল এবং নদীর কোলে এই গ্রাম আগামী কিছুদিনের মধ্যে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে রূপ নেবে।’

মহানন্দা নদীর কোলে তিস্তাপল্লি। তিস্তা নদী গ্রাস করে লালটং ও চমকডাঙি গ্রাম। গ্রামবাসীরা বাঁশ-কাঠ দিয়ে নয়া গ্রাম গড়তে ঝাঁপান। পাহাড়-নদী-জঙ্গল ঘেরা গ্রামটি পরিদর্শন করেন শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব। বাংলার পর্যটন মানচিত্রে নয়া ঠিকানা হয়ে উঠবে বলেই প্রত্যাশা। গ্রামবাসীরাও উচ্ছ্বসিত। ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে সিকিমের হ্রদ বিস্ফোরণের জেরে ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল তিস্তা। তিস্তার থাবায় লালটং ও চমকডাঙি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রশাসন দু’টি গ্রামের বাসিন্দাদের নিরাপদ জায়গায় স্থানান্তরিত করার উদ্যোগ নিলেও গ্রামবাসীরা রাজি হননি। ২০২৪ সালের বর্ষায় গ্রাম দু’টি গ্রাস করে তিস্তা। জলপাইগুড়ি জেলার মানচিত্র থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় লালটং ও চমকডাঙি। দু’টি গ্রামের বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে মহানন্দা নদীর কোলে। জমির পাট্টা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। জমির পাট্টা পাওয়ার পরই দু’টি গ্রামের উদ্বাস্তু বাসিন্দারা তিস্তাপল্লিতে বাঁশ-কাঠ-টিন দিয়ে ঘর তৈরির কাজ শুরু করেন। ১৩১টি পরিবারে লোকসংখ্যা প্রায় ৫২৪ জন। অধিকাংশই গোপালক। কয়েকজন চাষাবাদ ও বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন। গ্রামবাসী বলেন, তিস্তার তাণ্ডবে ভিটেমাটি হারিয়ে কার্যত উদ্বাস্তু হয়ে পড়েছিলাম। দুশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারছিলাম না। গৌতম দেবের উদ্যোগে দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগিতায় পেয়েছি নয়া ঠিকানা। এখন কিছুটা নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারব। গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে মেয়র জানান, সংশ্লিষ্ট গ্রামবাসীদের জন্য প্রথমে শিবনগর সহ দু’টি জায়গা দেখা হয়েছিল। সেগুলি বনদপ্তরের জমি। প্রায় জঙ্গল সংলগ্ন। তাই ওদিকে না গিয়ে এখানে পুনর্বাসন দেওয়া হচ্ছে। পাট্টা দেওয়া হয়েছে। বাংলাবাড়ি প্রকল্পে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার ঘর, মিশন নির্মল বাংলায় শৌচাগার, পথশ্রী প্রকল্পে রাস্তা, জলস্বপ্ন প্রকল্পে বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ করে দেওয়া হবে। ছ’মাসের মধ্যে তিস্তাপল্লিকে আদর্শ গ্রাম গড়ে তোলা হবে। উত্তরকন্যার পাশের অধিকারী গ্রাম, শহরের ২০ নম্বর ওয়ার্ডের মডেল বস্তির তৈরির অভিজ্ঞতাকে এখানে কাজে লাগানো হবে। শিলিগুড়ি শহর থেকে তিস্তাপল্লির দূরত্ব ১৩ কিমি। চম্পাসারি, দেবীডাঙা হয়ে সহজেই আসা যায়। মহানন্দার দু’টি বাঁধের মাঝে তৈরি করা হচ্ছে গ্রামটি। নির্মীয়মাণ বাড়িগুড়ি টং-ঘরের আদলে করা হচ্ছে। নিশ্চিহ্ন হওয়া গ্রাম দু’টি ডাবগ্রাম-১ পঞ্চায়েতেই তিস্তাপল্লি নামে গ্রাম দু’টি গড়া হচ্ছে। প্রথম পর্যায়ে চারটি প্রধান রাস্তা, অঙ্গওয়াড়ি কেন্দ্র, প্রাথমিক স্কুল, কমিউনিটি হল তৈরি করা হবে। মেয়রের কথায়, পাহাড়, জঙ্গল ও নদীর পাশে এই গ্রাম আগামীতে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে রূপ নেবে। যা বাংলা তো বটেই সমগ্র দেশের মধ্যে অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসাবে চিহ্নিত হবে।

বৃষ্টি সাময়িক বিরতি নিতেই জলপাইগুড়ি থেকে স্পষ্ট দেখা মিলল কাঞ্চনজঙ্ঘার। সাতসকালে ঘুমন্ত বুদ্ধকে দেখে আপ্লুত শহরবাসী। উচ্ছ্বসিত পর্যটকরাও। বদলাতে শুরু করেছে আবহাওয়া। হাঁসফাঁস গরম থেকে মুক্তি। উত্তর-দক্ষিণ দুই বঙ্গেই চলছে বৃষ্টি। তাপমাত্রা খানিকটা নেমেছে। বৃষ্টি সাময়িক বিরতি নিতেই মন ভালো করা দৃশ্যের সাক্ষী জলপাইগুড়িবাসী। নজর কাড়ল কাঞ্চনজঙ্ঘা। হিমালয়ের শিখর দর্শনে আপ্লুত সকলেই। অপরূপ দৃশ্যকে ক্যামেরাবন্দি করলেন অধিকাংশই। জলপাইগুড়ি শহরের একাধিক এলাকা থেকে দেখা পাওয়া কাঞ্চনজঙ্ঘার। স্থানীয় বাসিন্দাদের কথায়,, সাতসকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এই দৃশ্য দেখে মন ভরে গিয়েছে। প্রতিবছর আকাশ পরিষ্কার থাকলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে জলপাইগুড়ি থেকেই দেখা মেলে কাঞ্চনজঙ্ঘার। বাতাসে দূষণের মাত্রা কম থাকায় অনেক বেশি স্বচ্ছ হয়েছে আকাশ। শহর থেকে অনেক বেশি স্পষ্ট কাঞ্চনজঙ্ঘা। ধেয়ে আসছে গভীর দুর্যোগ! রাজ্যজুড়ে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি শুরু। দিনভর মেঘলা আকাশ। বুধবার থেকে দুর্যোগ আরও বাড়বে বলে পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের। বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপের কারণে বৃষ্টি। পাহাড়ি এলাকায় ধস নামতে পারে, বাড়বে নদীর জলস্তর। শহর এলাকায় জল জমা এবং নিম্ন অববাহিকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা। সতর্কবার্তা দিল আলিপুর আবহাওয়া দপ্তর। গোটা রাজ্যেই বিক্ষিপ্তভাবে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি চলবে। আলিপুর আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, বর্ষা এল বলে! অনুকূল পরিস্থিতিতে বাংলার দিকে এগোচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু। উত্তরপূর্ব ভারতের বেশিরভাগ রাজ্যে ঢুকে পড়েছে বর্ষা। অসম, মেঘালয়ের কিছু অংশ দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর আওতায়। মৌসুমী অক্ষরেখা মুম্বই, পুনে, সোলাপুর, কালবুরগি, মেহবুবনগর ও কাবালীর উপর দিয়ে আগরতলা ও গোয়ালপাড়া পর্যন্ত বিস্তৃত। আগামী তিনদিনের মধ্যে উত্তরবঙ্গে বর্ষা পুরোপুরি প্রবেশ করবে। উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকবে বুধবার থেকে। ঘণ্টায় ৩৫ থেকে ৪৫ কিলোমিটার এবং সর্বোচ্চ ৫৫ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড়ো বাতাস বইবে সমুদ্রে। মৎস্যজীবীদের গভীর সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হচ্ছে বুধবার থেকে। বৃহস্পতি ও শুক্রবার সমুদ্র তীরবর্তী এলাকায় সমস্তরকম বিনোদনমূলক কাজকর্ম থেকে বিরত থাকতে পরামর্শ আবহাওয়া দপ্তরের। বজ্রবিদ্যুৎসহ হালকা, মাঝারি ও বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতে। দিনভর দফায় দফায় বৃষ্টির সম্ভাবনা। বজ্রবিদ্যুৎসহ বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝোড়ো হাওয়া বইবে। বুধবার ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা উপকূলের জেলায়। উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুরে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। বাকি সব জেলাতে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টির সঙ্গে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে দমকা ঝড় বাতাস বইবে। উত্তরবঙ্গে মঙ্গল ও বুধবার ভারী বৃষ্টি না হলেও বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি বিক্ষিপ্তভাবে দু-এক জায়গায় হতে পারে। বৃহস্পতিবার থেকে ফের সর্তকতা ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির। প্রবল বৃষ্টি হতে পারে উত্তর দিনাজপুর ও কোচবিহারে। বিক্ষিপ্তভাবে সর্বোচ্চ ২০০ মিলিমিটার পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা। দার্জিলিং থেকে মালদহ সব জেলাতেই ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। সপ্তাহান্তে সব জেলাতেই ভারী বৃষ্টি হতে পারে। যার জেরে পাহাড়ি এলাকায় ধস নামার আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন আবহবিদরা। কলকাতায় মূলত মেঘলা আকাশ। ঝড়বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। বৃষ্টি না হলে বাতাসে জলীয় বাষ্পের আধিক্য থাকায় অস্বস্তি থাকবে। বজ্রবিদ্যুৎ-সহ হালকা মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা। ২৮ মে থেকে বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়বে। ভারী বৃষ্টির সতর্কতা। কলকাতায় মঙ্গলবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫.৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১.৩ ডিগ্রি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বা আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৭৭ থেকে ৯৭ শতাংশ।
।