বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ভারত। দাবি নীতি আয়োগের সিইও বিভিআর সুব্রহ্মণ্যমের। জাপানকে টপকে ভারত এই মুহূর্তে ভারতের অর্থনীতির মোট মূল্য ৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রান্ত। বৃহত্তম অর্থনীতির তালিকায় জাপানকে টপক ভারত এখন চতুর্থ স্থানে। আমেরিকা, চিন এবং জার্মানিই ভারতের চেয়ে এগিয়ে। ২০২৭ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হবে ভারত। বছর দুই আগে স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লায় ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মোদির দাবি নিয়ে সংশয় প্রকাশও করেছিলেন। সরকারের দাবি, সব সংশয় মিটিয়ে দ্রুতগতিতেই এগোচ্ছে ভারতের অর্থনীতি। নীতি আয়োগের বৈঠক শেষে সিইও বিভিআর সুব্রহ্মণ্যম বললেন, “আমরা যখন কথা বলছি, তখন ভারত চার ট্রিলিয়নের অর্থনীতি হয়ে বিশ্বে চতুর্থ স্থানে উঠে এসেছে। আমরা এই গতিটা ধরে রাখতে পারলে আগামী ২.৫-৩ বছরে আমরা তৃতীয় স্থানে উঠে আসতে পারব। এই মুহূর্তে শুধু আমেরিকা, চিন আর জার্মানি আমাদের আগে।”
প্রাথমিকভাবে মোদি সরকার টার্গেট, ২০২৭ সালের মধ্যে ভারতকে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হিসাবে তুলে ধরা। ব্যাঙ্কিং বিনিয়োগ সংস্থা জেফ্রিসের অর্থনীতি মূল্যায়নের রিপোর্ট, ২০২৭ সালের মধ্যে পাঁচ ট্রিলিয়ন অর্থাৎ পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে ভারত। তবে সেই লক্ষ্য পূরণ না হলেও মোটামুটিভাবে ২০২৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতকে তৃতীয় করার লক্ষ্য রাখছে কেন্দ্র। ২৯-এর লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির জন্য বড়সড় অ্যাডভান্টেজ। মোদি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অন্যতম অভিযোগই হল অর্থনীতির দিকে নজর না দেওয়া। বেকারকত্ব, আর্থিক বৃদ্ধির হার নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধী শিবির। অর্থনীতির সার্বিক বৃদ্ধি দেখিয়ে সেই সব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার হাতিয়ার কেন্দ্রের।
নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের দশম বৈঠক। গ্লোবাল এবং অর্থনৈতিক পরিবেশ ভারতের জন্য অনুকূল, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের তথ্য উদ্ধৃত। সিইও বিভিআর সুব্রহ্মণ্যম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য সম্পর্কে বলেন, ‘আমরা আশা করি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া অ্যাপল আইফোনগুলি ভারতে বা অন্য কোথাও নয়, আমেরিকাতেই তৈরি হবে। পরবর্তী শুল্ক কী হবে তা অনিশ্চিত। গতিশীলতার কারণে, আমরা অবশ্যই নির্মাণের জন্য একটি সস্তা জায়গা হব।’ সুব্রহ্মণ্যমের মতে, সম্পদ নগদীকরণ পাইপলাইনের দ্বিতীয় রাউন্ড প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং অগাস্টে ঘোষণা করা হবে।মার্কিন শুল্কের কারণে যখন বিশ্বে অস্থিরতা চলছে, তখন ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি হওয়ার এই অবস্থান অর্জন করেছে। কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক আরোপও ভারতের বৃদ্ধি থামাতে পারেনি এবং পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনাও ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি। ভারত দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের দ্রুততম বর্ধনশীল অর্থনীতি ছিল এবং এখন জাপানকে পিছনে ফেলে দিয়েছে। বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে শুরু করে আইএমএফ এবং বেশ কয়েকটি বৈশ্বিক সংস্থা ভারতীয় অর্থনীতির শক্তি স্বীকার করেছে এবং সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলেছে, ভবিষ্যতেও ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার অগ্রগণ্য থাকবে। কেয়ারএজ রেটিং প্রতিবেদনে প্রকাশ, চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধি ৬.৮ শতাংশ হবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার কারণে ২০২৫ অর্থবছরের মোট বৃদ্ধির হার ৬.৩ শতাংশ হবে। কৃষি, হোটেল এবং পরিবহনের পাশাপাশি উৎপাদন খাতে শক্তিশালী পারফরম্যান্স বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করছে। ভারত জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কের পাশাপাশি মুদ্রাস্ফীতির ক্রমাগত বৃদ্ধির কারণে জাপানের অর্থনীতি ইতিমধ্যেই সমস্যার সম্মুখীন। এপ্রিল মাসে জাপানে মুদ্রাস্ফীতি তীব্রভাবে বেড়ে ৩.৫শতাংশ হয়েছে, যা বাজারের পূর্বাভাসের চেয়ে বেশি। প্রাথমিকভাবে নরেন্দ্র মোদী সরকার টার্গেট করেছিল, ২০২৭ সালের মধ্যে ভারতকে পাঁচ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হিসাবে তুলে ধরা। ব্যাঙ্কিং বিনিয়োগ সংস্থা জেফ্রিসের অর্থনীতি মূল্যায়নের রিপোর্ট বলছে, ২০২৭ সালের মধ্যে পাঁচ ট্রিলিয়ন অর্থাৎ পাঁচ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হবে ভারত। ২০২৯ লোকসভা নির্বাচনের আগে ভারতকে তৃতীয় করার লক্ষ্যে কেন্দ্র।
অপারেশন সিঁদুরের পর প্রথম মন কি বাত। প্রধানমন্ত্রীর মাসিক অনুষ্ঠান। ভারত জঙ্গিদমন অভিযানের সাফল্য। প্রধানমন্ত্রী মোদির বক্তব্য, “অপারেশন সিঁদুরে ব্যবহৃত বেশিরভাগ অস্ত্রশস্ত্র এই দেশের মাটিতেই তৈরি। আমাদের সেনার, ইঞ্জিনিয়রদের, টেকনিসিয়ানদের, এই দেশের রক্ত-ঘামের পরিচায়ক এই সাফল্য।আমাদের সেনা জওয়ানরা বেছে বেছে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছেন। এটা তাঁদের অদম্য সাহসিকতার যেমন প্রমাণ, তেমনি আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র, প্রযুক্তি এবং সমরসজ্জার শক্তি। আত্মনির্ভর ভারতের সংকল্পও প্রকাশ্যে এসেছে। আমাদের ইঞ্জিনিয়র থেকে টেকনিসিয়ান, অপারেশন সিঁদুরের সাফল্যের নেপথ্যে সকলের ঘাম মিশে আছে। অপারেশন সিঁদুর ভারতের সাহসিকতার প্রতীক। যে দক্ষতায় নির্ভুলভাবে ভারতীয় সেনা জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছে সেটা অকল্পনীয়। এই অপারেশন সিঁদুর সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নতুন উৎসাহ এবং সাহস জোগাবে ভারতকে।” প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গোটা দেশ অপারেশন সিঁদুরের বিরুদ্ধে একজোট। আজ আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, ক্ষুব্ধ। আজ দেশের অনেক পরিবারই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইকে নিজেদের পরিবারের অঙ্গ হিসাবে যুক্ত করে নিয়েছেন।” পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার বদলাস্বরূপ গত ৭ মে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে অভিযান চালায় ভারত। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় জঙ্গিদের আঁতুড়ঘর। হামলা চলে সওয়া নাল্লা, সারজাল, মুরিদকে, কোটলি, কোটলি গুলপার, মেহমোন্না জোয়া, ভিমবের এবং ভাওয়ালপুরের জঙ্গি ঘাঁটিতে। অভিযানে শতাধিক জঙ্গির মৃত্যুর পাশাপাশি রাতারাতি অনাথ হয়ে যায় জইশ-প্রধান মাসুদ আজহার। ভারতের প্রত্যাঘাতে পরিবারের ১২ সদস্যকে হারায় মাসুদ। অপারেশন সিঁদুরে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি আকাশ সারফেস টু এয়ার মিসাইল সিস্টেম নিখুঁতভাবে পাক আক্রমণ রুখে দিয়েছে। ব্যবহৃত হয়েছে T-72 মেইন ব্যাটেল ট্যাঙ্কস।মন কি বাতে অপারেশনেরই প্রশংসায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।