চেন্নাই সুপার কিংস- ২৩০/৫ (ব্রেভিস ৫৭, কনওয়ে ৫২)
গুজরাট টাইটান্স- ১৪৭ (সুদর্শন ৪১,অংশুল ৩/১৩, নূর ৩/২১)
৮৩ রানে জয়ী চেন্নাই সুপার কিংস
চ্যাম্পিয়নের মেজাজে চেন্নাই সুপার কিংস। অধিনায়ক হিসাবে সম্ভবত মহেন্দ্র সিং ধোনির শেষ ম্যাচ। গোটা আইপিএলে ভালো না খেলেও শেষ ম্যাচে হারিয়ে দিল পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা গুজরাট টাইটান্সকে। ব্যাটে-বলে দুরন্ত অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে এবারের আইপিএল অভিযান শেষ ইয়েলো আর্মির। নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামের ম্যাচ নিয়ে সেরকম আগ্রহ না থাকলেও মাহির টানে প্রখর রোদেও মাঠে ভিড় জমিয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। অধিনায়ক হিসাবে হয়তো আর মাঠে দেখা যাবে না। বিদায়ী ম্যাচে তাঁর হয়ে গলা ফাটাল স্টেডিয়াম। টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিলেন ধোনি। তারপর থেকে নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম সাক্ষী থাকল ডেওয়াল্ড ব্রেভিস-ডেভন কনওয়েদের তাণ্ডবের। চলতি আইপিএলে চেন্নাইয়ের অন্যতম সেরা আবিষ্কার ব্রেভিস, তরুণ তুর্কি উর্বিল প্যাটেল-আয়ুষ মাত্রেরা। এদিন তাঁরা সকলেই জ্বলে উঠলেন ব্যাট হাতে। আয়ুষ ৩৭, কনওয়ে ৫২,উর্বিল ৩৭, ব্রেভিস ৫৭ রান পেয়েছেন। নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ২৩০ রান তোলে চেন্নাই। প্লে অফ নিশ্চিত করা গুজরাটের বোলিং লাইন আপ এদিন কার্যত দিশেহারা। এবারের আইপিএলে বোলারদের যাবতীয় ব্যর্থতা ঢেকে দিয়েছে গুজরাটের টপ অর্ডার। এদিন বড় টার্গেট থাকলেও আশা ছিল সাই সুদর্শন-শুভমান গিলের উপর। তবে সুদর্শন ৪১ রান করলেও গিল ব্যর্থ। রান পাননি জস বাটলারও। টপ অর্ডার ব্যর্থ হতেই এদিন হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল গুজরাটের মিডল অর্ডার। কেউই সেভাবে রান করতে পারেননি। গোটা টুর্নামেন্ট জুড়ে দুরন্ত পারফর্ম করে আসা চেন্নাইয়ের নূর আহমেদ এদিনও তিন উইকেট তুলে নিলেন। তিন উইকেট পেয়েছেন অংশুল কম্বোজও। শেষ ম্যাচ জিতেও এবারের আইপিএল পয়েন্ট টেবিলে সকলেরই শেষে চেন্নাই।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ- ২৭৮/৩ (ক্লাসেন ১০৫, হেড ৭৬, নারিন ২/৪২)
কলকাতা নাইট রাইডার্স- ১৬৮/১০ (মণীশ ৩৭, রানা ৩৪, উনাদকট ৩/২৪, মালিঙ্গা ৩/৩১, দুবে ৩/৩৪)
১১০ রানে জয়ী সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।
হাইনরিখ ক্লাসেনের দাপটেই লজ্জা নিয়ে আইপিএল শেষ করল কেকেআর। প্রতিযোগিতার শুরু ও শেষ হল দুঃস্বপ্নে। ক্লাসেনের ৩৯ বলে অপরাজিত ১০৫ রান। প্রথমে ব্যাট করে ২৭৮/৩ তোলে হায়দরাবাদ। জবাবে কেকেআরের ইনিংস শেষ ১৬৮ রানে। গত বারের চ্যাম্পিয়ন দল এ বার শেষ করল আট নম্বরে। আগের ম্যাচে অপরাজিত ৯৪ রান করে হায়দরাবাদকে জিতিয়েছিলেন ঈশান কিশন। ওপেনিং জুটিতে হায়দরাবাদ ৯২ রানের মাথায় অভিষেক শর্মা আউট। ক্লাসেনের ১২ ইনিংসে ৩৮২ রান ছিল নামের পাশে। বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগ খেলতেন ‘স্যান্ডপেপার-গেট’ কাণ্ডে অস্ট্রেলিয়ার স্টিভ স্মিথ এক বছর নির্বাসিত হয়ে যাওয়ায় আইপিএলে খেলতে না পারার কারণে তাঁর জায়গায় রাজস্থান নেয় ক্লাসেনকে। চারটি ম্যাচে ভাল খেললেও ধরে রাখা হয়নি। পরের বছর বেঙ্গালুরু তাঁকে ৫০ লক্ষ টাকায় কেনে। ২০২৩ সাল ক্লাসেনের টি২০-তে ডারবানের হয়ে শতরান। আইপিএলে হায়দরাবাদের হয়ে বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে শতরান। হায়দরাবাদ ক্লাসেনকে পুনর্জন্ম দিয়েছে। হায়দরাবাদ ক্লাসেনকে ধরে রেখেছিল ২৩ কোটি টাকা দিয়ে। ৩৩ বছর বয়সের ক্লাসেন দেশের হয়ে মাত্র চারটি টেস্ট, ৬০টি এক দিনের ম্যাচ এবং ৫৮টি টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। আইপিএলেও খেলেছেন মোটে ৪৯টি ম্যাচ। ২০১২-১৩ মরসুমে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে সুযোগ। প্রথম তিন মরসুমেই রানের পাহাড় গড়ে ২০১৭ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে জাতীয় দলে ডাক পেলেও প্রথম একাদশে সুযোগ মেলেনি। ২০১৮-র শুরুর দিকে কুইন্টন ডি’ককের বদলি হিসাবে ভারতের বিরুদ্ধে এক দিনের সিরিজে দলে ঢোকেন ক্লাসেন। দু’টি ম্যাচ প্রোটিয়ারা জিতেছিল। দু’টিতেই সেরা ক্রিকেটার হয়েছিলেন ক্লাসেন। এক দিনের ক্রিকেটে বিশ্বসেরা দল ভারতের বিরুদ্ধে ক্লাসেনের ঠান্ডা মাথার পারফরম্যান্স। একটি ম্যাচে ৩০ বলে ৬৯ করে ম্যাচের সেরার পুরস্কার পান। টেস্টে অভিষেকও হয় ভারতের বিরুদ্ধেই। হায়দরাবাদের স্বমূর্তি ধারণ করলেন। অসহায় অজিঙ্ক রাহানে। ২০ ওভারের মধ্যে মাত্র তিনটি ওভার বাদে কেকেআর বোলারদের প্রতি ওভারের ১০ বা তার বেশি রান উঠেছে। চার ওভারে সবচেয়ে বেশি ৬০ রান দিয়েছেন অনরিখ নোখিয়া। প্রতি ওভারে রানের নিরিখে বরুণ চক্রবর্তী প্রথমে। প্রতি ওভারে ১৮ রান দিয়েছেন । ক্লাসেন ছাড়াও ট্রেভিস হেড ৭৬ রান করেন।