Friday, May 23, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

শরীর ফিট ও মন ভালো রাখতেই হবে নিজেকে!‌ সকাল থেকেই কাজকর্মের মধ্যে নিয়েজিত থেকেও নজর দেহমনে

শরীর ফিট রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম। সুস্থভাবে বাঁচার জন্য শরীরচর্চার বিকল্প নেই। যে কোনও ধরনের ব্যায়ামের মধ্যে কার্ডিও শরীরের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলে। ওজন কমানোর সঙ্গেই হার্টের সুস্থতার জন্যও কার্ডিও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কার্ডিও ওয়ার্কআউট করলে রক্তে শর্করা কমে, উন্নত হয় স্মৃতিশক্তি, গুড কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনের জন্য কার্ডিং ছাড়া গতি নেই। হাঁটা এবং দৌড়ানো এই দুটিই মূলত কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম। স্বল্প সময়ের মধ্যে উপকার পেতে বেশি কার্যকরী দৌড়ানো। গবেষণার বলছে, নিয়মিত দৌড়ান মানুষদের অন্যান্যদের তুলনায় ৪৫ শতাংশ হৃদরোগের কম ঝুঁকি থাকে। নিয়মিত ধীর গতিতে পাঁচ থেকে দশ মিনিট দৌড়ালেও হার্টের স্বাস্থ্য ভাল থাকে। হাঁটাও একইভাবে সমান উপকারী। গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ছয় বছর টানা হাঁটার অভ্যাস উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, হৃদরোগের ঝুঁকি কমিয়ে দিতে পারে। হাঁটার সঙ্গে দৌড়ানোর মূল পার্থক্য হল, দৌড়ালে কম সময়ের মধ্যে বেশি ক্যালোরি বার্ন হয়। হাঁটলে একই পরিমাণ ক্যালোরি বার্ন করতে বেশি সময় ব্যয় করতে হয়। ওজন কমাতে প্রতিদিন দৌঁড়তে হবে তা নয়। হেঁটেও ওজন কমানো যায়। দৌড়ানোর ফলে শরীরে ক্যালরি দ্রুত হয়। ফলে মেদও ঝরে তাড়াতাড়ি। পরে দৌড়ানো বন্ধ করে দিলে ওজন বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়। প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা থাকে না। হাঁটা না দৌড়ানো, কোনটায় আপনি বেশি উপকার পাবেন, যে কোনও মানুষের সার্বিক সুস্থতার উপর তা নির্ভর করে।

বুকে ব্যথা হলে অনেকেই ভাবেন, গ্যাস-অম্বলের লক্ষণ। হার্টের অবস্থা জানার চেষ্টাও করেন না। মহিলাদের ৪৫ থেকে ৫০ বছরে রজোনিবৃত্তি নিয়ে উদ্বেগ অনেকটাই বেড়ে যায়। শরীরে বদলগুলি আসে, উপসর্গ দেখা দিতে থাকে, তার সব ক’টিকেই হরমোনের গোলমাল ভেবে বসেন অনেকেই। চিকিৎসকেরা সাধারণত বলেন যে, বয়স ৩০ থেকে ৪০ হলে মহিলাদের কয়েকটি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত, বিশেষ করে হার্টের কিছু টেস্ট করানো থাকলে ভাল। কারণ রজোনিবৃত্তির সময় এগিয়ে এলে হরমোনের তারতম্য দেখা দেবে। হৃদ্‌রোগের কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চ কোলেস্টেরলের সমস্যা বংশগত ভাবে হার্টের রোগের ইতিহাস থাকা জনের অনেক বেশি সচেতন থাকতে হবে। হার্টের চিকিৎসক জানান, পঞ্চাশ পেরিয়ে গেলে যদি হার্টের অবস্থা খারাপ হয়, তা হলে তার লক্ষণ দেখা দিতে থাকবে আগেই। বেশির ভাগ মহিলাই তাকে রজোনিবৃত্তির সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যান। লক্ষণ হরমোনের গোলমালের, আর কোন কোনটি হৃদ্‌রোগের, তা বোঝার কিছু উপায় আছে। ইস্ট্রোজেন হরমোন যত দিন সক্রিয় থাকে, মহিলাদের হার্টের রোগের ঝুঁকি কম থাকে। চিকিৎসক জানালেন, ইস্ট্রোজেন হরমোন হার্টের ধমনীতে ক্যালশিয়াম ও অন্যান্য দূষিত পদার্থ জমতে দেয় না। ফলে হার্টে ব্লকেজ় হওয়ার ঝুঁকি কমই থাকে মহিলাদের। যদি বংশগত ভাবে হার্টের রোগের ইতিহাস থাকে, তা হলে এর ব্যতিক্রম হতেই পারে। বয়স যত বাড়ে, রজোনিবৃত্তির সময় এগিয়ে আসে, ততই ইস্ট্রোজেন ক্ষরণের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে ওই বয়সে গিয়ে মহিলাদের হৃদ্‌রোগ হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। যদি হার্টের অসুখ হয়, তা হলে কিছু লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকবে। বুকে চিনচিনে ব্যথা, মাঝেমধ্যেই চাপ অনুভূত হবে। মনে হতে পারে কয়েক মণ বোঝা বুকে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। রাতে শোয়ার পরে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসা, দরদর করে ঘাম হওয়াও ভাল লক্ষণ নয়। রজোনিবৃত্তির সময় অতিরিক্ত গরম লাগা, সব সময় ঘাম হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয় ঠিকই, তবে হার্টের রোগ হলে স্বাভাবিক তাপমাত্রাতেও রাতে শুয়ে ঘাম হবে। ফুসফুসের রোগ না থাকলেও যখন-তখন শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। বিশ্রামের মুহূর্তেও দমবন্ধ হয়ে আসতে পারে। সিঁড়ি বেয়ে উঠলে কিংবা ভারী কোনও কাজ করলেও শ্বাসকষ্ট হতে থাকবে। ঘন ঘন হজমের গোলমাল হার্ট অ্যাটাকের পূর্বলক্ষণ হতে পারে। গ্যাস-অম্বলের সমস্যা অনেকেরই রয়েছে। তবে এই সমস্যা যদি জাঁকিয়ে বসতে শুরু করে, তা হলে আর ফেলে রাখা ঠিক হবে না। গরমের দিনেও শীত করবে। হাত-পা ঠান্ডা হয়ে যেতে পারে। মাথা ঘোরা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারে। ঠান্ডা না লাগলেও প্রচণ্ড কাশি, কফের সঙ্গে রক্ত বার হলে সাবধান হতে হবে। এই সব লক্ষণ দেখা দিতে থাকলে অতি অবশ্যই ইসিজি, ইকোকার্ডিয়োগ্রাম বা ট্রেডমিল টেস্ট করিয়ে নেওয়া জরুরি। সেই সঙ্গে নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করাতে হবে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে ক্যালোরি মেপে খাওয়া জরুরি। উপোস নয়। নিয়ম মেনে সঠিক সময়ে খেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার। ঝরবে বাড়তি মেদ।

সারাদিন ঠিকঠাক চললেও রাতের খাবারে অনেক সময়েই অনিয়ম হয়ে যায়। ডিনারে ঝটপট তৈরি হয়ে যায় এমন খাবার রাখাই শ্রেয়। ওজন কমাতে ডিনারে খেতে পারেন সুস্বাদু পালং মাশরুম স্যুপ। রেসিপিতে উপকরণ। ২৫০ গ্রাম পালং শাক, ১ কাপ মাঝারি মাশরুম, ২ চামচ মাখন, ১ চামচ ময়দা, ১ চামচ রসুন কুচনো, ১ কাপ কুচনো স্প্রিং অনিয়ন, ১ কাপ দুধ, ১ কাপ জল, স্বাদ মতো নুন। প্রথমে সব উপকরণ আলাদা বাটিতে সাজিয়ে ফ্রায়িং প্যানে এক টেবিল চামচ মাখনে রসুনকুচি দিয়ে দু’মিনিট নাড়ুন। এরপর দিতে হবে স্প্রিং অনিয়ন। আরও দু’মিনিট নেড়ে নিয়ে যোগ করতে হবে ময়দা আর মাশরুমের টুকরো। এরপর একে একে কুচনো পালং শাক, দুধ আর জল দিন। স্বাদমতো নুন এবং চাইলে পিৎজা সিজনিং দিতে হবে। মিশ্রণটি কড়া আঁচে ৫ মিনিটের জন্য ঢেকে হাফ চামচ মাখন দিয়ে কয়েক টুকরো মাশরুমের টুকরো ভেজে আলাদা পাত্রে রাখার পর ব্লেন্ডারে মিশ্রণটি ব্লেন্ড করে ছেঁকে এরপর আরও মিনিট পাঁচ ফুটিয়ে ভাজা মাশরুম দিলেই তৈরি স্যুপ। পরিবেশনের আগে উপর থেকে মাখন এবং পিৎজা সিজনিং ছড়িয়ে দিলে জমে যাবে স্বাদ। কলা অত্যন্ত উপকারী একটি ফল। ভিটামিন বি৬, পটাশিয়াম, ফাইবার সহ একাধিক পুষ্টিগুণে ভরপুর কলা। চটজলদি এনার্জি বাড়ানোর কাজেও কলার জুড়ি মেলা ভার। কলা অতিরিক্ত খেলেই নাকি ওজন বাড়ে! তাই মেদ ঝরাতে অনেকেই কলার থেকে দূরে থাকেন। কলায় ক্যালোরির পরিমাণ খুব বেশি। নিয়মিত বেশি কলা খেলে ওজন বাড়তে পারে। কোনও গবেষণায় দাবি করা হয়নি যে কলা খেলে ওজন বাড়ে। বরং বিশেষজ্ঞদের মতে, কলায় উচ্চমাত্রায় ফাইবার এবং কম ক্যালরি রয়েছে। কলায় রয়েছে ফাইবারের ভাণ্ডার। তাই নিয়মিত কলা খেলে পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। এমনকী এড়িয়ে যাওয়া যায় গ্যাস, অ্যাসিডিটির ফাঁদ। তবে কোনও জিনিসই মাত্রাতিরিক্ত খাওয়া ভাল নয়। যেমন অত্যধিক পরিমাণে কলা খেলে দেহে ফাইবার বেশি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। যার ফলে হতে পারে ছোট-বড় পেটের সমস্যা। বেশি কলা খেলে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বাড়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়। তাই নিয়মিত অত্যধিক পরিমাণে কলা খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা যে ঊর্ধ্বমুখী হবে, তা বলাই বাহুল্য! আর এই কারণেই চিকিৎসকেরা ডায়াবেটিস রোগীদের প্রতিদিন কলা খেতে বারণ করেন।

মাথাব্যথা। রোদে বেরোলে ব্যথা। বৃষ্টিতে ভিজলে ব্যথা। মাথার ডান দিকে, বাঁ দিকে বা মাঝখানে আবার কখনও বাঁ দিক থেকে শুরু করে একেবারে ডান দিক অবধি ব্যথার স্রোত বয়ে যায়। ব্যথানাশক ওষুধ বা মলম লাগিয়ে সাময়িক ভাবে যন্ত্রণা কমানোর চেষ্টা। তাতে অবশ্য লাভ তেমন হয় না। ইন্টারন্যাশনাল ক্ল্যাসিফিকেশন অফ হেডেক ডিজঅর্ডার আইসিএইচডি জার্নালে মাথা ব্যথার নানা ধরন ও উপসর্গ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্‌থ-এর একটি গবেষণাপত্রে গবেষকেরা মাথা যন্ত্রণার নানা প্রকারকে ‘হেডেক ডিজ়অর্ডার’ বলেছেন। এটি দু’প্রকারের— প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি। সেকেন্ডারি অর্থে অতিরিক্ত ক্লান্তি, মানসিক চাপ বা দীর্ঘ সময়ে টিভি-মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকলে যে ব্যথা। প্রাইমারির অনেক ভাগ রয়েছে। লক্ষণভেদে রোগের ধরনও বদলে যায়। কোনওটি আবার ‘ক্রনিক হেডেক ডিজ়অর্ডার’। হাইপারটেনশন যখন তুঙ্গে। রক্তচাপ বেড়ে গেলে যখন তখন মাথাব্যথা হতে পারে। হাইপারটেনশনে রক্তনালি সঙ্কুচিত হয়, ফলে রক্তপ্রবাহে বাধা পড়ে। সেই সময়ে মাথার মাঝখানে ও মাথার পিছন থেকে ঘাড় অবধি তীব্র ব্যথা শুরু হয়। মাথা ঘোরা ও চোখে অন্ধকার দেখার মতো লক্ষণও দেখা দেয়। মাঝেমধ্যেই এমন ব্যথা হলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত। ক্লাস্টার মাথাব্যথার ধরন আলাদা। এ ক্ষেত্রে মাথার একপাশে ও এক চোখে যন্ত্রণা শুরু হবে। চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠা, অনবরত জল পড়তে থাকা, নাক দিয়ে জল পড়ার মতো লক্ষণ দেখা দেবে। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, ক্লাস্টার মাথাব্যথার কারণ সম্পূর্ণ জানা নেই। সাধারণত অত্যধিক পরিশ্রম, কম ঘুম, রাত জাগার অভ্যাসের কারণে শরীরের ঘড়ি বা ‘সার্কাডিয়ান রিদ্‌ম’ বদলে গেলে এমন ব্যথা হতে পারে। হরমোনের গোলমালের কারণেও এই ব্যথা হয়। সানস্ক্রিন মেখেও রোদে পুড়ছে ত্বক। কারও চোখ জ্বালা, কারও র‌্যাশ, বিজ্ঞানীরা জানালেন আসল কারণ বাড়াবাড়ি রকম সাইনাস। নাকের দু’পাশে, কপালে, দু’চোখের মাঝে, চোখের পিছনে ব্যথা হয়। সাইনাসের মিউকাসগুলি কোনও ভাবে শরীর থেকে বেরোতে না পারলেই শুরু হয় সাইনুসাইটিসের সমস্যা। ঋতু বদলের সময়ে ব্যথা বাড়ে। ঘুম ভাঙা থেকে রাতে ঘুমোতে যাওয়া, মাথা যন্ত্রণা, নাক বন্ধ, নাক থেকে জল পড়ার মতো লক্ষণ দেখা দেয়। অনেক সময়ে জ্বরও আসে। মাইগ্রেন হল ‘নিউরোলজিক্যাল’ রোগ। চিকিৎসকেরা বলেন, মাথার এক দিকেই ব্যথা হয় বেশি। সারা ক্ষণ দপদপ করতে থাকে। সাধারণত ৪৮ ঘণ্টা থেকে ৭২ ঘণ্টা অবধি ব্যথা থাকতে পারে। মাথাব্যথার সঙ্গে ঘাড়ের পিছনেও যন্ত্রণা হবে, বমি ভাব থাকবে, চোখে আলো পড়লেও কষ্ট হবে। থান্ডারক্ল্যাপ। হঠাৎ করেই মাথার এক দিক থেকে ব্যথা শুরু হবে ও তা তীব্র থেকে তীব্রতর হয়ে উঠবে। টানা কয়েক মিনিট থাকতে পারে ব্যথা। ওষুধেও সারবে না, বারে বারেই ব্যথা হতে থাকবে। জীবাণু সংক্রমণ, মেনিনজ়াইটিস, শরীরের ভিতর কোনও কারণে রক্তক্ষরণ শুরু হলে এমন ব্যথা হতে পারে। থান্ডারক্ল্যাপ ব্যথা হলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। রিবাউন্ড ব্যথা ফিরে আসবে বার বার। যে কোনও ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরেই ব্যথা হবে। অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া, যখন তখন অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার অভ্যাসের কারণে এই ব্যথা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে কোনও ওষুধের ডোজ় চলাকালীনই ব্যথা বাড়বে এবং তা দীর্ঘস্থায়ী হবে।

মনোযোগ দিতেই বড় অনীহা। অস্থির মন এক জায়গায় স্থির হতেই চায় না। মোবাইলে একটি রিল চালালেও তা বেশি ক্ষণ দেখতে ভাল লাগে না। বই পড়া, মোবাইল দেখা বা নিজের শখের কোনও কাজও একটানা মনোযোগ দিয়ে করার পাট উঠেই গিয়েছে প্রায়। এখনকার প্রজন্ম একই সময়ে বিভিন্ন কাজে মনঃসংযোগ করার চেষ্টা করে। এতে একাগ্রতার ঘাটতি হয়, কাজটিও নিখুঁত ভাবে হয় না। একই সময়ে চারদিকে মাথা ঘামাতে গিয়ে স্মৃতির পাতাও ধূসর হতে থাকে। সদ্য যে কাজটি করলেন, সেটিও মনে থাকে না বেশির ভাগ সময়ে। গাড়ির চাবি থেকে চশমা, নিজের হাতে তুলে রেখেও পর ক্ষণেই আর মনে পড়ে না। মনে করতে না পারলে একটা অস্বস্তিও কাজ করে। এই সবই হয় মনোযোগের অভাবের কারণে। অস্থির আর ছটফটে ভাবকে গবেষকেরা বলছেন ‘পপকর্ন ব্রেন’। ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকেরা সাম্প্রতিক প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের ছটফটে মন নিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছেন দীর্ঘ সময় ধরেই। গবেষক গ্লোরিয়া মার্ক জানিয়েছেন, কোনও একটি কাজে কত ক্ষণ টানা মনোযোগ দিচ্ছেন, তার নির্দিষ্ট মাপকাঠি আছে। ধরুন, বই পড়ছেন, ঠিক কতটা সময় অন্য কোনও কাজে মন না দিয়ে কেবল বইটুকুও পড়বেন, তারও হিসেব আছে। ২০০৪ সাল অবধি যে কোনও একটি কাজে আড়াই মিনিটের মতো মনোযোগ দিতে পারতেন কমবয়সিরা, ২০১০ সালের পরে তা কমে হয় ৭৫ সেকেন্ড, আর এখন আরও কমে ৪৭ সেকেন্ড। অর্থাৎ ‘অ্যাটেনশন স্প্যান’ কমতে কমতে ৪৭ সেকেন্ডে গিয়ে ঠেকেছে। ২০১১ সালে ইউনিভার্সিটি অফ ওয়াশিংটনের গবেষক ডেভিড লেভি এই বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। তিনিই প্রথম ‘পপকর্ন ব্রেন’ সিনড্রোমের কথা বলেন। গবেষকের বক্তব্য ছিল, একটি কাজ থেকে অন্য কাজে ঝাঁপিয়ে চলে যেতে কয়েক সেকেন্ড সময় নিচ্ছে এখনকার প্রজন্ম। ফলে কোনও কাজই ঠিকমতো সম্পন্ন হচ্ছে না। সে পড়াশোনা করা হোক, বই পড়া, টিভি দেখা বা নিজের পছন্দের কোনও কাজ। পড়তে বসে হঠাৎ মনে হচ্ছে টিভি দেখলে ভাল হত। টিভি চালিয়ে পর ক্ষণেই মনে হচ্ছে গল্পের বইটা শেষ করা দরকার। বইয়ের পাতায় কয়েক সেকেন্ড মন দেওয়ার পরেই মোবাইল হাতে নিয়ে ইউটিউব চালিয়ে দিচ্ছেন। এই যে অস্থিরতা, তারই নাম ‘পপকর্ন ব্রেন’। ডিজিটাল ডিভাইসে নির্ভরতা বেড়েছে। মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপে দিবারাত্র ব্যস্ত থাকায়, মনোযোগে ছেদ পড়ছে। নানা ডিভাইস থেকে আসা নোটিফিকেশন অস্থিরতা বাড়াচ্ছে। স্মার্টফোনে আসক্তি সামাজিক বিচ্ছিন্নতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে, এতে মানসিক চাপ এবং উদ্বেগও বাড়ছে। মনোযোগ ও একাগ্রতা বাড়ানোর একটিই পন্থার কথা বলছেন গবেষকেরা। সেই আড়াই মিনিটে ফেরা শুরু করতে হবে। যে কাজটিই করুন তাতে অন্তত আড়াই মিনিট টানা মনোযোগ দিতেই হবে। যতই অন্য কাজের প্রলোভন আসুক, তা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে হবে। রোজ সকালে ২০ মিনিট হাঁটলেও মন ভাল থাকবে, একাগ্রতা বাড়বে। হাঁটার সময়ে মোবাইল দূরে রাখতে হবে। রোজ রাতে শোয়ার আগে রিল না দেখে সারা দিনের কাজ লিখে রাখতে হবে। কোন কাজটি কত ক্ষণ ধরে করেছেন, তারও হিসেব রাখুন। এই ভাবে স্মৃতিশক্তিও উন্নত হবে, মনের অস্থিরতাও কমবে।

জাঁকিয়ে বসছে অনিদ্রার সমস্যা। সারাদিন পরিশ্রমের পরও রাতে দু’চোখের পাতা এক হয় না অনেকের। সুস্থতার জন্য ঘুম যে অত্যন্ত জরুরি। রোজ ঘুমের ওষুধ খাওয়াও স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক নয়। কিছু গাছ রয়েছে যেগুলি ঘরে রাখলে ঘুম ভাল হয়। একটি গাছ হল জুঁই গাছ। সাদা রঙের ছোট্ট এই ফুল দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনই এর সুগন্ধ মনও ভরিয়ে দেয়। এই ফুল গাছ শোওয়ার ঘরে রাখলেই রাতে ঘুমের সমস্যা থেকে মুক্তি। জুঁই ফুল মানসিক চাপ কমাতে কার্যকরী। আসলে এই ফুলের সুগন্ধ স্নায়ুতন্ত্র এবং মনকে শান্ত রাখে। এর মধ্যে এমন কিছু রাসায়নিক উপাদান রয়েছে যা স্নায়ুতন্ত্রকে স্বস্তিও দেয়। জুঁই গাছ থেকে নির্গত প্রাকৃতিক সুগন্ধ মস্তিষ্কে আরাম দেয়। সেই সঙ্গে ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে। ঘুমের সমস্যা থাকলে ঘরে এই ফুলের গাছ রাখা যায়। ঘরে জুঁই ফুল রাখলে হতাশা এবং উদ্বেগের সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। এই ফুলের সুগন্ধ মেজাজ ভাল করতে সাহায্য করে। অ্যারোমাথেরাপিতে জুঁই ফুলের তেল ব্যবহার করা হয়। এমনকী গবেষণায় দেখা গিয়েছে, জুঁই ফুলের সুগন্ধে রক্ত ​​চলাচল, শ্বাসকষ্ট এবং রক্তচাপের সমস্যা নিরাময় করা সম্ভব। মূলত গরমের দিনে ফোটে জুঁই ফুল। বাড়িতে যদি জুঁইয়ের গাছ থাকে, তাহলে এমনই টাটকা ফুলের মিষ্টি সুবাস পাওয়া যায়। ঘরের মধ্যে একটি পাত্রে জল নিয়ে জুঁই ফুল ছড়িয়ে রাখলেও সুগন্ধে ঘর ভরে যায়। ক্লান্ত শরীরে ঘরে ফিরলে সেই গন্ধ নিমেষে মন ভাল করে দেয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles