Friday, May 23, 2025
spot_imgspot_img

Top 5 This Week

spot_img

Related Posts

‘‌মানবরত্ন’‌ অসিত চ্যাটার্জ্জিতে বিভোর হাওড়া! মানু্যের সেবায় করে চলেছেন একের পর এক কর্মকাণ্ড

বয়স তখন ঠিক ১২। বর্ধমান থেকে সটান হাওড়ায় ছুটে আসা এক বালক। বাবার বকুনি খেয়ে চলে আসা নেহাতই কাজের খোঁজে। দাসনগরের চপলাদেবী রোড লাগোয়া একটি ছোট্ট লোহালক্কড়ের দোকানে মাত্র কুড়ি টাকা মাইনের চাকরি। মালিকের কাছেই একটি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকা। কিছুদিন পরেই একটি ফাউন্ড্রি কারখানায় ১৫০ টাকা মাইনের চাকরি জুটে গিয়েছিল। লোহার ঢালাই ঘরে ছাঁচ মারার কাজ। সেই কোম্পানি ৩৫৪ টাকা দামের একটি ঝকঝকে নতুন সাইকেলও কিনে দিয়েছিলেন এই কর্মঠ কিশোরকে। এরপর নিজে ব্যবসা করার ইচ্ছা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল ছেলেটির। সালটা ছিল ১৯৭৮। পাঁচ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে ব্যবসা শুরু। ইমারতি দ্রব্যের ব্যবসা। তখনও নিজেও জানতেন না একদিন তিনিই হবেন কোটিপতি। তখনও জানতেন না তিনিই হবেন হাওড়ার অন্যতম সেরা শিল্পপতি। তবে, তখনকার অনেকেই বুঝে গিয়েছিলে এ ছেলে ব্যবসায় অনেকদূর যাবে। চোখেমুখে লেপে ছিল অগাধ স্বপ্ন। অদম্য ইচ্ছাশক্তি। মানুষের জন্য কাজ করার অদম্য ইচ্ছা। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর স্নেহার্য্য ও বিগলিত হৃদয়। তিনি স্বয়ং অসিত কুমার চট্টোপাধ্যায়। হাওড়া, কলকাতা থেকে বর্ধমান, সকল স্তরের মানুষ এক ডাকে চেনেন। শুধু চেনেন বললে হয়তো ভুল হবে। অনেকেরই মনের মানুষ অসিত চাটুজ্জ্যে।

২২ বছর বয়সে চাকরি ছেড়ে ব্যবসায় পদার্পণ। শুভ কাজে দেরী করেননি। ২৩শে পা রেখেই সেরে ফেলেছিন বিয়ের পর্ব। মন পড়ে ছিল ব্যবসায়। তাই তো তিনি শিল্পপতি। আবার পাশাপাশি সামাজিক কাজ। তাই তো তিনি সমাজসেবী। টানা ৩২ বছর ধরে করে চলেছেন সমাজের সকল স্তরের মানুষের পাশে থাকার কর্মকাণ্ড। দরিদ্র মানুষদের বিবাহের অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে দু:‌স্থ ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার খরচ। এছাড়াও খেলাধুলোর খরচ জোগানো, রক্তদান উৎসব, গনবিবাহ, গনউপনয়ন সহ সবরকম সামাজিক অনুষ্ঠানের কিছুই বাকি রাখিননি সেদিনের নেই লড়াই করে শিল্পপতি হওয়া বালক। অন্যতম একজন সমাজসেবী হিসাবেই অসিত চট্টোপাধ্যায়কে চেনেন হাওড়াবাসী। প্রায় ১০০ জন দু:‌স্থ ছেলেমেয়েকে পড়াশোনার খরচ বহন। বর্ধমানের দশটা গ্রামের মানুষের বিভিন্ন খরচ বহন। মানুষের প্রয়োজনে ওষুধ থেকে চিকিৎসা প্রদান। একের পর এক অনুষ্ঠানে বস্ত্র বিতরণ। এভাবেই বছরের পর বছর ধরে করে আসছেন সম্পূর্ণ নিজের খরচায় নিজের উদ্যোগে সমাজসেবা।

মানবরত্ন সম্মানে ভূ্ষিত সমাজসেবী অসিত কুমার চট্টোপাধ্যায় কলকাতার বড় ক্রীড়াসংগঠনের সঙ্গে ওতোপ্রতভাবে জড়িত। সমাজসেবীর পাশাপাশি একজন দক্ষ ক্রীড়া সংগঠকও বটে। শতাব্দিপ্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ক্লাব মোহনবাগানের ভাইস প্রেসিডেন্টের মতো পদ সামলাতে হয় তাঁকে। এমনকি সবুজ মেরুন দলের গভীর অর্থসংকটের দিনেও পাশে থাকতে দেখা গেছে অসিত চট্টোপাধ্যায়কে। কথিত আছে ময়দানের সেরা মোহনবাগানী টুটু বসুর পর যদি ক্লাবকে অর্থিক সহায়তা প্রদানে কারুর নাম উঠে আসে, তিনি অসিত চট্টোপাধ্যায়। মোহনবাগানের ঘোর দুর্দিনে বার বার অ্যাটাচি ভরে টাকা নিয়ে ঢুকতে দেখা গেছে অসিতবাবুকে। তৎকালীন সচিব অঞ্জন মিত্রের স্নেহধন্য ছিলেনও। এছাড়াও কলকাতার ক্রিকেট ফুটবল থেকে শুরু করে অধিকাংশ ক্লাবের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত অসিত চট্টোপাধ্যায়। সর্ব স্তরের ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরাও পছন্দ করেই হাওড়ার এই সমাজসেবীকে।

২০২৫ এর ৯ মে। বিশ্বকবির জন্মদিনে রক্তদান উৎসবে প্রচুর বিদগ্ধজনেরা শামিল হয়েছিলেন। ঠিক পরের দিনই ১০ মে, গনবিবাহ অনুষ্ঠান। হিন্দু মুসলিম সব ধর্মের একাত্মবোধের স্থান। গনবিবাহে শামিল হিন্দু মুসলিম পাত্র পাত্রীরাও। চার হাত এক হল। ৫৬ জোড়া দম্পতির নতুন পথচলা শুরু। আগুনকে সাক্ষী রেখে, মালা বদল করে গণ বিবাহ সম্পন্ন। গণবিবাহের আসর বসে নবজাগরন সংঘের মাঠে। প্রধান উদ্যোক্তা সমাজসেবী অসিত চট্টোপাধ্যায়। এককভাবে সম্পূর্ণ নিজের খরচায় দিলে ছেলেমেয়েদের বিয়ে। রাখলেন না কেনও বিভেদ। হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সকলকে এক সূত্রে বেঁধে দিলেন। সকাল থেকে দম্পতি ভিড়।

পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে ৫৬ জোড়া দম্পতিকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করলেন। গণবিবাহে সামিল হতে এসেছিলেন বিভিন্ন গ্রামাঞ্চল থেকে দম্পতিরা। আর্থিক অনটন তাঁদের স্বপ্নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই আসরে তাঁদেরই নতুন করে ধুমধাম এর সঙ্গে বিয়ে দেওয়া হল। বিয়ে উপলক্ষে ছিল এলাহি আয়োজন। সাজসজ্জা, খাওয়া-দাওয়া, উপহার সব মিলিয়ে রাজকীয় ব্যবস্থা। গণ বিবাহ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল ক্ষেত্রের প্রথিতযশা ব্যক্তি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Popular Articles